প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন

    0
    208

    আমারসিলেট 24ডটকম,৩০সেপ্টেম্বর: জাতিসংঘের ৬৮তম অধিবেশনে যোগদান করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দিনের এক সরকারি সফর শেষে আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটটি আজ বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ দলীয় নেতারা। এছাড়াও ছিলেন সামরিক ও বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কূটনীতিকরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী “সাউথ সাউথ” পুরস্কার লাভ করায় এ সময় বিমান বন্দরে তাকে গণসংবর্ধণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানানো হয়। অবশেষে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানন্ত্রী সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চান।
    এর আগে বাংলাদেশের উদ্দেশে গতকাল রবিবার সকালে নিউইয়র্ক থেকে রওয়ানা দেন প্রধানমন্ত্রী । আমীরাতের একটি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ, কে আবদুল মোমেন জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। দেশে ফেরার পথে, প্রধানমন্ত্রী দুবাইয়ে তিন ঘন্টা যাত্রা বিরতি করেন। প্রধানমন্ত্রী গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিয়েছেন।
    শেখ হাসিনা এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি কাতারের আমীর তামিম বিন হামাদ আল থানি ও মালয়েশিয়ার প্রধামন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিব বিন তুন আবদুল রাজাকের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এছাড়া সৌদি আরব ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
    প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্যতা  মোকাবেলায় বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্য এবং বর্তমান সরকারের মেয়াদে দারিদ্র্যতার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাসে তার সাফল্যের জন্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ সাউথ কোঅপারেশন থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেয়া এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার দেয়া সংবর্ধনা সভায়ও যোগ দেন।

    প্রধানমন্ত্রী এ সফরকালে “ট্যাকলিং দি আনফিনিশড বিজনেস”একসেলারেটিং এমডিজি প্রগ্রেস” শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজেও যোগ দেন। তিনি “নেতৃবৃন্দের সংলাপ” উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম-লক্ষ্য থেকে কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে অন্যতম প্রধান বক্তা হিসেবে যোগ দেন। তিনি এমডিজি অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত প্রয়াসের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ শীর্ষক একটি অধিবেশনে ভাষণ দেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের গৃহীত “বৈশ্বিক শিক্ষা প্রথম উদ্যোগ” গ্রহনের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

    প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘ সদর দফতরে “‘আর্মস ট্রেড ট্রিটি (এটিটি) এবং প্রটোকল অন এক্সপ্লোসিভ রেমনেন্টস অব ওয়ার অব কনভেনশন অন সার্টেইন কেমিকেল উইপন্স (সিসিডাব্লিউ)’” এ স্বাক্ষর করেন। তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন। তিনি নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা করেন। তিনি নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের উদ্যোগে তার সম্মানে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনাও যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের ইউএস-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে।
    প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, এম্বাসেডর-এট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ মোঃ ওয়াহিদ-উজ-জামান ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন। এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন।

    এছাড়াও সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ ও আমীর হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাসদ নির্বাহী সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম ও পেশাজীবী নারী সমাজের সাধারণ সম্পাদক আফরোজা হক রীণাও এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ছিলেন বলে জানা যায়।