প্রতারক সাহেদকে আশ্রয় দেয়নি শ্বশুরবাড়িসহ কোন স্বজন

    0
    243

    আমার সিলেট ডেস্কঃ  রিজেন্ট হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ উরুপে শাহেদ করিম। নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন সময় নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে যান কিন্তু প্রতারক বলে সাহেদকে আশ্রয় দেয়নি শ্বশুরবাড়িসহ কোন স্বজন। বিশেষ করে নিজের শ্বশুর বাড়িতে গেলেও সেখানে ও আশ্রয় পাননি তিনি। এরপর যান কুমিল্লা, কক্সবাজার, মানিকগঞ্জ ছাড়াও নিজের জন্মভূমি সাতক্ষীরায়। কিন্তু কেউ তাকে আশ্রয় দেয়নি। বরং সবাই তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন পাশের দেশে পাড়ি দেবেন। সে অনুযায়ী সবকিছু ঠিকও করেন। গতকালই (মঙ্গলবার) তার নৌকাযোগে ভারত যাবার কথা ছিল। কিন্তু নৌকার মাঝি বাচ্চু অন্য একটি ট্রিপ (মানুষ বা মালামাল নিয়ে সীমান্তে পারাপার) নিয়ে ভারতে যাওয়ায় সাহেদের যাত্রা বন্ধ হয়। মাঝি ফিরে এসে জানান, ভোরে তাকে পার করে দেবেন। সেজন্য গতরাত থেকেই সাতক্ষীরা সীমান্তের দেবহাটার কমলপুর গ্রামের ইছামতি খালে অপেক্ষা করতে থাকেন সাহেদ। ভোরে পারাপারের কথা থাকলেও পরে তিনি র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে যান।

    গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কাছে এসব তথ্য দেন সাহেদ করিম।এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের একাধিক কর্মকর্তা।
    তারা জানিয়েছে, সাহেদ গ্রেপ্তার এড়াতে নিকটাত্মীয়দের বাড়িতে গেলেও তাকে কেউ রাখেনি। কারণ বিভিন্ন মিডিয়ায় সাহেদকে খোঁজা হচ্ছে এমন সংবাদ দেখে অনেকে সতর্ক হয়ে যান। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই তারা এমনটি করেছেন। কয়েকজন আত্মীয় তাকে একবারেই বের করে দেন। তবে কয়েকজন রাত যাপনের সুযোগ দিলেও ভোরে বাড়ি থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন।

    রিজেন্টের এমডি পারভেজের ভায়রার বাড়িতে যাবার পর তিনি গাড়ি দিয়ে পারভেজকে কক্সবাজার পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছিলেন। এর বাইরে তিনি বিভিন্ন পন্থায় একাই চলাফেরা করেছেন। বুধবার ভোরে ভারতে পালিয়ে যাবার সময় করোনার ভুয়া রিপোর্ট কাণ্ডের মূলহোতা সাহেদ করিম প্রায় নয় দিন পর আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার মৌলভীবাজার জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযানের পর সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার হন। পরে সাহেদকে ঢাকায় আনতে র‌্যাবের হেলিকপ্টার উড়ে যায় সেখানে। সকাল নয়টায় সাহেদকে বহনকারী হেলিকপ্টার পুরাতন তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

    বুধবার দুপুরে র‌্যাব সদরদপ্তরে ব্রিফিংয়ে এলিট ফোর্সটির মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সাহেদের প্রতিষ্ঠানে অভিযানের পর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তিনি একেক দিন একেক জায়গায় থেকেছেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজার, কুমিল্লা গেছেন বাসে। আবার ট্রাকে ও পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরা গেছেন। সেখান থেকে তিনি নদী পার হয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

    প্রসঙ্গত, প্রতারণাসহ নানা অপকর্মের ঘটনায় ইতোপূর্বে শাহেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫০টি মামলার সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ করোনা ভাইরাসের ভুয়া টেস্ট ও জাল সনদ প্রদানের ঘটনায় বুধবার ভোরে ছদ্মবেশে ভারতে পালানোর সময় দেবহাটার শাঁখরা কোমরপুর সীমান্ত থেকে সাহেদকে অবৈধ অস্ত্রসহ বোরকা পরা অবস্থায় গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব। মঙ্গলবার গাজীপুর থেকে মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করেছিলো র‍্যাব।