পিয়ারু থেকে মিন্টু পরে মীর কাসেম আলী ও তার মন্তব্য!

    0
    243

    আমারসিলেট24ডটকম,০২নভেম্বরঃ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জাড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী তির্যক মন্তব্য করে বলেন, এটা মিথ্যা ঘটনা, মিথ্যা সাক্ষী, ফরমায়েশি সাক্ষী। সত্য বিজয়ী হবে। মিথ্যা পরাজিত হবে। শিগগিরই, শিগগিরই। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় ঘোষণার পরপরই মীর কাসেম আলী ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশে এ মন্তব্য করেন।
    বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ রবিবার এ রায় দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম। মামলার কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর আজ এ রায় ঘোষণা করা হলো। জামায়াতের রাজনীতিতে অর্থের জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। পরদিন শুক্রবার মীর কাসেমকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
    রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মীর কাসেমকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় আনা হয়। সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে তাকে হাজতখানা থেকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় আনা হয়। সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে সূচনা বক্তব্য দিয়ে রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার। বাকি ১২টি অভিযোগ অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের। ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগের দুটিতেই তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
    মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর যেকোনো দিন মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে চট্টগ্রাম শহরের অজ্ঞাত স্থান থেকে অপহরণ করে আলবদর সদস্যরা। পরে মীর কাসেমের নির্দেশে জসিমকে ডালিম হোটেলে নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতন ও ২৮ নভেম্বর হত্যা করা হয়। পরে সেখানে নির্যাতনে নিহত আরও ৫জনের সঙ্গে জসিমের লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
    ১২ নম্বর অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের নভেম্বরে মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদর সদস্যরা চট্টগ্রামের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হাজারী গলির বাসা থেকে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। এ ছাড়া পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী রাজাকার-আলবদররা হাজারী গলির ২৫০ থেকে ৩০০ দোকান লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।
    এর আগে ২০১২ সালের ১৭ জুন কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলের নয়া দিগন্ত কার্যালয় (দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী দলটির অন্যতম প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, ইবনে সিনা ট্রাস্টের সদস্য (প্রশাসন) এবং কেয়ারি হাউজিং ও ইডেন শিপিং লাইন্সের চেয়ারম্যান। তিনি রাবেতা আলম আল ইসলামীর পরিচালক।
    মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার চালা গ্রামের পিডব্লিউডি কর্মচারী তৈয়ব আলীর ৪ ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় মীর কাসেম। তার ডাক নাম পিয়ারু হলেও স্থানীয়ভাবে সবাই চিনত মিন্টু নামে। পরে তিনি মীর কাসেম আলী নাম ধারণ করেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করলে মীর কাসেম আলী তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।