পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে শার্শার উদ্ভাবকের আবিস্কার

    0
    416

    বেনাপোল থেকে এম ওসমান: পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কোন কোন পরিবারে একটি, কোন পরিবারে দুইটি আবার কোন পরিবারে তিনটি শিশুই একই সাথে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে যা ভূক্তভোগী ওই পরিবারের জন্য কতটা কষ্ট দায়ক তা বলার অবকাশ রাখেনা। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর এমন সব করুন চিত্র দেখে মন কেঁদেছে উদ্ভাবক যশোরের শার্শা উপজেলার মটর সাইকেল ম্যাকানিক মিজানুর রহমানের।

    পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে তিনি তৈরী করেছেন এমন এক যন্ত্র যা শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু ঠেকাতে সহায়তা করবে। দীর্ঘদিন তিনি এবিষয়টি কাজ করতে করতে অবশেষে সফলতা পেয়েছেন এ যন্ত্র আবিস্কার করে। উদ্ভাবক মিজানুর রহমান জানান, দেশের বিভিন্ন পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, জলাশয়ে প্রতিনিয়ত পানিতে ডুবে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এসব করুন হৃদয় বিদারক ঘটনাগুলো আমাকে গভীর ভাবে ভাবিয়ে তোলে। তাই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুকে কিভাবে রোধ করা যায় সেই পথ খঁজতে থাকি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পরে এক পর্যায়ে সেই সফলতা খুঁজে পেয়েছি।

    তিনি বলেন, আমি এমন এক যন্ত্র আবিস্কার করেছি যা শিশুর শরিরে যে কোন জায়গায় তাবিজের মত বেঁধে রাখতে হবে। অতি ক্ষুদ্র এ যন্ত্রটি বহনে শিশুর কোন সমস্যা হবে না। এ যন্ত্রটি তার পানিতে ডুবে যাওয়া রোধে সহায়তা করবে। ডিবাইজ ব্যবহৃত শিশু যখনি পানির সংস্পর্শে আসবে তখন তার বাড়িতে রাখা এলারম বিপদ সংকেত দিয়ে বাজতে থাকবে। তখন বাড়িতে থাকা শিশুটির পরিবারের যে কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারবে। আর এ থেকে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমতে থাকবে। মিজানুর রহমান আরো জানায়, তার আবিস্কার এই যন্ত্রটি এখনো কাঙ্খিত আকার দেওয়া হয়নি।

    প্রাথমিক ভাবে এই যন্ত্রটির আকার একটু বড়। ধীরে ধীরে এই যন্ত্রটি শিশুর বহন উপযোগী করে তোলা হবে। যন্ত্রটি তৈরী করতে মিজানের লেগেছে একটি মোবাইল ব্যাটারী, একটি ডিভাইজ, একটি এলারম মাইক। যা প্রাথমিক ভাবে এ যন্ত্রটি ক্রয় করতে ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা পড়বে। এ ব্যাপারে মিজানুর বলেন, সরকারের সুদৃষ্টি এবং অর্থের জোগান দিতে পারলেই এ যন্ত্রটি বাজারজাত করতে পারবো। আর তা থেকেই দেশ ও দেশের বাইরের সকল অবুজ ও কমলমতী শিশুরা অকালে পানিতে ডুবে মরার হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।

    মটর সাইকেইল ম্যাকানিক মিজানের অভাবনীয় আবিস্কারের শেষ নেই। তার আবিস্কারের মধ্যে রয়েছে আগুন নির্বাপক জ্যাকেট, ডিজিটাল কাইচি, দেশী তৈরী মিনি এ্যাম্বুলেন্স, পরিবেশ বান্ধব যন্ত্র, স্বয়ংক্রিয় সেচ যন্ত্রসহ অসংখ্য আবিস্কার। বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন সহযোগীতায় আমার গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছি। শার্শার বুকে একটি গবেষনাগার ও আর্থিক সাগায্য পেলে দেশের জন্য আরো বড় কিছু করে যেতে পারবো বলে আশা করি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হাত থেকে একাধীক বার পুরস্কার নেয়া মিজানুর রহমান যশোর জেলার শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছী গ্রামের মৃত আক্কাজ আলী মোড়লের গর্বিত সন্তান। পেশাই মটর সাইকেল ম্যাকানিক হলেও তার একের পর এক অভাবনীয় আবিস্কারে গর্বিত দেশ ও দেশের মানুষ।