নড়াইল গুদামে বোরোর পরিবর্তে আমন দেয়ার অভিযোগ

    0
    288

    “খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ৪টি অযোগ্য রাইচ মিলকে চাল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন”

    নড়াইল প্রতিনিধিঃ সদর উপজেলা খাদ্য গুদামে বোরো চালের পরিবর্তে আমন চাল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা তদন্তের জন্য সোমবার (১৩মে) তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে সদরের ৪টি অযোগ্য রাইচ মিলকে চাল বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক রাইচ মিল মালিক।
    জানা গেছে, রোববার (১২মে) চলতি মৌসুমে বোরো চাল সংগ্রহ অভিযানে বোরো চাল না দিয়ে মিলাররা সদর উপজেলা খাদ্য গুদামে আমন চাল দিচ্ছে, এ অভিযোগ এনে কয়েকটি সংগঠন মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম এলাকায় জাতীয় কৃষক সমিতি, ক্ষেত মজুর ইউনিয়ন এবং পেনশন আদায় সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষেত মজুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ক্ষোভের সাথে জানান, নড়াইলের কয়েক মিলার কম দামে পুরোনো গুটি স্বর্ণা আমন চাল কিনে তা উপজেলা খাদ্য গুদামে দিচ্ছেন। এক শ্রেণির অসাধু মিলাররা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় গুদাম কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এ কারসাজি করছেন।
    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার সরকারিভাবে জেলার মোট ৫৪জন মিল মালিকের কাছ থেকে প্রতি কেজি সিদ্ধ ৩৬ টাকা ও আতপ-৩৫ টাকা দরে মোট ৪ হাজার ১ শত ৯১ মেট্রিক টন ( সিদ্ধ-৩৯০৮ ও আতপ-২৮৩) বোরো চাল এবং ১ হাজার ৪৫৯ মেঃটঃ ধান সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি ধান ২৬টাকা করে ক্রয় করা হবে।
    এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ৩টি বন্ধ ও ১টি ডিজেল ইজ্ঞিন চালিত রাইস মিলকে সচল দেখিয়ে চাল বরাদ্দের অভিযোগ করেছেন সদরের গারোচোরা এলাকার সাইফুল্লাহ রাইস মিলের মালিক মোঃ সাইফুল্লাহ। তিনি খাদ্য মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগে এক লিখিত অভিযোগে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা তুলারামপুর ইউনিয়নের চাঁচড়া এলাকার মেসার্স সানি রাইস মিলকে ৪১ মেঃটঃ, কলোড়া ইউনিয়নের পাচুড়িয়া এলাকার অমিত রাইস মিলকে ২৬ মেঃটঃ,বাঁশগ্রাম এলাকার শাওন রাইস মিলকে ১৭মেঃটঃ এবং হিজলডাঙ্গা এলাকার ডিজেল ইজ্ঞিনের রায় রাইস মিলকে ২ মেঃটঃ বোরো চাল দেওয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৪মিলারকে এসব বরাদ্দ দিয়েছেন।
    জেলা খাদ্য কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) মনুতোষ কুমার মজুমদার বলেন, খাদ্য গুদামে আমন চাল নেওয়ার অভিযোগ শোনার পর জেলা প্রশাসক মহোদয় সোমবার (১৩মে) সহকারী কমিশনার (ভূমি),উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি হাতে পাওয়ার পর তদন্ত কাজ শুরু হবে। এদিকে অযোগ্য সম্পন্ন ৪টি রাইস মিলের ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়মানুযায়ী ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি সচল মিলারদের তালিকা করে। এর সাথে আমার কোনো ধরনের অবৈধ সংশ্লিষ্টতা নেই। মেসার্স সাইফুল্লাহ রাইচ মিল ৩মাস বন্ধ থাকার জন্য এবার বাদ পড়েছে। তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এ অভিযোগ করেছেন, যা আদৌ সত্য নয়।
    সদর উপজেলা এলএসডির খাদ্য পরিদর্শক মোঃ তৈয়েবুর রহমান বলেন, সদর উপজেলায় ২৭জন মিলারের কাছ ধেকে ১হাজার ৯৮৭মেঃটন সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে। গত ৭ দিনে ১১জন মিলারের কাছ থেকে ১শ ৮১ মেঃটিন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পুরোনো ও আমন চাল সংগ্রহের অভিযোগের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।