নড়াইলের সাদাত ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন পিস অ্যা্ওয়ার্ডে ভূষিত

    0
    286

    নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের কৃতি সন্তান নড়াইল ভলেন্টিয়ার্স এর প্রতিষ্ঠাতা কিশোর সাদাত রহমান ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন পিস অ্যা্ওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছে। দুর্বার মেধা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে বিশ্ব অঙ্গণে নড়াইল তথা দেশকে আরো একবার সম্মানিত করেছে কিশোর সাদাত। এ আগে মাশরাফির বিন মোতুর্জা নড়াইলকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছিলেন। সাদাত আবার নতুন করে বিশ্বের কালে নড়াইল তথা বাংলাদেশকে চেনালো।
    জানা গেছে, এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য ৪২টি দেশের ১৪২ জন শিশুর মনোনয়নের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল বিশ্বমঞ্চে উঠে আসার দৌড়।শিশুদের নোবেল’খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের সেই দৌড়ে টিকে ছিল তিনজন। যাদের একজন নড়াইলের কিশোর সাদাত রহমান। সাইবার অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে সে উঠে এসেছিল বিশ্বমঞ্চের শীর্ষ তিন জনের মধ্যে।
    ১৩ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে ওই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত এক বা একাধিক শিশুর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। সাদাতের সঙ্গে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য দুজন হলো মেক্সিকোর ইভান্না ওরতেজা সেরেট ও আয়ারল্যান্ডের সিয়েনা ক্যাস্টেলন। ওই পুরস্কারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু গত ২৯ অক্টোবর ওই তিন প্রতিযোগীর নাম ঘোষণা করেন। আজ শুক্রবার নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
    ২০০৫ সালে রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকে এই পুরস্কার চালু করে ‘কিডস-রাইটস নামের একটি সংগঠন। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অসাধারণ অবদানের জন্য প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। গত বছর সুইডেনের শিশু পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও ক্যামেরুনের ডিভিনা মালম যৌথভাবে মর্যাদাপূর্ণ ওই পুরস্কার পান। ২০১৩ সালে এই পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই পরের বছর জয় করেছিলেন নোবেল।
    ১৭ বছর বয়সী সাদাত নড়াইল শহরের আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সাদাত রহমানে নেতৃত্বে তার দল সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাদাত সম্পর্কে কিডস রাইটসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাদাত একজন ‘তরুণ চেঞ্জমেকার ও সমাজসংস্কারক। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে এক কিশোরীর (১৫) আত্মহত্যার পর কাজে নামে সাদাত। সে তার বন্ধুদের সহায়তায় ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস নামের একটি সামাজিক সংগঠন শুরু করে। এই সংগঠন বেসরকারি সংস্থা এ্যাকশানএইডের ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ–২০১৯ এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়।
    এই তহবিলের মাধ্যমে তারা ‘সাইবার টিনস মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কিশোর–কিশোরীরা জানতে পারে কীভাবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় সুরক্ষিত থাকতে পারে। প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিশোর–কিশোরী এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। এই অ্যাপের মাধ্যেম ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং ৮ জন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে সাদাত ‘সেফ ইন্টারনেট, সেফ টিনএজার নামের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সে এবং তার বন্ধুরা ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুলে স্কুলে সেমিনার–কর্মশালা করছে। তারা প্রতিটি স্কুলে ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ক্লাব প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।