আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১মার্চ,এস কে দাশ সুমন: শ্রীমঙ্গল শহরতলির বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসহ হাট বাজারে দিন দিন বেড়েই চলেছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার। কোন কিছুতেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না এই নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার , আর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব অপচনশীল দ্রব্যে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে আমাদের জনজীবন ও জীব বৈচিত্র্য।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান শপিং মল, কাঁচা বাজার, মাছ বাজারে দেদারছে পলিথিন বিক্রির রীতিমত উৎসব চলছে। অত্র উপজেলার হাট বাজারের বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে এসব পলিথিনের ব্যবহার । ফলে মাটি হারাচ্ছে তার উর্বরতা ও বন্ধ হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। দূষিত হচ্ছে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহ সেই সাথে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর রোগ জীবাণু। সল্প পূঁজিতে অধিক লাভজনক ও বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পলিথিন উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছে এবং রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সুত্রমতে ১৯৮২ সালের প্রথম দিকে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রথম পলিথিনের বাজারজাত ও ব্যবহার পর্ব শুরু হয়। সহজে পরিবহন যোগ্য ও স্বল্পমূল্যের কারণে এদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে পলিথিনের ব্যাবহার দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কিন্তু ক্রমান্বয়ে পলিথিনের ব্যাপক চাহিদা ও যত্রতত্র ব্যবহার এবং ফেলে রাখার কারনে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে এই পলিথিন । বিশেষ করে ড্রেন, ডোবা, পুকুর, নালা, খাল সহ বিভিন্ন জলাশয়ে পলিথিন জমা হবার কারনে ওইসব স্থানে জলের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যার দরুন মশা – মাছির প্রজনন বৃদ্ধি সহ পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
এর ফলশ্রুতিতে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, ক্রয় – বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ ও বিতরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সরকারের পক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত হবার একযুগ পরেও আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ পলিথিনের অবাধ বিক্রয় ও বিতরণ সমগ্র দেশের ন্যায় শ্রীমঙ্গলে বিক্রি হচ্ছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এই অপচনশীল পলিথিন।
শহরতলির বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজারে স্বল্পমূল্যে এসব পলিথিন তুলে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের হাতে যা পরবর্তীতে গিয়ে পড়ছে বিভিন্ন পুকুর, ডোবা, ড্রেন ও রাস্তায়। তৈরি করছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বন্ধ হচ্ছে পয়ঃনিস্কাশন ব্যাবস্থা তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা ।
দ্বরিকা পাল মহিলা কলেজের সহকারী প্রভাসক ও লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক জলি পাল বলেন পলিথিন আমাদের সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ এটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে এতে মাটির উর্বরাশক্তি বিনষ্ট হয় ফসল উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই এর ব্যবহার রোধ করা সম্ভব। এ ব্যাপারে পৌর কতৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন শ্রীমঙ্গলের সচেতন নাগরিক সমাজ।