নিরাপত্তায় বসানো হচ্ছে বেনাপোল বন্দরে বিপুলসংখ্যক সিসিটিভি

0
736
নিরাপত্তায় বসানো হচ্ছে বেনাপোল বন্দরে বিপুলসংখ্যক সিসিটিভি

এম ওসমান, বেনাপোল প্রতিনিধিঃ বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরায় আওতায় আনা হচ্ছে। ওই লক্ষ্যে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরে ৩৭৫ টি সিসি ক্যামেরা বসানো কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর সিসি ক্যামেরা স্থাপনে খুশি ব্যবসায়ীরা। কারণ সিসি ক্যামেরা যেমন বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, তেমনি পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস পর্যন্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুরোটাই বন্দরের নজরদারিতে থাকবে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বেনাপোল স্থলবন্দরে সিসি ক্যামেরা বসানোর সব কাজ শেষ হবে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী। বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্র শনিবার (১০ জুলাই ২০২১) এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয়। ভারতের সঙ্গে এদেশের স্থলপথে যে বাণিজ্য হয় তার ৭০ শতাংশই বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থে বেনাপোল কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেক আগেই সিসি ক্যামেরার আওতায় এলেও সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে যে স্থলবন্দর, সেই বন্দরটিই এতোদিন সিসি ক্যামেরার আওতায় আসেনি। ফলে বন্দর থেকে পণ্য চুরি, মাদক পাচার, রহস্যজনক অগ্নিকান্ড, চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মী হত্যাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ থাকলেও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ এতোদিন কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এখন তা বাস্তবায়ন হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বেনাপোল স্থলবন্দরের বাইপাস সড়ক, পণ্যগার, ভারতীয় ট্রাক ও চ্যাচিস টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল, ঢাকা-কলকাতা মহাসড়কসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ৩৭৫টি আধুনিক মানের সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে মাটির নিচ দিয়ে কেবল সংযোগ নির্মাণের কাজ চলছে। সেজন্য স্মার্ট টেকনোলজি নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তদারকিতে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিরলসভাবে কাজ করছে। সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা খুশি। কারণ বন্দর থেকে আমদানি পণ্য চুরি হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। সেজন্য অনেক ব্যবসায়ীই ওই পথে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিল। তাদের মতে, আগে থেকে সিসি ক্যামেরা থাকলে বন্দরে পণ্য চুরির ঘটনা ঘটতো না।

এদিকে এ প্রসঙ্গে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতীয় ট্রাকে অবৈধভাবে পণ্য বন্দরে প্রবেশ করে পাচার হচ্ছে। আমদানি পণ্য চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়মে ব্যবসায়ীরা যারা এ পথে আমদানি বন্ধ করেছে, সিসি ক্যামেরায় নিরাপত্তা পেলে তারা আবার ফিরে আসবে।

অন্যদিকে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। তাতে বন্দরে পণ্য চুরিসহ নানা অব্যবস্থাপনা রোধ ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে। এ প্রসঙ্গে বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বন্দরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর। এখন তা স্থাপনের কাজ চলমান।