নিখোঁজের সপ্তাহ পর সাইবার বিশেষজ্ঞ তানভীরকে উদ্ধার

    0
    224

    নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্যের বরাত দিয়ে তানভীর জোহার চাচা মাহবুবুল আলম জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে তানভীর বিমানবন্দর এলাকায় উদভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করছিলেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে চিনতে পেরে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকার বশিরউদ্দিন রোডের ১৮/৩ নম্বর বাড়িতে পৌঁছে দেন। তবে আইনশৃঙ্খলবা বাহিনীর কারা তাকে খুঁজে পেয়েছে সে বিষয়টি তিনি নির্দিষ্ট করে না জানিয়ে বলেন, জোহাকে রাত একটার দিকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার পর এখন পর্যন্ত সে সুস্থ আছে।

    সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। এরপর তানভীর নিজেকে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন মতামত দেন। পরে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তানভীর জোহা/তানভীর হাসান জোহা নামের কোনো ব্যক্তির সঙ্গে আইসিটি বিভাগের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই এবং আইসিটি বিভাগের সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট বা সাইবার সিকিউরিটি ফোকাল পয়েন্ট বা সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন) হিসেবেও কর্মরত নন।

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের সংবাদে আইসিটি বিভাগ বিস্মিত। এই নামের কোনো ব্যক্তির কর্মকাণ্ড দ্বারা কোনো মহল বা প্রতিষ্ঠান প্রভাবিত বা প্ররোচিত বা প্রতারিত হলে তার দায়দায়িত্ব আইসিটি বিভাগ বহন করবে না।

    আইসিটি মন্ত্রণলয়ের বিবৃতির পর গত মঙ্গলবার একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে তানভীর হাসান জোহা বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ হ্যাকিংয়ের আসল ঘটনা প্রকাশ করায় একটি মহল আমার ওপর ক্ষুব্ধ। তারাই এখন বলছেন, আমি তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কেউ নই। তারা আমাকে তদন্ত কাজ থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। আমি রোববার রাতেও র‌্যাবের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত কাজে অংশ নিয়েছি। আমি যদি কেউ না হই, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘটনার তদন্তে কীভাবে কাজ করছি? আমাকে চিঠি দিয়ে তদন্ত কাজে ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

    তিনি আরও বলেন, আমি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন), এটা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। এটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি প্রকল্প। প্রকল্পটি নতুন অর্থ বরাদ্দের জন্য দু’মাস ধরে স্থগিত আছে। অর্থ বরাদ্দ হয়ে গেছে। আমরা আবারও কাজ শুরু করব।

    জোহা আরও বলেন, এর আগে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার আমন্ত্রণে আমি জঙ্গি তৎপরতাসহ সাইবার অপরাধের বড় বড় ঘটনা তদন্তে সহায়তা করেছি। তখন কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। এখন একটি মহলের স্বার্থে আঘাত লাগায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।

    জোহার এ বক্তব্য প্রকাশের পর ১৬ মার্চ বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে জোহা নিখোঁজ হন। জোহার স্বজনদের অভিযোগ, রাজধানীর কচুক্ষেতে জোহাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

    উল্লেখ্য, তানভীর হাসান জোহার বাড়ি মাগুরা জেলায়। তার বাবা মৃত নজরুল হাসান ঘোড়াশাল সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। জোহা আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা শুরু করে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ক্রেডিট ট্রান্সপার করে নিয়ে যান। সেখানেই একই বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে বেশকিছুদিন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করেন তিনি।

    তথ্য প্রযুক্তিবিদ হিসেবে পরিচিতিও লাভ করেন। ২০১৩ সালের শেষের দিকে তিনি ইনসাইট বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন নামক একটি এনজিওর সঙ্গে জড়িত হন। বর্তমানে এর ভাইস-চেয়ারম্যান এর পদে রয়েছেন।ইরনা