নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নায়ক বড়লেখার ক্রিকেটার এবাদত

0
1181
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নায়ক বড়লেখার ক্রিকেটার এবাদত
এবাদতের মা বাবা

এম এম সামছুল ইসলাম, জুড়ী ,মৌলভীবাজারঃ টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর এই জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন চৌধুরী এখন সবার প্রশংসায় ভাসছেন। এবাদতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তাঁর নিজ গ্রাম মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির কাঠালতলীতে যেন বইছে খুশির বন্যা। পরিবারের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও খুশিতে যেন আত্মহারা। কাঠালতলী বাজারে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ  ও কেক কেটে আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।      

শনিবার ৮ ডিসেম্বর সরেজমিন বাড়িতে গিয়ে আলাপকালে এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও মা সামিয়া বেগম চৌধুরী বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। সারাদিন ক্রিকেট খেলত। তাঁর স্বপ্ন ছিল সে কোনো একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের মুখ উজ্জল করবে। আজ আমার ছেলে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিতিয়ে সে দেশের মুখ উজ্জল করেছে। আমাদের ছেলের এমন পারফরমেন্সে আমরাও খুশি। এলাকার মানুষও খুশি। আমরা তার সব খেলা দেখেছি। নামাজ পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি।  সকালে এবাদতের সঙ্গে আমাদের মুঠোফোনে কথা হয়েছে। সে খুব খুশি।  

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নায়ক বড়লেখার ক্রিকেটার এবাদত
কাঠালতলী বাজারে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ও কেক কেটে আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।

এবাদতের চাচাতো ভাই দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী ইমন বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে সারা বাংলাদেশের মতো আমরাও গর্বিত, আনন্দিত। আমার ছোট ভাই এবাদত হোসেন চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগী। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে একদিন দেশের মুখ আলোকিত করবে। আজ সে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।

এবাদতের সহপাঠী আমজাদ হোসেন পাপলু ও এমদাদুর রাজ্জাক রাব্বি বলেন,  নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে  সে যে চমক দেখিয়েছে তাতে আমরা খুশি। এলাকার মানুষ ভীষণ খুশি। তাঁর জন্য আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এলাকার সবাই তাঁকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।   

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্ডার গার্ডে (বিজিবি) চাকরি করতেন। আর মা সামিয়া বেগম চৌধুরী গৃহিনী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে এবাদত হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন এবাদত। ভালো বোলিং করতেন বলে এলাকার বাইরেও তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে।

এসএসসি পাশ করে ২০০৮ সালে সৈনিক পদে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। সেখানেই চাকরির পাশাপাশি বিমানবাহিনীর নিয়মিত ভলিবল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার টান মোটেও কমেনি। ২০১৬ সালে রবি পেসার হান্টের শেষ রাউন্ডে ১৩৯.০৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে সবাইকে চমকে দেন এবাদত। নজরে আসেন সবার। এরপর থেকে এবাদতকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবাদতের অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই তার টেস্টে অভিষেক হয়।

আর সেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতেই ইতিহাস গড়লেন এবাদত। কাঠালতলী ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ স¤পাদক ফারুক আহমেদ ও সোনার বাংলা ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, এবাদতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে আজ বাংলাদেশ অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছে। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। এবাদত আমাদের দেশের, এলাকার মুখ উজ্জল করেছে। তাঁকে নিয়ে আমরা গর্বিত, আনন্দিত।