নারী ভক্তকে ধর্ষণ:ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলার রায় ও উত্তেজনা

    0
    205

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৪আগস্ট,ডেস্ক নিউজঃ  ভারতের ‘স্বঘোষিত’ আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিং তার দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য জুড়ে টান টান উত্তেজনা আর নিরাপত্তার ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যে শুক্রবার চণ্ডিগড়ের পাঁচকুলার একটি বিশেষ আদালত এই রায় ঘোষণা করে বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে। তবে ধর্ষণের দায়ে পঞ্জাবের ধর্মীয় গোষ্ঠী ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের কী সাজা হবে, আদালত সেই সিদ্ধান্ত জানাবে সোমবার। শিখ, হিন্দু, মুসলিম- সব ধর্মের চেতনা মিশিয়ে বাবা রাম রহিম তৈরি করেছেন তার আশ্রম- ডেরা সাচ্চা সওদা।

    কোলকাতার আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে রাম রহিমের দুই লাখ ভক্ত চণ্ডিগড় ও পাঁচকুলাতে জড়ো হতে শুরু করেন। আদালতের রায় বিপক্ষে গেলে সহিংসতা শুরু হতে পারে- এমন আশঙ্কায় সকাল থেকে পাঁচকুলায় সেনাবাহিনী নামানো হয়। ৫০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় হরিয়ানা ও পঞ্জাবে। রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর ও হনুমানগড়ে ১৪৪ ধারা জারি করার পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বহু লোককে গ্রেপ্তার করতে হতে পারে- এমন ধারণা থেকে পুলিশ একটি স্টেডিয়ামও অধিগ্রহণ করে।
    হরিয়ানা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, রায় যাই হোক, কর্তৃপক্ষ যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। এই উত্তেজনার মধ্যেই সিরসায় নিজের সাংগঠনিক দপ্তর থেকে ১০০ গাড়ির বহর নিয়ে রওনা হয়ে আড়াইশ কিলোমিটার দূরে পাঁচকুলা আদালতে পৌঁছান রঙদার চরিত্র রাম রহিম সিং। তবে ওই বহরের দুটি গাড়িকে শেষ পর্যন্ত আদালতে চত্বরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। আদালত দুপুরে রায় ঘোষণার পরপরই ৫০ বছর বয়সী রাম রহিমকে কড়া পাহারার মধ্যে আম্বালা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। রায় শোনার পর আদালতের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বহু সমর্থক।
    বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, গায়ক, চিত্রনায়ক ও পরিচালক বাবা রাম রহিমের মতো বর্ণময় চরিত্র ভারতের অজস্র ধর্মগুরুর মধ্যেও বিরল।  হরিয়ানায় গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রতি সমর্থন দিয়েছিলেন রাম রহিম। লাখ লাখ ভক্ত থাকায় বড় ভোট ব্যাংক বিবেচনা করে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অনেক নেতাই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাখেন। কিন্তু পনেরো বছর আগে নিজের আশ্রমেই দুজন ভক্ত মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
    অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির চিঠির সূত্র ধরে ২০০২ সালে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে সিবিআই। সেখানে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে নিজের আশ্রমে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করেন রাম রহিম। ২০০৭ সালে শুনানি শুরুর পর দশ বছরের মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। বিচারের পুরোটা সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান। বিবিসি/ আনন্দবাজার/এনডিটিভি মাধ্যমে ইত্তেফাক।