নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

    0
    265

    “ভিসি, শিক্ষামন্ত্রী, দুদক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে নানা অভিযোগ দায়ের”

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৯জুলাই,মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেন আজাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাছারিতা, অনিয়ম ও কর্তব্য কাজে অবহেলাসহ ৩৩ টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্বলিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর অভিযোগগুলো দিয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলার খনকারীপাড়া গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমান, কলেজপাড়া এলাকার মোঃ ইয়াওর আলী শিকদার নামের লোক। অপর দিকে হত্যা মামলার চার্জসীটভুক্ত আসামী সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্টানে চাকুরী করার কোন বিধান না থাকলেও বহাল তবিয়তে আছেন এই অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদ। এছাড়া বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
    অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেছেন, ওই কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেন আজাদ’র নিকট ২০১৫ সনে সৌর বিদ্যুতের জন্য সংসদ সদস্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু কোন কাজ না করে অধ্যক্ষ সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০১৬ সনে তিনি অসুস্থ হলে কলেজ গভর্ণিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই প্রায় ৪ মাস কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি অবৈধভাবে অনুপস্থিত দিনের বেতন উত্তোলন করেছেন। ২০১৭ সনে কলেজের গভর্ণিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কিছু বই ক্রয় করেছেন লোকমুখে প্রচার করে ওই টাকা তিনি আত্মসাত করেন। ওই অভিযোগ পত্রে আরো বলা হয়েছে, সরকারী বিধি মোতাবেক অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকার উপরে যদি কোন কাজ করতে হয় তাহা হলে উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহবান করতে হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেন আজাদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে কলেজের দোতলার বর্ধিত অংশের নির্মান কাজ কলেজ গভর্ণিং কমিটির অনুমোদন বা টেন্ডার ছাড়াই করেছেন। পরে তিনি কাজের মোট ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে কমিটিকে জানান।

    এ কাজে কলেজ গভর্ণিং কমিটির সভায় বিল ভাউচার উপস্থাপন করেননি। কলেজের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের বেতন, ভর্তি ফি কলেজের অফিস সহকারী বিন্দু ভুষন বৈদ্যের মাধ্যমে আদায় (পরিশোধ) করে কলেজের একাউন্টে জমা না দিয়ে অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদ নিজ হাতেই খরচ করে আসছেন। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি বিধান অনুযায়ী ৫শত টাকার অধিক খরচ করতে হলে কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। অধ্যক্ষ এসব বিধিবিধানের কোন তোয়াক্কা করেননি। কলেজের নিজস্ব ৪ টি পুকুরের মাছ চাষ বা ইজারার টাকা তিনি ব্যাংকে জমা করেননি। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন ফি আদায়ের জন্য মুদ্রিত রশিদ বহি এর কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। জিবির অনুমোদন ছাড়াই কলেজে স্কুল ভবন ও লাইব্রেরী ভবন নির্মান করে তিনি পরবর্তীতে গভর্ণিং বডির সভায় কলেজে স্কুল ভবন নির্মানে ৩০লক্ষ টাকা ও লাইব্রেরী ভবন নির্মানে ২২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে উপস্থাপন করলে কাজের সাথে ব্যয়ের কোন সামঞ্জস্য না থাকায় ওই খরচের অনুমোদন দেয়া হয়নি। এছাড়া ও ওই কলেজে নিজের কন্যাকে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্বে ও কলেজে চাকুরী দেয়া, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বাড়ি ভাড়া গ্রহণ, কলেজ গভর্ণিং বডির অনুমোদন ছাড়া কার্যক্রম পরিচালনা ও অর্থ ব্যয়, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মনগড়াভাবে ফি আদায়, কলেজের গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাত তিনি একক মতে কলেজ ভবন ভাঙ্গা-গড়াসহ ৩৩ টি অভিযোগ সম্বলিত অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেন আজাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও অনুলিপি পত্র শিক্ষামন্ত্রী, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ প্রেরণ করা হয়েছে।

    অপর দিকে, বি.এস আর পার্ট-১ এর ৭৩ বিধি অনুযায়ী কোন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্টানের কোনো প্রতিষ্টান প্রধান বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলার চার্জশীট আদালত কতৃক গৃহীত হলে তিনি নিজ পদে থাকিতে পারেন না। অর্থাৎ কতৃপক্ষ অভিযুগÍ কর্মকর্তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করিতে বাধ্য। এমন বিধান থাকলে রহস্যজনক কারনে অদ্যাবধি পর্যন্ত কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গোলাম হোসেন আজাদের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জের বুরহানপুর গ্রামে ২০১০ সালের একটি হত্যা মামলা নং ২৭ তাং ২৩-১০-২০১০ইং। জিআর মামলা নং ২৮৭/১০ইং, অভিযোগ পত্র নং ০৭। ২০১১ ইং সালের ৩০ জানুয়ারী বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক চার্জসীট গৃহীত হওয়া সত্ত্বেও হত্যা মামলার প্রধান আসামী গোলাম গোসেন আজাদ কিভাবে নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে চাকুরীতে বহাল থাকেন এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
    এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি।
    এনিয়ে নবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যারা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন তারা বর্তমানে গভর্নিং বডির কোন লোক নয়। তারা সাবেক কমিটির লোক। এবং তাদের আমলে এসব কাজ করা হয়েছে। সেই সময় তারা কোন অভিযোগ করেননি। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।