নবীগঞ্জে ৩৩ দিনে করোনা আক্রান্ত ২৯০,মোট আক্রান্ত ৫৪২,মোট সুস্থ ২৯৯ জন

0
608
নবীগঞ্জে ৩৩ দিনে করোনা আক্রান্ত ২৯০,মোট আক্রান্ত ৫৪২,মোট সুস্থ ২৯৯ জন

নূরুজ্জামান ফারুকী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জ উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত (জুন ২০২১) মাসে ১১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পজিটিভ আসে ২৩ জনের। অথচ জুলাই মাসে ৫৮৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পজিটিভ আসে ২৫৮ জন।

এছাড়া গত তিন দিনে করোনায় আক্রান্ত হন ৩২ জন। এদিকে শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ৩ জন হলেও বেসরকারী ভাবে করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন কমপক্ষে শতাধিক লোক।

মঙ্গলবার (৩রা আগষ্ট ২০২১) করোনা উপসর্গ নিয়ে সুজাপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়াসহ মৃত্যু বরণ করেছেন ৩ জন। এভাবে করোনা লাফিয়ে বাড়তে থাকায় সংশ্লিষ্ট মহল চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালে অক্সিজেন তুলনামুলক ভাবে অপ্রতুল। পর্যাপ্ত অক্সিজেন না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিন্তিত রয়েছে।

হাসপাতাল ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলায় শুরু থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২ হাজার ৪ শত ১১ জন। এর মধ্যে ৫৪২ জন পজিটিভ, ১৬৩৯ জন নেগেটিভ, মোট সুস্থ হয়েছেন ২৯৯ জন, হোম আইসোলেশনে আছেন ২৩০ জন, হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন।

নবীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত মহামারি করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে কমপক্ষে শতাধিক নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনার প্রথম ঢেউয়ে মারা যান ২ জন। বাকীরা করোনা এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। এদিকে উপজেলায় করোনা আক্রান্তের হার এর পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি হয়নি।

দিকে গত ৩৪ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৯৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে প্রসঙ্গত ২৯০ জনই করোনা শনাক্ত হয়েছে। জুন মাসে ১১০ জনের নমুনা সংগ্রহ হলে শনাক্ত হয়েছিল ২৩ জন। সরকারী হিসেবে এ উপজেলায় করোনায় মারা গেছে ৩ জন।

তবে এ পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে শতাধিক নারী-পুরুষের মৃত্যুর খবর রয়েছে। প্রতিদিন ২/৩ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা করোনা নমুনা পরীক্ষা না করেই উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ২৩০ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ জন।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে সুজাপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়াসহ উপজেলায় ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২ হাজার ৪ শত ১১ জনের। এরমধ্যে ৫৪২ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন এ পর্যন্ত ২৯৯ জন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের মাঝে আশাজনকভাবে করোনা পরীক্ষা করানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পহেলা জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ৬৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ২৯০ জনের দেহে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্তের হার প্রায় ৪৬%।

ইতোপূর্বে আক্রান্তদের মধ্যে গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী একজনও সুস্থ হননি। আক্রান্তদের মধ্যে ২৩০ জন রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। ১০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন।

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, যে হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই তুলনায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা তাদের নেই। অক্সিজেন এর খুব সংকট রয়েছে। এই মহামারি করোনার কবল থেকে নবীগঞ্জবাসীকে রক্ষা করতে সরকারের পাশাপাশি সকল শ্রেণীপেশার মানুষ এগিয়ে আসতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন আহমদ বলেন, “এই মহামারি করোনা থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে যেন বের না হই। মাস্ক বিহীন চলাচল যেন না করি।“ এ ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান।