নবীগঞ্জে সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নিতির অভিযোগ

    0
    226

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৪ফেব্রুয়ারী,মতিউর রহমান মুন্না: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ অংশসহ নবীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১৫টি সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংস্কার না হওয়ার ফলে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নিতির কারনেই কদিন যেতে না যেতেই সড়ক গুলোর এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। মহাসড়কের নবীগঞ্জ অংশে সংস্কার কাজের নামে কোন রকম জুড়াতালি দিয়ে সরকারের কয়েক কোটি টাকার হরিলুট দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাধারী প্রতিষ্টান। নিম্ন মানের মালামাল সরবরাহ ও অনিয়মের ফলে কাজ শেষ হতে না হতেই মহাসড়কের অনেকস্থানে বড় বড় গর্ত ও ফাঠল দেখা দিয়েছে। এতে মহাসড়কগামী দুরপাল্লার বাসসহ ছোট বড় যানবাহনগুলো প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার সম্মুখিন হচ্ছে। ঠিকাধারী প্রতিষ্টানের দুর্ণীতির কারনে মহাসড়কের দুরাবস্থা দেখার যেন কেউ নেই।

    মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা হতে শেরপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। গেল বছরের শেষের দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার ১৪ কিঃ মিঃ রাস্তায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে সংস্কার কাজ পায় রানা বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাধারী প্রতিষ্টান। কাজ শুরুর পর থেকেই নিু মালের মালামাল সরবরাহ ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে কোন রকম জুড়াতালি দিয়ে কাজ সমাপ্ত হয়। কিন্তু মাস দু’য়েক যেতে না যেতেই ঠিকাধারী প্রতিষ্টানের নিম্ন মানের কাজের ফলে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত এবং ফাটলসহ ব্রীজের কার্নিস ধ্বসে গিয়ে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের ত্র“টিপুর্ণ কাজের কারনে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অনেক প্রানহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে সাধারন যাত্রীদেরকে। এ ছাড়া মহাসড়কে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো সড়কের ভাঙ্গার কারনে একটি অপরটিকে ওভারট্যাক করতে বেকায়দায় পরতে হচ্ছে। ইতিপুর্বে মহাসড়কের গর্ত ক্রস করতে গিয়ে বিপরীত গামী যানবাহনের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ও ঘটছে অহরহ। সংশ্লিষ্ট ঠিকাধারী প্রতিষ্টান সড়ক সংস্কারের কাজে একেবারে নিম্নমানের কাজ করায় মহাসড়কের বেহালদশায় পরিনত হয়েছে। এ যেন দেখার কেউ নেই !

    এছাড়া ও নবীগঞ্জ উপজেলার অন্তত ১৫টি সড়ক বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় ও আঞ্চলিক এই সড়ক গুলোতে সংস্কার কাজ না হওয়াতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে করে প্রায় প্রতিনিদিই উপজেলার কোন না কোন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। জনগুরুত্বপুর্ন সড়ক গুলোর মধ্যে রয়েছে কাজিগঞ্জ-মার্কুলী সড়ক, নবীগঞ্জ-সাকোয়া সড়ক, নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়ক, নবীগঞ্জ-ডিগ্রি কলেজ ভায়া করগাও সড়ক, নবীগঞ্জ-আনগাও সড়ক, নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ ভায়া ছোট আলীপুর সড়ক, নবীগঞ্জ-আউশকান্দি ভায়া সাদুল্লাহপুর সড়ক, কুর্শি-বান্দের বাজার সড়ক, কুর্শি-গোফলার বাজার সড়ক, বাংলাবাজার-গোপলা বাজার সড়ক, বাংলাবাজার-বাউশা সড়ক ইনাতগঞ্জ-কাজিগঞ্জ সড়ক, বাজারসৈয়দপুর-ইনাতগঞ্জ সড়ক, আউশকান্দি গোফলার বাজার সড়ক, আনগাঁও-কান্দিগাঁও সড়ক, বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে। ফলে ৯টি সড়ক নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ করে কাজিগঞ্জ – মার্কুলী সড়কের বেশীর ভাগ অংশে কার্পেটিং উটে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তা দুটি এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এসব সড়কের মধ্যে নিম্নমানের কাজ হলেও হবিগঞ্জ এলজিইডি অফিস ও নবীগঞ্জ এলজিইডি অফিস সংশি¬ষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অদৃশ্য কারনে নীরবতা পালন করছেন। ফলে জনতার মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। এছাড়া নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা সংস্কারে কিছু দিনের মধ্যেই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মধ্যে বাস ও ভারী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ এলজিইডির প্রকৌশলী সৈয়দুর রহমান বলেন, সড়ক গুলোর অবস্থা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে। অনেক রাস্তায় কাজ চলছে বাকী কাজ বরাদ্ধ আসলে সব কিছু সংস্কার কাজ দ্রুত সম্ভব করা হবে।

    এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য জেলা জাতীয় পার্টির সভপতি এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু বলেন, ২/৩টি রাস্তার সংস্কার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আরো ২টি রাস্তার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু হবে। আর অন্যান্য কাজ প্রক্রিয়াধিন অবস্থায় রয়েছে পর্যায় ক্রমে সব রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হবে।