নবীগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ !

0
1427

নুরুজ্জামান ফারুকী,নবীগঞ্জ থেকে: নবীগঞ্জে ধর্মীয় শিক্ষক মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আমুকোনা গ্রামে ৬ষ্ট শ্রেণীর ১৪ বছরের এক ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মাওলানা সামছুল ইসলাম নামের এক মসজিদের ইমামকে মসজিদের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন মসজিদ কমিটি। তবে, রহস্যজনক কারনে তাকে আইনের হাতে তুলে দেননি মাতব্বরগন !

জানা যায়, ওই ছাত্রী ইমামের কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করতো। এই সুযোগে মসজিদের ইমাম মাওলানা সামছুল ইসলাম তিনি ওই ছাত্রীকে প্রায়ই ধর্ষণ করতেন বলে অভিযোগ করে নির্যাতিত কিশোরী ধর্ষিতা। এই ঘটনা এলাকায় লোকমুখে জানাজানি হলে মসজিদের ইমামকে গত শুত্রুবার বিভিন্ন অজুহাতে অব্যাহতি দিলেও মসজিদ কমিটি আইনের হাতে দেয়নি৷ এঘটনায় এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে৷ মেয়েটির অসহায় দিনমজুর পিতা না পারছেন সহিতে, না পারছেন ধর্ষককে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে! এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ষিতার পিতা বলেন, আমি আমার পেটের তাগিদে দিন মজুরের কাজে, নিজ জেলা শহরের বাইরে সবসময়ই থাকতে হয়,তাই এই বিষয়টি এতদিন অবগত ছিলাম না৷ তাই আজকে বিষয়টি শোনে আমি হতবাক৷ তবে,  রহস্যজনক কারনে ও গ্রামের প্রভাবশালীদের ভয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিতেও ভয় পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন৷ধর্ষক ইমাম একই উপজেলার দূর্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিগত ৫ বছর ধরে আউশকান্দি ইউনিয়নের আমুকোনা জামে মনজিদের ইমাম হিসেবে চাকরি করে আসছিলেন।

ধর্ষিতা ভিকটিম জনৈকা কিশোরী জানায়, সে স্থানীয় মাদরাসায় ৬ষ্ট শ্রেণীতে লেখা পড়া করে৷ সে প্রতিদিন সকালে মসজিদে গ্রামের অন্যান্য শিশু-কিশোরদের সাথে গ্রামের মসজিদের ইমাম সামছুল ইসলামের নিকট ধর্মীয় শিক্ষা আরবি পড়তে যেতো। পড়া শেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ধর্মীয় শিক্ষক ইমাম সামছুল ইসলাম তাকে ছুটি দেননি। ঝাড়ু দেওয়ার কথা সহ বিভিন্ন কাজের অজুহাত দেখিয়ে তিনি কিশোরীকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে যেতেন। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে ইমাম তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।

এরপর থেকে একাধিক বার প্রায়ই তার সাথে এভাবে নানা হুমকি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার সাথে অনৈতিক কাজ করেন৷ মেয়েটি ভয়ে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে বুকে চেপে রাখে। অবশেষে ইমামের সন্দেহজনক আচরণে ও মেয়েটিকে প্রতিদিনই ইমামের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখার ঘটনায় মেয়ের পরিবারের লোকজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা ভিকটিমকে জিজ্ঞেস করলে সে এই ঘটনার বর্ণনা দেয়৷ পরিশেষে গত ১৬মার্চ  একইভাবে তাকে আবারো স্থানীয় গোপলার বাজারে একটি বাসাতে নিয়ে একই ভাবে ধর্ষণ করা হয়৷ এসব কথা কারো কাছে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলেও ছাত্রীকে শাসিয়ে দেন ইমাম। লাজ শরমের ভয়ে কাউকে না বললেও বাড়িতে এসে তার মা’ সহ প্রতিবেশী এক দাদীর নিকট বিষয়টি খুলে বলে মেয়েটি৷ এখবর গ্রামবাসী তথা মসজিদ কমিটির লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে ইমামকে মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়৷ তবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের অনেকেই বলেন, শবে বরাতের পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করার কথা রয়েছে। এজন্য মেয়েটির পরিবার আইনের আশ্রয় নেয়নি৷এব্যাপারে অভিযুক্ত ইমাম সামছুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মেয়েটিকে কখন ধর্ষণ করেছি, আমার মনে নেই, আমি এসব করি নাই, আমার মোতাওয়াল্লী সাহেব সব জানেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ইমাম অসুস্থতার জন্য ছুটিতে গেছেন৷ এসব কথা বলেই মোবাইলের লাইন কেটে মোবাইল ফোনটি বন্ধ দেন। পরে তার সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি৷ এলাকার সচেতন মহলের দাবী এই ধর্ষক ইমামকে তড়িৎ গতিতে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানান।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় মসজিদ কমিটি ধর্ষককে আইনের হাতে তুলে না দিয়ে অব্যাহতি দিয়ে তারা দ্বায়বার এড়াতে পারেননা ও ভিকটিমের পক্ষ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷