নবীগঞ্জে লাভের আশায় গ্রাফটিং করে আগাম টমেটো চাষ

0
315

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম চারা টমেটো চাষে সফল হয়েছেন আদর্শ কৃষক মনু মিয়া। মাত্র ১৪ শতক জমিতে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো চাষ করেন তিনি স্বপ্ন দেখছেন লাখ টাকার বেশি লাভ হবে।
ইতোমধ্যে তার চাষকৃত টমেটো বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষক মনু মিয়া কালিয়ার ভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরাণ গাওঁ গ্রামের মৃত গোলাম কবির চৌধুরীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর ২০২২) সরেজমিন ঘুরে জানা যায়,মনু মিয়া দীর্ঘদিন আগে থেকে তিনি বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছেন। প্রতি বছর তিনি বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি টমেটোও চাষ করে থাকেন।
এরই মধ্যে তিনি কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম করে জানতে পারেন, টমেটো চাষ পদ্ধতি দেখে কাঁটা বেগুনের ছারা সংগ্রহ শুরু করেন।
তিনি বলেন, প্রথমে কাঁটা বেগুনের চারা প্রায় বয়স ১৫ দিন হলে টমেটোর চারা বপন করতে হয়। এরপর চারার বয়স এক মাস হলে গ্রাফটিং কলম করে এক সপ্তাহ ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পর, পরের এক সপ্তাহ রোদে রাখতে হয়। এরপর জমিতে চারা রোপণ করতে হবে।
কৃষক মনু মিয়া বলেন, এবার পরীক্ষামূলক প্রায় পৌনে ১৪ শতক জমিতে ১৫০০ পিস টমেটো কলম চারা রোপণ করেছেন। কাঁটা বেগুন গাছ অতি বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে এবং প্রখর রোদ সহনশীল হওয়ায় গাছের গোড়া নষ্ট হয় না।
ফলে কলমের গাছ প্রায় ৮ মাস পর্যন্ত টিকে থাকে এবং ভাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়া সাধারণ টমেটো গাছের চাইতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই রোগবালাইও কম। এতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের পরিমাণ একটু বেশি হলেও লাভও বেশি হবে।
তিনি বলেন, ১৪ শতক জমিতে টমেটো চাষ করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৫-৬ কেজি টমেটো পাবেন বলে ধারণা করছেন। তিনি ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা শুরু করেছেন।
গত কয়েক দিনে প্রায় ১৫ কেজির মতো টমেটো তুলে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ১১০-১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতেই ফল পাওয়ায় চড়া দামে বিক্রি করতে পারছেন, তাই চাষকৃত জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে এমনটায় আসা তার।
আগামী বছর টমেটো চাষের পরিধি বাড়াবেন বলেও জানান তিনি। গত বছরে ও তিনি ইন্টারনেটে দেখে পরীক্ষামূলক পরিত্যক্ত ৭ শতক জায়গায় টমেটো চাষ করেছেন। লাভবান হয়েছেন গত বছরের লাভবান হওয়ায় এবছর ও তিনি বলেন ২৪ শতক টমেটো চাষ করেছেন । মনু মিয়া বলেন এ ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে সার্বিক পরামর্শ নিচ্ছেন।
মনু মিয়া জানান, সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা পেলে এবং উন্নত প্রযুক্তি অনুসরণ করে আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই যে কোনো ফসল ফলাতে পারলে অবশ্যই স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম বলেন, নবীগঞ্জে এই প্রথম কৃষক গ্রাফটিং কলম করে টমেটো চাষ করেছেন। আমরা তাকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি।
তিনি বলেন, গ্রাফটিং কলম গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং গোড়া অতি সহজে পচে না, তাই গাছ দীর্ঘজীবী হয়। ফলে দীর্ঘসময় ধরে ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আগাম চাষ করার কারনে টমেটোর দামও ভালো পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।