নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

    0
    191

    পৃথিবির প্রায় ২০০ দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

    আজ মঙ্গলবার সকালে দেশের ৬৪ টি জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়তে থাকে, এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আমরা সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছি। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি ঘোষণা করা আছে। কিন্তু সারাবিশ্ব এখনো এই ভাইরাসের ঝুঁকিতে আছে। আমরাও বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নই। তাই এই ঝুঁকি এড়াতে আমাদের সেই ছুটি অল্প কিছুদিন বাড়াতে হতে পারে।’

    এসময় প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্তে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন ইঙ্গিত দেন, আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সেই ছুটি বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ওই দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় কার্যকরভাবে সাধারণ ছুটি পরবর্তী সাপ্তাহিক ছুটির শেষ দিন শনিবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত বলবৎ হবে। অর্থাৎ সাধারণ ছুটির মেয়াদ এক সপ্তাহ বাড়তে পারে।

    ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, নববর্ষের অনুষ্ঠান আমরাই শুরু করেছিলাম। কিন্তু তাও আমাদের বন্ধ রাখতে হচ্ছে। মানুষের কল্যাণেই এ অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ আপনাদের।

    ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসকেরা তাদের নিজ নিজ জেলার প্রস্তুতির অবস্থা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। তাদের কথার সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মোকাবিলায় দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করাটা জরুরি। আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু জনসংখ্যা বিশাল। এরপরও আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। সেজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে রয়েছে।

    সবাইকে ঘরে অবস্থানের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা প্রতিরোধে মানুষের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আপনারা এসব নির্দেশনা মেনে চলুন। কেননা নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে।

    করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই সময়ে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধরনের কোনো দুর্নীতি-অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

    কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা বলেন, ‘কক্সবাজারে যেন পর্যটক না যেতে পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে। আর রোহিঙ্গা শিবির নিয়ে আমাদের বড় চিন্তায়। সেখানে যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পারে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে পারে।’

    প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের উদ্দেশ্যে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজ যেগুলো আছে, যথাযথভাবে করতে হবে। কিন্তু যারা দিন আনে দিন খায়, প্রতিদিনের আয় দিয়ে বাজার করে খেতে হয়, সাধারণ ছুটির কারণে কাজ পাচ্ছে না বলে তারা আজ ভুক্তভোগী। তাদের কাছে আমাদের সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে, যেন তারা অভুক্ত না থাকে। একইসঙ্গে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সচেতন করার কাজটিও করতে হবে।

    একপর্যায়ে প্রধান মন্ত্রী বলেন আপনাদের বেশি বেশি পানি পান করা জরুরী কিন্তু আপনাদের কারো সামনে পানির বোতল দেখছি না। একজন প্রধান মন্ত্রীর এতটা দায়িত্ব জ্ঞান দেখে টিভি সেটের সামনে বসে থাকা সাধারণ মানুষের প্রশাংসা কুড়িয়েছেন।