নড়াইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণ ও ভিডিও ধারণঃগ্রেফতার-৩

0
782
নড়াইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণ ও ভিডিও ধারণঃগ্রেফতার-৩
নড়াইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণ ও ভিডিও ধারণঃগ্রেফতার-৩

সুজয় বকসী,নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের লোহাগড়ার  উপজেলার কামারগ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রী গণধর্ষনের শিকার হয়েছে। সে স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী।

এঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামী করে মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বিকালে লোহাগড়া পুলিশ এজাহার ভূক্ত তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে ওই ছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষা করার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের কামারগ্রামের এক কৃষকের কিশোরী কন্যা ও স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীর (১৩) সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের আমিনুর শেখের ছেলে অন্তর শেখের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর জের ধরে গত ৫ জুন অন্তর শেখ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল ফোনে ওই কিশোরীকে সন্ধ্যার পর বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে ইজিবাইকে করে লাহুড়িয়া-কল্যানপুরের দিকে নিয়ে যায়।

পথিমধ্যে প্রেমিক অন্তর তার দুই বন্ধু লিকু ফকির ও জামিরুল শেখকে ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায়।তারা রাত নয়টার দিকে ভদ্রডাঙ্গা বাতাশি গ্রামের জোড়া ব্রীজ এলাকায় পৌছালে ইজিবাইক থেকে কিশোরীকে নামিয়ে প্রেমিক অন্তর শেখ, লিকু ফকির ও জামিরুল শেখ তিনজনে মিলে একটি পাটক্ষেতের মধ্যে নিয়ে মুখ বেধে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধষর্ণ করে। এ সময় ধর্ষনের দৃশ্য স্মাট ফোনে ভিডিও ধারন করে রাখে। ধর্ষণের ঘটনাটি কাউকে জানালে ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে কিশোরীকে ভয় দেখায় ধর্ষকেরা। পরে তারা ওই কিশোরীকে অন্তরের ফুফাতো ভাই পার্শ্ববর্তি সরশুনা গ্রামের আজিজুল মুন্সীর বাড়ীতে নিয়ে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে গভীর রাতে কিশোরীর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে যায়। পরে ওই কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে পরিবারের লোকজনকে জানায়।

এদিকে ঘটনার পর নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য সরশুনা গ্রামের মিশাম শেখ ও কামার গ্রামের আশরাফুল শেখ ধর্ষনের বিষয়টি থানা পুলিশকে না জানিয়ে ৬০ হাজার টাকায় বিনিময়ে মিমাংসা করে ফেলতে ওই কিশোরীর পিতাকে চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে ভয়ে কিশোরীর পরিবার চুপচাপ থাকে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে ১০দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে লোহাগড়া থানায় তিন ধর্ষক, দুইজন শালীসকারী ও ইজিবাইক চালকসহ ছয়জনকে আসামী করে মামলা করে (মামলা নং-১৪ তারিখ ১৫.৬.২১)। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামী ধর্ষক অন্তর শেখ, লিকু ফকির ও ইজিবাইক চালক তুষারকে বিকালে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য মিশাম শেখ বলেন, ‘ধর্ষণের বিষয়ে আমি মিমাংসা করতে কাউকে চাপ প্রয়োগ করিনি। আমাকে হয়রানী মূলক ভাবে আসামী করা হয়েছে।’মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন বলেন, ‘ এ ঘটনার এজারভুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’