ধাপে ধাপে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করবে আমিরাতঃপররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

    0
    431

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১মার্চ, ডেস্ক নিউজঃ      বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ধাপে ধাপে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করবে। এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি চিঠিও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব পরিম-লে নিরাপদ সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ অভিবাসন’ বিষয়ক আন্তঃসরকার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন প্রতিমন্ত্রী। পার্লামেন্টারিয়ানস ককাস অন মাইগ্রেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির সভাপতি ইসরাফিল আলম। আলোচনায় বক্তব্য রাখেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সৈয়দ সাইফুল হক, সংসদ সদস্য হুসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি, জেবুন্নেসা আফরোজ প্রমুখ।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশের এক কোটি অভিবাসী রয়েছেন। তারা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করে চলেছেন। এ অভিবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করতে সবচেয়ে সোচ্চার।

    সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ওমানে অভিবাসীদের বিষয়ে যে সঙ্কট ছিল তার সমাধান হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনিয়মিত অভিবাসন বলে কিছু নেই, ফ্রি-ভিসা বলে কিছু নেই। দালালচক্র মিথ্যা বলে এমন ভিসা দিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

    তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে তারা বাংলাদেশ থেকে কিছু নারী ও পুরুষ গৃহকর্মী নেবেন। কিছু চিকিৎসক ও প্রকৌশলীও নেবেন। আর যারা আছে, তারা কাজের অনুমতিপত্র বা আকামা পরিবর্তন করতে পারবে।

    পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, অভিবাসনের সঙ্গে উন্নয়নের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্ব অভিবাসনকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে এই উন্নয়নের সুফল আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে, অনিয়মিত ও অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাদের শোষণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। সাম্প্রতিক সময়ে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, আন্দামান সাগর কিংবা আফ্রিকায় অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের যে মানবিক বিপর্যয় পরিলক্ষিত হয়েছে সেটি বিশ্বব্যাপী সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিবাসন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও সঠিক অভিবাসন ব্যবস্থাপনা প্রণয়নে একটি বৈশ্বিক নীতিমালা ঘোষণার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

    অভিবাসীর জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী গঠন এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠু অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে শুধুমাত্র উৎস দেশই লাভবান হয় তা নয়, বরং তা গন্তব্য দেশসমূহের সামাজিক ও অর্থনৈতিক টেকসই উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এ বিষয়ে বিশ্বে আজ সুস্পষ্ট ধারণাগত ঐক্যমত তৈরি হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ কার্যকর ও নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা রাখছে। আমি আশা করি আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে গ্লোবাল কমপ্যাক্টের চলমান নেগোসিয়েশনে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও সুপারিশমালা উঠে আসবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাপী সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের অব্যাহত প্রচেষ্টায় আমরা অবশ্যই সফল হব।

    অনুষ্ঠানে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সৈয়দ সাইফুল হক বলেন, বিশ্বে বর্তমানে ২৬ কোটি অভিবাসী রয়েছে। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অভিবাসী বৃদ্ধির হার বিশ্ব জন্মহারের চেয়ে অনেক বেশি। গত দশ বছরে ১০ কোটি মানুষ অভিবাসী হয়েছে। তার মধ্যে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি, প্রায় আট কোটি। অধিকাংশ অভিবাসী গরিব দেশ থেকে গরিব দেশে গেছেন।জনকণ্ঠ