দেশে ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধসহ ৫ দফা দাবি অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি

    0
    312

    “রাজধানীর সমাবেশে প্রাণাধিক প্রিয় মহানবীর (দঃ) প্রতি অবমাননার প্রতিবাদে রাজধানীতে আহলে সুন্নাতের জাতীয় নেতৃবৃন্দের হুঁশিয়ারি”

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজধানীতে আহলে সুন্নাতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। সমাবেশে ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার হুসিয়ারির মধ্য দিয়ে মহানবীর প্রতি  কাল্পনিক ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোবারক নাম ব্যাবহার করে তার প্রতি অবমাননার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে বৃহত্তর অরাজনৈতিক সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত। সমাবেশ থেকে ফ্রান্স সরকার নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে সুন্নি মুসলিম জনতাকে নিয়ে ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার হুসিয়ারিও দিয়েছেন সংগঠনটির জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

    শনিবার (৭ নভেম্বর’২০২০) দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সংগঠনটির চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী এ হুসিয়ারি দেন। তিনি বলেন, প্রাণাধিক প্রিয় নবীর অপমান কোন মুসলমান সইবে না। তাই আজ সুন্নি জনতা রাজপথে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ও সেদেশের পত্রিকা শার্লি হ্যাবদোকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে বাংলাদেশকে ফ্রান্সের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে সুন্নি জনতাকে নিয়ে আমরা ফ্রান্সের দূতাবাস বন্ধ করে দেবো। তিনি সংসদে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ, ফরাসি পণ্য বর্জন, ধর্ম অবমাননার দায়ে ফ্রান্স সরকারে বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব উপস্থাপনসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

    সংগঠনটির নির্বাহী মহাসচিব উপাধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে এসময় বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাতের নির্বাহী চেয়ারম্যান আল্লামা আব্দুল বারী জেহাদী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব আল্লামা এম এ মতিন, স উ ম আব্দুস সামাদ, আল্লামা আবু সুফিয়ান খাঁন আবেদী আলকাদেরী, অধ্যক্ষ হাফেজ কাজী মুহাম্মদ আব্দুল আলিম রেজভী, ড. হাফেজ হাফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ ড. এ কে এম. মাহবুবুর রহমান, সৈয়দ মুজাফফর আহমাদ, অধ্যাপক রিদওয়ান আশরাফী, মাও: কাজী মোবারক হোসেন ফরাজী, অধ্যক্ষ মাও. ইসমাঈল নোমানী, আব্দুল মালেক বুলবুল, আব্দুল হাকিম প্রমুখ জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

    আহলে সুন্নাতের চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে বলেন, যদি সরকার আমাদের দাবি কর্ণপাত না করে তাহলে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবো। মুসলমানদের ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ঘটলে এর দায় দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

    মহানবীকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজেদের অস্থিত্ব দাবি করে আহলে সুন্নাত নির্বাহী চেয়ারম্যান আল্লামা আব্দুল বারী জেহাদী বলেন, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল জগতের জন্য রহমত। রাসূলের আদর্শে মানবতার মুক্তি নিহিত।

    সেই প্রিয় হাবিবকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে ফ্রান্স সরকার মুসলিম উম্মাহর রক্তক্ষরণ করেছে। এ জন্য ফ্রান্স সরকারকেও ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে হবে। অতীতে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শানে অবমাননা করে কেউ ঠিকে থাকতে পারেনি। তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে।

    সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, আহলে সুন্নাত নেতা আলহাজ্জ মোহাম্মদ শাহ আলম, এড. দেলওয়ার হোসেন পাটোয়ারী আশরাফী, পীরে তরিকত ওয়ালি উল্লাহ আশেকী, মাও: শাহ জালাল উদ্দিন আখঞ্জী, অধ্যক্ষ শাহ জালাল আলকাদেরী, মাও: মহিউদ্দীন হামেদী, গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, মুফতি এহসানুল হক মুজাদ্দেদী, মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম, এড. হেলাল উদ্দিন, মুহাম্মদ নিজামুল করিম সুজন, লোকমান হোসেন মিয়াজী, মাওলানা ফখরুজ্জামান খান প্রমূখ।

    সমাবেশ শেষে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আহলে সুন্নাতের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফীর নেতৃত্বে বিশাল গণমিছিল বের করা হয়। কড়া পুলিশি পাহারায় গণ মিছিলটি বায়তুল মোকাররম উত্তরগেট থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টনমোড়, দৈনিক বাংলামোড়ে গিয়ে মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি কামনা করে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।

    এসময় আলহাজ্জ মোহাম্মদ ইকবাল, অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন, মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা,মাহমুদ মোস্তফা জিলানী, ছোলাইমান খাঁন রাব্বানী, অধ্যাপক নুরুল আলম, এড. ইসলাম উদ্দিন দুলাল, মাও: ইকরামুল হক, আবু নাছের মোহাম্মদ মুসা, সৈয়দ হাসান আল আযহারী, পীরে তরিকত মোখতার রেজা মাসুমী, আব্দুল মোস্তফা রাহিম আল আযহারী, মাওলানা শহীদুল্লাহ জেহাদী, অধ্যাপক রিদওয়ান আশরাফী, অধ্যক্ষ ডা.এস.এম.সারওয়ার, আহমাদ রেজা ফারুকী, নুরুল্লাহ রায়হান খান, মাঈনুল ইসলাম, নাসির উদ্দীন মাহমুদ, মাও: সোহাইল আনছারী, মুহাম্মদ দস্তগীর আলম, আকতার উদ্দীন (ভাইস চেয়ারম্যান), প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

    আহলে সুন্নাতের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে তাদের নেতাকর্মীরা ফ্রান্স সরকার বিরোধী প্লে-কার্ড, ব্যানার নিয়ে বায়তুল মোকাররম উত্তরগেটে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার মধ্যে বায়তুল মোকাররম উত্তরগেট নেতাকর্মীতে পূর্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে লোকসমাগম পল্টন মোড় ছাড়িয়ে যায়। এসময় পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত একপাশে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।