দিল্লি পুলিশকে তিরস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট

    0
    294

    ভারতের উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য দিল্লি পুলিশকে তিরস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ইস্যুতে দিল্লির শাহীনবাগে যে ধর্না-অবস্থান চলছে তা নিয়ে এক আবেদনের শুনানিতে বুধবার উত্তর-পূর্ব দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত। দিল্লি পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না এবং তাদের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে বলে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করেছে।

    সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কেএম জোসেফ বলেন, ‘বিচারব্যবস্থার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বলতে বাধ্য হচ্ছি, পুলিশের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে। স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না তারা। এটাই সমস্যার মূল কারণ। আইন মেনে পদক্ষেপ না করে, কেন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে তাদের ?’

    বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘কেউ উস্কানিমূলক মন্তব্য করলে, সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে পুলিশকে। শুধুমাত্র দিল্লিই নয়, সব রাজ্যেই এই নিয়ম মানা উচিত। পুলিশকে আইন মেনেই কাজ করা উচিত।’

    মুসলিমদের একটি মাজারের দিকে পেট্রোল বোমা ছুড়ছেন একজন সিএএ সমর্থক

    দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ‘সিএএ’ বিরোধী আন্দোলন নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে আসছেন বিজেপি’র কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা। সম্প্রতি দিল্লির জাফরাবাদে গিয়ে পুলিশের সামনেই হুমকি সম্বলিত আল্টিমেটাম দেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ধর্না-অবস্থান না হটালে তাঁরা রাস্তায় নামবেন, তখন কেউ রুখতে পারবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। এরপর থেকেই উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।

    ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

    আজ আদালতে সরকারপক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, পুলিশকে কোন পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয় তা কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। সেজন্য আদালত এরকম ‘বিরূপ মন্তব্য’ করলে, পুলিশের মনোবল নষ্ট  হবে। কিন্তু বিচারপতি জোসেফ পাল্টা জানিয়ে দেন, তিনি কোনও বিরূপ মন্তব্য করেননি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা পুলিশের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, সেটাই বলতে চেয়েছেন।

    এদিকে আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও ‘আম আদমি পার্টি’র প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন ‘দিল্লির লোকেরা সহিংসতা চায় না। এসব ‘আম আদমি’ করেনি। এটি কিছু অসামাজিক, রাজনৈতিক এবং বহিরাগত উপাদান দ্বারা হয়েছে। দিল্লির হিন্দু ও মুসলিমরা কখনও লড়াই করতে চায় না।’

    অজিত ডোভাল

    অন্যদিকে, আজ গোলযোগপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বলেন, ‘এলাকার প্রত্যেকে শান্তির কথা বলেছেন। কিছু অপরাধী সহিংসতা ছড়ায়। লোকেরা তাদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে। পুলিশ এখানে তাদের কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এখানে এসেছি। এখানে শান্তি থাকবে।’

    তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশকে যে ভালোবাসে তাদের কাছে আমার বার্তা যে, তারা যেন সমাজ ও প্রতিবেশীদেরও ভালোবাসে। সবাইকে শান্তিতে থাকতে হবে।’ একে অপরের সমস্যা সমাধান করা উচিত বলেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মন্তব্য করেন।পার্সটুডে