দিল্লিতে নিহত ১৩,ধর্মীয় পরিচয়ে সাংবাদিক নির্যাতন,মসজিদে আগুন

    0
    259

    ভারতীয় ওয়েবসাইট দি ওয়্যারের উদ্ধৃতি দিয়ে আল জাজিরা জানায়,মঙ্গলবার দাঙ্গাবাজেরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে দিল্লির অশোক নগরের ওই মসজিদটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, দাঙ্গাবাজেরা ওই এলাকার দোকানপাটেও অগ্নিসংযোগ করেছে।পুলিশ ওই এলাকায় বড় সংখ্যায় জড়ো হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

    এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধসহ আহত কমপক্ষে আরও অন্তত চার সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিকের কাছে ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়ে তাদের হেনস্থা করেছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মুসলিমদের মৃত দেহ ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং শ্মশানে নিয়ে জালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ও পাওয়া গেছে একটি অসমর্থিত সূত্র থেকে।

    দিল্লিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের মধ্যেই রক্ত ঝরল দিল্লিতে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতায় বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ।মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

    সোমবারের পর মঙ্গলবারও দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মৌজপুরে এদিন এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চার সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিকের কাছে ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়ে তাদের হেনস্থা করেছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা।

    মঙ্গলবার রাতে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, কারওয়াল নগরে ১৪৪ ধারা জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছিল। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, যথেষ্ট সিআরপি নামানো হয়েছে। এখনই সেনা ডাকার দরকার নেই।

    পরিস্থিতি সামলাতে গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগামী এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। দিল্লি-সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও ১৪৪ ধারা জারি হয়। নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয় গাজিয়াবাদ-দিল্লির সীমানায় যাতায়াতের উপর। টানা বন্ধ দু’দিন উত্তর-পূর্ব দিল্লির পাঁচটি মেট্রো স্টেশন। সংঘর্ষের ছবি না-দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয় বেসরকারি চ্যানেলগুলোকে।

    কিন্তু অশান্তি থেমে থাকেনি। সংঘর্ষ পাথর-যুদ্ধ, গুলি, ভিড় জমিয়ে মারধর, অসংখ্য বাড়ি-দোকানে আগুন লাগানো, লুঠতরাজ— কিছুই বাকি থাকেনি। উত্তর-পূর্ব দিল্লির আকাশে সারা দিনই কালো ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে উঠেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল কর্মীরাই আক্রান্ত হয়েছেন।

    দিল্লির প্রবীণরা বলছেন, ১৯৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গার পরে শহরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। বছর পাঁচেক আগেও পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়েছিল। কিন্তু কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।

    সিএএ-বিরোধীদের সম্পর্কে রোববার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। প্রশ্ন উঠেছে, তিন দিন কাটতে চললেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন ? পূর্ব দিল্লির বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীরই কপিলের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন।সূত্র আনন্দ বাজার,আল জাজিরা