দাফনের ১১ দিন পর জিন্দাঃরং নাম্বার প্রেমিকের সাথে ভারত !

    0
    637

    নিউজ ডেস্কঃ নিখোঁজের পর পলিথিনে মোড়ানো  এক নারীর লাশ  উদ্ধার করে দাফনের ১১ দিন পর যশোর চৌগাছা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের গৃহবধূ এক সন্তানের জননী পরকীয়া প্রেমিকের সাথে চিকিৎসার নামে ভারতের অভিসার থেকে ফেরত সাথী খাতুনকে অবশেষে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    পুলিশের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যশোর সদর উপজেলার জলকর গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়ি থেকে রোববার দুপুরে কোতয়ালী থানা পুলিশ তাকে জীবিত উদ্ধার করেছে। সাথী খাতুন চৌগাছার নায়ড়া গ্রামের আমজেদ আলীর মেয়ে এবং একই উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার স্ত্রী। সাথী খাতুন দাবি করছে আজিজ লস্কর তার ধর্ম পিতা।

    সাথীর পিতা আমজদ হোসেন জানান, গত ১৪ জুলাই বাইরে কাজে যাচ্ছি, বলে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয় তার মেয়ে। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান ছিল না। নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা আমজাদ আলী বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। এরপর গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোরে সরকারি সিটি কলেজ এলাকা থেকে পলিথিন মোড়ানো অজ্ঞাত পরিচয় এক তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই লাশ উদ্ধারের পরদিন ৩০ আগস্ট যশোর কোতোয়ালি থানায় গিয়ে আমজাদ আলী লাশের ছবি দেখে তার মেয়ে সাথী খাতুনের বলে সনাক্ত করেন।

    সাথীর ভাই বিপ্লব হোসেন বলেন, সেসময় তার বাবা লাশ দেখে হতবিহ্বল হয়ে তাৎক্ষণিক লাশটি তার মেয়ের বলে সনাক্ত করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ নিয়ে  অধকতর তদন্ত হলে তিনি জানতে পারেন তার ভুল হয়েছে।

    মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুজ্জামান বলেন,”মেয়েটির সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময়ে একাধিক ছেলের সম্পর্ক ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত করতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জানায় গত ১৬ মার্চ সাথী খাতুন ভারতে গিয়েছিল চিকিৎসার জন্য। ৩১ দিন পর চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরে। বিষয়টি সন্দেহ হলে সাথীর পাসপোর্ট বই যাচাই করি। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হই সাথী ১৬-২৪ মার্চ  প্রায় ৯ দিন ভারতে ছিল। কিন্তু পরিবারের লোকজন বলছে ৩১ দিন।

    তদন্তে দেখা যায় ভারতে থাকাকালীন সাথী ভারতের একজনের মোবাইল নম্বর থেকে কথা বলেছিল। সেই নম্বর জোগাড় করি। কথা বলে জানতে পারি, সাথী ভারতে প্রবেশ করার এক ঘন্টা আগে মালেশিয়া প্রবাসী চাঁদপাড়া প্রামের বাসিন্দা মান্নু ওপারে (ভারতে) হাজির হয়। ভারত থেকে ২৪ মার্চ সাথী ও মান্নু দেশে আসে।’

    ২৪ মার্চ থেকে এক মাসের বেশি সময় সাথীকে নিয়ে মান্নু ধর্ম পিতা যশোর সদর উপজেলার জলকর গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়িতে অবস্থান করেন।’ এপ্রিল মাসের শেষের দিকে মান্নু মালয়েশিয়া ফিরে যান। আর সাথী বাড়িতে। বাড়ির সবাই জানে সাথী চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছে। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই সাথী স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যান। এরপর সদর উপজেলার জলকর গ্রামে পূর্ব পরিচিত আজিজ লস্করের বাড়িতে আশ্রয় নেন। রোববার সকালে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

    এস আই আমিরুজ্জামান আরো বলেন, “মান্নুর সাথে আজিজ লস্করের পরিবারের পরিচয় ২০১২ সাল থেকে। মালেশিয়া থেকে রং নাম্বারে আজিজ লস্করের পরিবারের সঙ্গে মান্নুর পরিচয় হয়। আর আজিজ দম্পতির কোনো সন্তান না থাকায় মান্নু তাদের ধর্ম পিতা-মাতা বলেন। সেই থেকে তাদের সম্পর্ক।”

    এদিকে সাথী জীবিত ফিরে আসায় গলাকাটা ও পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার যে লাশ দাফন করা হয়েছে সেটি কার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আমিরুজ্জামান বলেন, উদ্ধার লাশটি সাথীর ধরে নিয়েছিলাম কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে আসল রহস্য উন্মোচন হওয়ায় এবার ওই লাশটি কার, সেই রহস্য উদঘাটনে কাজ করবো বলে জানান ওই কর্মকর্তা।