তাহিরপুরে মুঘল আমলের পন্যের মূল্য তালিকায় টেন্ডার!

    0
    206

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৭জানুয়ারী,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা রোগীর খাবার সরবরাহের টেন্ডারের তালিকায় পণ্যের বাজার দরের সাথে আকাশ-পাতাল ফাঁড়াক। সেই প্রাচীন মুঘল আমলের শেষ সুবেদার শায়েস্তা খাঁর সময়ে পণ্যের মুল্য তালিকা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খাবার সরবরাহের টেন্ডার সর্ব নিন্ম দর দাতা হিসাবে হাতিয়ে নিয়েছেন ঠিকাদার দাদা এন্টারপ্রাইজ। এর পেছনে আসলে রহস্য টা কি ? এরপরও বড় কথা আকাশ-পাতাল ফাঁড়াক থাকার পর কতৃপক্ষই বা কি ভাবে এমন অসম্ভব কে সম্ভব করে ঐ ঠিকাদারকেই ঠিকাদেরর দায়িত্ব দিলেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। এ খবর প্রকাশ হবার পর পর স্থানীয় সচেতন জনগণসহ সবাই জানতে ও দেখতে অধির আগ্রহ নিয়ে অপক্ষো করছেন কে এই বাংলার নতুন জনদরদী নতুন শায়েস্থা খাঁ ?

    এব্যাপারে দরপত্রে অংশ গ্রহনকারীদের মধ্যে সানি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান খেলু মিয়া গত ১৫জানুয়ারী তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক সূত্রে জানাযায়,হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খাবার সরবহরাহের ঠিকাদার হিসাবে নিয়োগ পেতে দরপত্র জমা দেয় ৯টি প্রতিষ্টান। এর মধ্যে দরপত্র যাচাই করে ঠিকাদার হিসাবে দায়িত্ব পায় পাশ্বভর্তি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার দাদা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর নবী হোসেন। ওই প্রতিষ্টানের দরপত্রের খাবার তালিকার ২৮টি পন্যের দামের মধ্যে একটিরও বর্তমান বাজার দরের সাথে মিল নেই। মিল আছে মুঘল আমলের সাথে। পন্যের তালিকা ও মূল্য দরপত্রে যা উল্লেখ্য করা হয়েছে-তরল দুধের বাজার দর প্রতি লিটার ৮০টাকা হলেও দেওয়া হয়েছে ৫টাকা। মার্কস গুড়ো দুধ প্রতি কেজির বাজার দর ৬শত টাকা হলেও-গাভীর দুধের লিটার ৫টাকা,কিচমিচের কেজি ৫টাকা,মার্কস গুড়ো দুধ কেজি ৫টাকা,লাচ্ছি সেমাই (বনফুল) ৫টাকা,কই,মাগুড়,শিং ও টেংরা কেজি ১৪০টাকা। ১৫শত টাকা কেজি এলাচির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ৮৫টাকা। এমনি ভাবে প্রতি কেজি কৈ,শিং,মাগুরের স্থানীয় বাজার দর কেজি প্রতি ৫শত টাকা হলেও দরপত্রে লিখা হয়েছে ১৫০টাকা। দেশী মুরগীর (পা,মাথা,গিলা,কলিজা ও নাড়ীভুড়ি ছাড়া) প্রতি কেজি মাংসের বাজার দর কমপক্ষে ৬শত টাকা হলেও ২৬০টাকা। দরপত্রে উল্লেখ করা রাধূনীর হলুদ,শুকনা মরিচ,ধনিয়াসহ বিভিন্ন মসলার দামও দেওয়া হয়েছে বাজার দরের চেয়ে অর্ধেক। খাদ্য তালিকায় উল্লেখ করা অধিকাংশ পণ্যই রোগীদের দেওয়া হয় না। রোগীরা বেশীর ভাগই বাইরের খাবার কিনে খান।

    এভাবেই যুগ যুগ ধরেই খাবারের এ রকম সর্ব নিন্ম মূল্য তালিকা দিয়েই ঠিকাদারী পেয়ে খাবার সরবহরাহ করে আসছেন ঠিকাদাররা। সানী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান খেলু মিয়া,সহ স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোবের সাথে জানান,মুঘল আমলের শেষ সুবেদার শায়েস্থা খাঁর আমলে টাকায় আট মন চাল পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এক কেজি চালের সর্ব নিন্ম দাম ৪২টাকা। তাহলে ঐ ঠিকাদার কি ভাবে এমন অবাস্তব মূল্য দিয়ে রোগীদের খাওয়াবে।

    এভাবে খাওয়াতে ঐঠিকাদারে বাবার জমি বেচেঁও খাওয়াতে পারবে না। আর এত কম মূল্য থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষই বা কেন থাকেই নির্বাচন করলেন কোন খাতিরে। আসল ঘটনা কি। এ বিষয়ে হাসপাতালে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পাওয়া দাদা এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার নবী হোসেন এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলে খোঁজ পাওয়া যায় নি।

    জানা যায়,তিনি একটি মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। বাজার দরের সাথে সম্পুর্ন অসামঞ্জস্য প্রতিটি পন্যের দাম স্বীকার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন,দরপত্র রেডি করে নিয়ম অনুযায়ী আমরা সুনামগঞ্জ প্রেরন করি। তারপর এগুলো সিভিল সার্জন অনুমোদন করেন। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্নেন্দু দেব জানান,আমি এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

    পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা সিভিল সার্জন আশুতোশ দাস জানান,টেন্ডরে সর্ব নি¤œ দরদাতা হিসাবে তাদের দেওয়া হয়েছে। এই দরে খাবার সরবরাহ করতে না পারলে তাদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর না হয় তারা সেলেন্ডার করবে।