তাহিরপুরে ধান সংগ্রহে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন,উত্তেজনা

    0
    225

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭মে,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় সরকারী ভাবে খাদ্য গোদামে ধান সংগ্রহে লটারিতে কৃষক নির্বাচন করছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। এতে করে এলাকা ৩৩হাজার ৩৫০কার্ডধারী কৃষক রয়েছে। ঐ সব কৃষকের জন্য মাত্র ৫শ মেট্রিক টন ধান বরাদ্ধ দিয়েছে সরকার। কিন্তু সর্ব মহলে ধান সংগ্রহের পরিমান বাড়ানোর দাবী থাকলে সরকার এবার বৈরী আচরন করায় কৃষকরা লাভের পরিবর্তিতে ক্ষতির শিকার হবে। ফলে সবার মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
    জানা যায়,কৃষকের তুলনায় বরাদ্ধের পরিমান অতি নগন্য থাকার কারণে উপজেলা বোর ধান সংগ্রহ কমিটি উপজেলার কৃষি জমির আনুপাতিক হারে ৭টি ইউনিয়নে তা বন্টন করা হয়েছে। তাহিরপুর সদর ইউনিয়নে ৩৩শ ৪০জন কৃষকের জন্য ১শ মেট্রিক টন,বালিজুড়ি ইউনিয়নে ২৯শ ৫জন কৃষকের জন্য ৫০মেট্রিক টন,বাদাঘাট ইউনিয়নে ৭হাজার কৃষকের জন্য ৫৫মেট্রিক টন,শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে ৭হাজার ২৫জন কৃষকের জন্য ৮০মেট্রিক টন,শ্রীপুর দক্ষিন ইউনিয়নে ৩হাজার ৮৫৫ কৃষকের জন্য ৭৫মেট্রিক টন,বড়দল উত্তর ইউনিয়নে ৫হাজার ৯শ ১জন কৃষকের জন্য ৫৫মেট্রিক টন,বড়দল দক্ষিন ইউনিয়নে ৩হাজার ২শ ৪জন কৃষকের জন্য ৮০মেট্রিক টন বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
    আরো জানা যায়,উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকরা পরিবহন খরচ বেশী হওয়ার কারনে তারা ধান নিয়ে খাদ্য গোদামে তেমন একটা আসে না। ঐসমস্ত কৃষকদের অনাগ্রহের কারণে এক ধরনের ফরিয়া ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিকট হতে অনুমোদিত কৃষকের সংগ্রহ করে খাদ্য গোদামে ফরিয়া ব্যবসায়ীরা ধান দিয়ে লাভবান হয়ে থাকে। অন্য দিকে সরকার দলীয় লোকজন প্রভাব দেখিয়ে প্রতি বছর সুযোগ বুজে খাদ্য গোদোমে ধান দিয়ে থাকে। তাই প্রকৃত কৃষককের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা জন্য দাবী জানান কৃষকসহ সর্ব স্থরের জনসাধারন।
    খেলু মিয়া,সাদেক আলী,রফিকুল ইসলাম,সেলিম আখঞ্জি বোরহান উদ্দিন,ইউনূছ আলীসহ তাহিরপুর উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকগন বলেন,সরকার প্রতি মন ধানের মূল্য ১হাজার ৪০টাকায় নির্ধারন করায় ভাবছিলাম ধান খাদ্য গোদামে দিতে পারবো। এখন শুনতাছি লটরীর মাধ্যমে যার নাম ভাসবে সেই গোদামে ধান দিতে পারবে।

    এবার বরাদ্ধের পরিমান কম,কৃষকদের চাপ এড়ানোর লক্ষ্যে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হবে এইটা কোন কতঅ হইল। কারন গত দু বছর ফসল হারিয়েছি এবার বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে আর এবার সরকারী ধান সংগ্রহের পরিমান কম এটা মানা যায় না ভার বার বাড়ানো দাবী জানিয়েছি সরকারের কাছে কোন লাভ হয় নাই। কৃষি ভূর্তূূকি পাওয়ার জন্য উপজেলার অনেকেই কৃষকের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। আর এখন যদি প্রকৃত কৃষকের নাম যাচাই না করে লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় করলে কৃষক তার ন্যায্য অধিকার থেকে বি ত হবে।

    তাহিরপুর উপজেলা বোর ধান ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল হক বলেন,সরকারী বরাদ্ধের পরিমাণ কম থাকায় লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে বোর ধান সংগ্রহ করার জন্য গত ২২মে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন,প্রতি কৃষকের জন্য এক মেট্রিক টন ধান নির্ধারন করে দেয়া হয়েছে। এর বেশী কিংবা কম দেয়া যাবে না।
    তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুছ ছালাম বলেন,উপজেলার কৃষকের তুলনায় ধান সংগ্রহের পরিমান একেবারেই কম।
    তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্ণেন্দু দেব বলেন,যে ভাবে ঝামেলা এড়ানো যায় সে ভাবেই বোর ধান সংগ্রহ করা হবে। বোর ধান সংগ্রহে আমরা প্রাথমিক ভাবে কৃষকদের লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছি। তবে আমরা জেলার অন্যন্য উপজেলা গুলো কিভাবে বোর ধান সংগ্রহ করে তা অনুশরন করব।

    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,এবার ধান সংগ্রহের পরিমান বাড়ানোর খুবেই যুক্তিযুক্ত দাবী ছিল। কেননা পর পর দু-বছর অকাল বন্যায় হাওরে কৃষককের কষ্টের ফলানো বোরো ধান সম্পূর্ন পানিতে তলিয়ে যায়। এবার বোরোর ধানের ফলন ভাল হয়েছিল তাই গত দু বছরের ক্ষতি কিছুটা পোষাতে সরকার এই বিষযটি বিবেচনা না করলে কৃষকগন দু বছরের ক্ষতি পোষাতে পারবে না।