ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে ২২ মে থেকে যাত্রীবাহী বাস চলবে

    0
    436

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৯মে,বেনাপোল থেকে এম ওসমান : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ২২ মে থেকে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস চলাচল করবে। ১৫ মে এ রুটে বাস চলাচলের কথা থাকলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় আরো এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে এ রুটে বাস চলাচল। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের সহযোগিতায় বেসরকারি গ্রীনলাইন পরিবহন ঢাকা থেকে এ সার্ভিস চালু করছে।

    ঢাকা থেকে মাওয়ার শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি ঘাট দিয়ে বাসটি খুলনায় আসবে। সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে আসবে বেনাপোলে। পাসপোর্টের কার্যক্রম ও কাস্টমস তল্লাশী শেষে ছেড়ে যাবে কলকাতার উদ্দেশ্যে। গ্রীনলাইন পরিবহন ও বিআরটিসি’র যৌথ উদ্যোগে সপ্তাহে একদিন পরপর এ বাস ঢাকা-খুলনা-কলকাতার মধ্যে সরাসরি চলাচল করবে। ২২ মে সকাল ৭টার দিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রীনলাইন পরিবহনের অত্যাধুনিক বাসটি উদ্বোধন করবেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। এ বাসে খুলনার জন্য মাত্র ৪টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যশোর ও বেনাপোলে কোনো আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

    গ্রীনলাইন পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বলেন, মাওয়া হয়ে সড়কপথে দূরত্ব একটু বেশি হলেও সময় কম লাগবে। বাসটি ঢাকা থেকে মাওয়ায় আসবে মাত্র আড়াই ঘণ্টায়। আর ঢাকা থেকে ৮ ঘণ্টা লাগবে খুলনা হয়ে বেনাপোল যেতে। আরও দুই ঘণ্টায় সরাসরি কলকাতা। ঢাকা থেকে যে বাসে রওয়ানা হবেন যাত্রী সেই একই বাসে কলকাতা নামবেন। যাত্রাপথে কোনো পরিবর্তন করতে হবে না।

    তিনি জানান, প্রতি সোম, বুধ ও শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় কমলাপুর বিআরটিসি বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাবে বাসটি। বেলা দেড়টায় বাসটি খুলনায় আসার পর যাত্রীদের খাবার ও বিশ্রামের জন্য ২০-২৫ মিনিট সময় দেওয়া হবে। নগরীর রয়্যাল মোড় থেকে বেলা ২টায় বাসটি কলকাতার উদ্দেশে রওনা হবে। বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল ৪টায়। দু‘পারের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ শেষ করে রাত ৮টার দিকে কলকাতার সল্টলেক করুণাময়ী আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালে গিয়ে পৌঁছবে। আর কলকাতার সল্টলেক করুণাময়ী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতি মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়বে। রাত ৮টার দিকে বাসটি ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।

    গ্রীনলাইন পরিবহনের বেনাপোল অফিসের ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ রায় জানান, কলকাতাগামী পরিবহনটি ৪০ সিটের। ঢাকায় ৩৬টি এবং খুলনা থেকে মাত্র ৪টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া যশোর ও বেনাপোলে কোনো আসন নেই। খুলনা থেকে এসি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে যাত্রী প্রতি ১ হাজার টাকা এবং ঢাকা-কলকাতা রুটের জন্য ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

    এদিকে কলকাতা-খুলনার মধ্যে সরাসরি অপর একটি বাস চালুর কথা থাকলেও সেটা কবে থেকে চলবে এ ব্যাপারে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট কলকাতা-খুলনার মধ্যে পরীক্ষামূলক যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস উদ্বোধন করা হয়েছিল। এর আগে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেটা বন্ধ রেখে গত ৮ এপ্রিল দুপুরে কলকাতার সল্টলেক আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিল্লি থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কলকাতা-খুলনা-ঢাকা রুটে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়।

    ১৯৯৯ সালের ১৬ জুন কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে প্রথম সরাসরি যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছিল। এরপর ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল মৈত্রী ট্রেনের মাধ্যমে চালু করা হয় বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ। ২০১৫ সালের ৫ জুন কলকাতা-ঢাকা-আগরতলার মধ্যে চালু করা হয় যাত্রীবাহী বাস চলাচল। এরপর ৮ এপ্রিল খুলনা-কলকাতা রুটে আন্ত:দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন ও বাস সার্ভিস উদ্বোধন করা হয়।