জৈন্তিয়া মহিলা মাদ্রাসার অর্থ-আত্মসাৎ,নানা অনিয়মের অভিযোগ

    0
    338

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের জৈন্তাপুরে মহিলা মাদ্রাসার নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার এলাকাবাসী। মাদ্রাসার সাবেক পরিচালকের সেচ্ছাচারিতায় মাদ্রাসাটি এখন প্রায় ধংসের পথে পা বাড়ীয়েছে। মাদ্রাসায় সার্বিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের একাত্বতা প্রকাশ করেছে।
    সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জৈন্তিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিবর্গের সম্পৃক্ততা থাকলেও হঠাৎ করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের লক্ষ্যে তথাকতিত পরিচালক এডভোকেট আব্দুল আহাদ মাদ্রাসার ভাঙ্গীয়ে ব্যবসার ফন্দি শুরু করে। শিক্ষানুরাগী প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যাক্তিদের সরিয়ে নিজের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে কমিটির সদস্য করে শুরু হয় মাদ্রাসার নামে দেশে বিদেশে অর্থ বাণিজ্য। স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের মাদ্রাসার নামে দেওয়া জমি ও একজন প্রবাসীর টাকায় গড়ে উঠা ভবনে মাদ্রাসার পাঠদান চলে আব্দুল আহাদের একক কর্তৃত্ব। কমিটিতে স্থান নেই দাতা কিংবা প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যের। তার অনিয়ম-দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েক জন মাদ্রাসা সুপার রদবদল করেছেন তিনি।
    এদিকে শিক্ষার মান ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য মানবিক কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধংসের হাত থেকে সুরক্ষা করতে ফুসে উঠেন নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অভিবাবকগণ, শিক্ষানুরাগী সাধারণ মানুষজন। তারা মহিলা মাদ্রাসা নিয়ে এডভোকেট আব্দুল আহাদ’র লাগামহীন অর্থ বানিজ্য বাণিজ্য নানা অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ হতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহীর নিকট বিগত ৩সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তদন্তের দায়িত্ব দেন। বিগত ১৬সেপ্টম্বর মাধ্যমিক কর্মর্কতা মোঃ সোলাইমান হোসেন সরেজমিন তদন্ত করে এবং গত ৫অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদেনে উল্লেখ করা হয়, মূলত মাদ্রাসার হিসাবটি সুপার ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তা কখনো মানা হয়নি। উক্ত হিসাবে আগত সংগৃহিত তহবিলের আয় ব্যয় ও আগত নগদ টাকার হিসাব বিধি মোতাবেক পরিচালিত হয় নাই বা কোন রেকর্ড লিপিব্ধ করা হয়নি। সংগঠনের একক কর্তা ব্যাক্তি হিসাবে আব্দুল আহাদ আত্মীয়করণের মাধ্যমে সংগঠনের নাম ব্যবহার করে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিবেদনের আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু মাদ্রাসাটি তার নিজ নামীয় ভূমির উপর প্রতিষ্টিত কাজেই সংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত বা সংগঠনের মাদ্রাসা বলে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে দান-অনুদান ও নগদ টাকা গ্রহন করে এলাকাবাসীর সম্পৃক্ততা ছাড়াই নিবন্ধনহীন সংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় এলকাবাসী সহ সর্বসাধারণের মাঝে ক্ষোভের স ার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার’র সাথে এলাকাবাসী বৈঠক করলে তিনি মাদ্রাসার পাঠদানের কথা বিবেচনা করে বর্তমান সুপারকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে এবং সহকারী সুপার হিসেবে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব পালনের নির্দেশদেন। সম্প্রতি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গঠিত কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান।
    ২১ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আখলাকুল আম্বিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য হানিফ আহমদের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, আব্দুস শুকুর, হায়দার আলী, দেলোয়ার আহমদ, কবির আহমদ, আলহাজ্ব জহির উদ্দিন, আব্দুর রহমান, জৈন্তাপুর ইউপি সদস্য ইসমাইল আলী, আব্দুস শুকুর হরুহুনা, আলা উদ্দিন আলাই, পারভেজ আহমদ, জহিরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মুহিব আলী, আব্দুল মালিক পাখি, আলতাফুর রহমান, হোসনে আহমদ, আবুল হোসেন, সাব্বির আহমদ, আব্দুল করিম, ফিরুজ আলী, বতাই মিয়া, আব্দুল হান্নান, মাসুক আহমদ, মাসুদ আহমদ, আবুল হাসিম, তালহা আব্দুল্লাহ বাবু, তাফসিরুল ইসলাম পলাশ, মোস্তাক আহমদ, মনজুর আহমদ, আজিজুর রহমান, আব্দুল হান্নান প্রমুখ।