জৈন্তা সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় গরু,মাদকঃপ্রশাসন নিরব

    0
    443

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে কয়েক হাজার ভারতীয় গরুসহ পন্য সামগ্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। করিডোর বন্দ থাকায় রাজস্ব বি ত সরকার, কৃষকের ফসলী জমি ও রাস্তাঘাট নষ্ট। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিবর।
    সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকার বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে প্রতিদিন শত শত গরু, মহিষ এবং ভারতীয় মদ ও মাদক সামগ্রী, আমদানী নিষিদ্ধ নাছির বিড়ি ও নিম্ন মানের সিগারেট, গাড়ীর টায়ার পার্স, মটরসাইকেল নিরাপদে বাংলাদেশে প্রবেশ। সীমান্ত প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনী নিরব থাকায় চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হচ্ছে জৈন্তাপুর।

    সীমান্তের চোরাকারবারীদের আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান- গত বৎসরের নভেম্বর মাস হতে গরু আমদানীর বৈধ মাধ্যম করিডোর বন্ধ হয়। তাই এখন বৈধ মাধ্যমে গরু আমদানী হচ্ছে না। সীমান্ত পথে গরু আমদানী করতে সীমান্ত প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমঝোতার মাধ্যমে এবং জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারত হতে বাংলাদেশে গরু আমদানী কর হয়। এছাড়া গরু আমদানীতে বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষকে সম্মানী দিতে হয়।

    আগামী রমজান মাস, ইদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা কে সামনে রেখে জৈন্তাপুর সীমান্ত পথ দিয়ে প্রায় ১কেটি কিংবা তারও বেশি ভারতীয় গরু আমদানীর র্টাগেট রয়েছে। করিডোর থাকলে সরকার এখাত হতে রাজস্ব হারাতে না, ব্যবসায়ীরা সু-নিদিৃষ্ট পথ দিয়েই গরু আমদানী করতে পারত, প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলকে চাদা দিতে হত না। আরও জানান যেহেতু করিডোর বন্ধ, বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষ সালামি দিয়ে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মনোনিত লাইনম্যানদের মাধ্যমে লিয়াজো করে সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে ভারতীয় গরু আনা হচ্ছে।

    তবে গরু আমদানীর সুবাধে একটি চক্র ভারত হতে সীমান্ত পথ দিয়ে চা-পাতা, বিড়ি, সুপারী সহ অন্যান্য পন্য সামগ্রী বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। এগুলোর সাথে গরু ব্যবসায়ীরা জড়িত নহে। সরকার করিডোর চালু করলে রাজস্ব হারাতে হত না, আমাদের চাঁদা দিতে হত না, জনসাধারনের ফসলের কিংবা রাস্তা ঘাটের ক্ষতি সাধিত হত না।

    সীমান্ত এলাকারবাসীন্ধা আব্দুর রকিব, চাঁন মিয়া, মুবসিরআলী, আনোয়ার আলী, মকবুল হোসেন সুরুজ আলী, দোলোয়ার হোসেন সহ শতাধিক ব্যক্তি সাথে আলাপকালে তারা জানান- সীমান্ত পথে অবৈধ পন্থায় ভারত হতে গরু আনায় কৃষকদের সোনালী ফসল ব্যাপক হারে নষ্ট করা হচ্ছে। যার কারনে অনেক সময় তারা রাতে দিতে বাড়ী ঘরে নিরাপদ ভাবে বসাবাস করতে পারছে না। স্থানীয় ভাবে অনেকেই ইউপি চেয়ারম্যান সহ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিকে জানালেও তারা বিষয়টি কর্ণপাত করছে না।

    সীমান্তের বসবাসকারীরা নিরুপায় হয়ে চোরাকাবারীদের হাত হতে পরিত্রান পেতে বসতবাড়ীর আঙ্গীনায় এবং ফসল রক্ষার জন্য বাঁশের বেড়া দিচ্ছে এবং রাতে পাহারা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা আরও জানায় জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর, মোকামপুঞ্জি, আসামপাড়া, মিনাটিলা, কেন্দ্রি, কেন্দ্রি হাওর, ডিবিরহাওর, ফুলবাড়ী, খলারবন্দ, ঘিলাতৈল, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, মাঝের বিল, হর্নি, জালিয়াখলা, কালিঞ্জি, লালখাল বাগান, নিশ্চিন্তপুর, আফিফানগর চা-বাগান, উত্তর বাঘছড়া, দক্ষিণ বাঘছড়া, গঙ্গারজুম, তুমইরপুঞ্জি, ইয়াংরাজা দিয়ে ভারতীয় এসব গরু, মহিষ এবং চোরাকাবারী পন্য বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। কিন্তু সীমান্ত প্রশাসন নিবর ভূমিকা পালন করছে।

    এবিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন- আমাকে বিষয়টি অনেকেই অবগত করেছেন, যেহেতু আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এখন আইন শৃঙ্খলার বৈঠক হয়নি তাই আগামী আইন শৃঙ্খলা ও চেরাচালান বিরুদী বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করা হবে এবং উর্দ্বতন মহলকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত ভাবে বিষয়টি অবহিত করা হবে।

    এবিষয়ে জানতে ৪৮বিজিবির শ্রীপুর, মিলাটিলা, ডিবির হাওর ক্যাম্পে এবং ১৯বিজিবির জৈন্তাপুর ও লালাখাল ক্যাম্পে সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার গরু আমদানীর বিষয় অস্বীকার করে বলেন সীমান্তে আমাদের টহল জোরদার রয়েছে। আমরা সংবাদ পেলে অভিযান পরিচালন করছি।

    এবিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ মইনুল জাকির বলেন- সীমান্তের ১হাজার গজের মধ্যে আমাদের অভিযান পরিচালনার সুযোগ নেই।

    এছাড়া মাদক দমনে আমি যোগদানের পর থেকে অভিযান অব্যহত রেখেছি এবং মাদকসহ আসামী নিয়মিত আটক করছি। সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় গুলো বিজিবির। তারপর উর্দ্বতন মহলকে বিষয়টি অবহিত করব।