জৈন্তাপুরে ১লক্ষ ৬৫ হাজার ৬শ রুপিসহ মোবাইল ছিনতাই

    0
    221

    অতঃপর উদ্ধার, মুছলেখা দিয়ে ছিনতাইকারী মুক্ত

    রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধিঃ অবৈধ পথে ভারতীয় আর.এস বা রুপি এবং বাংলাদেশী টাকা সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে লেনদেন হয়ে থাকে। কিন্তু রুপি কিংবা টাকা ছিনতাইর ঘটনা ঘটেনি। গত ২ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় জৈন্তাপুর উপজেলা হরিপুর বাজারের চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের এক সদস্য জৈন্তাপুর সীমান্তের খলারবন্দ এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার কালে পূর্বে থেকে উৎ পেতে থাকা ৪ ছিনতাইকারী রুপি বহনকারীকে গতিরোধ করে ১লক্ষ ৬৫ হাজার ৬শত রুপি এবং একটি টাচ মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এদিকে ছিনতাইর কবলে পড়া ভারতীয় রুপি বহনকারী তাৎক্ষনিক ভাবে চোরাকারবারী সিন্ডিকেটকে জানায়। খবর পেয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের স্থানীয় এজেন্টদের বিষয়টি অবগত করে। সিন্ডিকেট দলের আদেশ পেয়ে দ্রুত স্থানীয় এজেন্টরা ৩০মিনিটে চিরুনী অভিযান পরিচালনা করে ২জনকে আটক করে জৈন্তাপুর বাজারে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় আটক ছিনতাইকারীরা এঘটনায় আরও দুইজন জড়িত থাকার কথা জানায় এবং ছিনতাই করা ভারতীয় রুপি মোবাইল সেট অপর দুইজনের নিকট রয়েছে বলে জানায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য মনসুর আহমদ আটককৃতদের নিয়ে রুপি ও মোবাইল উদ্ধার করতে যান।

    এক পর্যায় তারা রুপি ও মোবাইল উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আটক ছিনতাইকারীদের কোন প্রকার আইনি সহায়তা না নিয়ে ৩শত টাকার ষ্টাম্পে লিখিত মুচলেখা নিয়ে ছেড়ে দেন। আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলো উপজেলা ডিবির হাওর গ্রামের আব্দুল মালেক ওরফে আঙ্গুল কাটা মালেকের ছেলে হেলাল, একই গ্রামের ইসমাইল আলীর ছেলে রহিম, টিলাবাড়ী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে জিয়া এবং মাহুতহাটি গ্রাামের আতর মিয়ার ছেলে রাজু আহমেদ।

    টাকা ও মোবাইল উদ্ধারের পর এলাকাবাসী চোরাকারবারী দলের এজেন্ট ও সিন্ডিকেট দলের সদস্যরা ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় না দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, ভারতীয় রুপি পাচারের সময় ছিনতাই ঘটনায় সীমান্তের চোরাকারবারীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে রুপি ও মোবাইল উদ্ধার করে। যদি ভারতীয় রুপি না হত কিংবা সিন্ডিকেটের সদস্য না হয়ে সাধারন মানুষ ছিনতাই ঘটনার স্বীকার হত তাহলে কোন সময়ই তাদেরকে ধরা কিংবা টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হত না বলে জানান। চোরাকারবারীরা ছিনতাইকারী ধরে ও রুপি উদ্ধার করে পুলিশে না দিয়ে নিজেরাই মুচলেখা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া মানে ছিনতাইকারীদের কাজে উৎসাহ দেওয়া। তারা যে কোন সময় পর্যটক সহ যে কোন ব্যক্তি ছিনতাই করতে পারবে। ছিনতাই ঘটনার পর পর জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ বিষয়টি জানালে পুলিশের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি জানতে পারে। কিন্তু ইউপি সদস্য মনসুর আহমদ সহ অন্যান্যরা বিষয়টি স্বীকার করে টাকা উদ্ধারের কথা বলে তাদের নিয়ে চলে যায়। পরে কোথায় কি করা হয়েছে পুলিশ এখনো কিছুই জানেন না।

    অপরদিকে উপজেলা সচেতন মহল মনে করছে গত ৪ আগষ্ট সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তিায়া ডিগ্রী কলেজ গেইটের সম্মুখে শাপলা ফিলং ষ্টেশনের ২০লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়, ইতোমধ্যে ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার সহ ৫জন আসামী পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। ৪ জন রুপি ছিনতাইকারী শাপলা ফিলিং ষ্টেশনের টাকা ছিনতাইর ঘটনায় জড়িত কিনা তদন্ত করা প্রয়োজন। নতুবা জৈন্তাপুরে শান্তি প্রিয় মানুষ যে কোন মুহুর্ত্বে ছিনতাইর কবলে পড়তে পারে এবং টাকা পয়সা হারিয়ে নিঃস্ব হবে। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জোরালো দাবী রুপি ছিনতাইকারীদের কে আইনের আওতায় এনে ঘটনার জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
    বিয়য়টি জানতে নিজপাট ইউপি সদস্য মনসুর আহমদ ও হুমায়ুন কবির খাঁন বলেন- এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা তাদেরকে আটক করে রুপি ও মোবাইল উদ্ধার করি। এলাকাবাসী, বিভিন্ন ইউপি সদস্যগন ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে এবং মুচলেখা নিলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
    জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বণিক এরকম ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। কিন্তু ইউপি সদস্য তাদের নিকট হতে রুপি উদ্ধারের কথা জানিয়ে তাদেরকে নিয়ে চলে যায়। পরে কি করেছে তা থানা পুলিশকে অবহিত করেনি। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে প্রতিবেদককে জানান।