জৈন্তাপুরে স্বামী মৃত্যুর ৭বৎসর পর স্ত্রী কর্তৃক সন্তানের জন্ম

    0
    263

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর প্রায় ৭ বৎসর পর কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসাবে ভাতার টাকা নিতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন রাখে।

    সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ডিবির হাওর গ্রামের মৃত হায়দর আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ অলি আহমদ বিগত ২১ অক্টোবর ২০১২ ই্ংরেজী তারিখে মৃত্যু বরন করেন। মৃত্যুকালে ২য় স্ত্রীসহ ১০জন সন্তানাদি রেখে যায়।

    এদিকে মুক্তিযোদ্ধা অলি মিয়া মৃত্যুর ৭ বৎসর পর চলতি মাসের ৪ জুন ২য় স্ত্রী আলেয়া বেগম উরফে আলফা বেগম ১টি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর প্রায় ৭ বৎসর পর কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করলে মুক্তিযোদ্ধার ২ পরিবারসহ এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উপজেলা জুড়ে এ ঘটনা নিয়ে চলে আলোচনা ও সমালোচনা।

    সরেজমিনে অলি মিয়ার ছেলে নুরুল হক, আজিজুল হক, ময়জুল হক, আয়নুল হক সহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলাপকালে তারা জানান- আমাদের পিতা মারা যাওয়ার বেশ কয়েক দিন পর আমাদের সৎ মা আলেয়া বেগমকে আমমোক্তার নিয়োগ করি। তিনি পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদী ভোগ করে আসছি। প্রায় তিন বৎসর পূর্বে আমাদের সৎ মা ও আমাদের ১ সৎ বোন, ১ সৎ ভাই নিয়ে উপজেলার সারীঘাট ডৌডিক গ্রামে বসবাস করতে শুরু করে আমরাও যাওয়া আসা করি।

    এদিকে সৎ মা হঠাত করে লোক মাধ্যমে জানতে পারি সৎ মা উপজেলার নিজপাট গ্রামের চুনাহাটি গ্রামের মরহুম তোফাজ্জুল মিয়ার ২য় ছেলে রাজু আহমেদকে বিয়ে পূর্বক স্বামী হিসাবে গ্রহন করে। সৎ মায়ের কাছে বিয়ের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন এবং মামলা হামলাসহ নানা ধরনের কুৎসা রটাবেন বলে হুমকী ধমকী দেন। তাতে মান সম্মানের  ভয়ে  লোক লজ্জার ভয়ে আমরা কিছু বলিনি। গত ৪জুন মঙ্গলবার আমাদের সৎ মা ১ টি কন্যা জন্ম দিলে তোলপাড় দেখা দেয়, কিন্তু শিশু জন্ম দেওয়ার বিষয়টি সৎ মা অস্বীকার করে আমোদের জানান বাচ্ছাটি তিনি দত্তক নিয়েছেন। কোথায় হতে তিনি দত্তক নিয়েছেন তা বলতে অস্বীকার করেন। আমাদের দাবী সৎ মা আমাদের পিতার মুক্তিযোদ্ধের ভাতা সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গ্রহনের জন্য তিনি ২য় বিয়ে বা স্বামী গ্রহন এবং নিজ সন্তানের জন্মের বিষয়টি অস্বীকার করছেন। আপনারা তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।

    প্রতিবেদক সরেজমিনে ডৌডিক গ্রামে গিয়ে আলেয়া বেগম উরফে আলফা বেগমের সাথে বিয়ে সন্তান বিষয়টি জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করেন। প্রশ্নের একপর্যায়ে আলেয়া বেগম স্বীকার করেন প্রায় ২বৎসর পূর্বে তার পরিচিত নিজপাট চুনাহাটি গ্রামের ছেলে রাজু আহমদকে বিয়ে করেন এবং নবজাতকটি রাজু আহমদের সন্তান, তবে তাদের বিয়ের রেজিষ্টি (কাবিন) করেনি বর্তমানে সন্তানটিই তার কাবিন। তিনি প্রতিবেদকে বলেন যেহেতু আমি স্বামী গ্রহন করেছি তাই অচিরেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তিনি পূর্বের স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা গ্রহন করবেন না, তবে মুক্তিযোদ্ধার ২সন্তান যাতে ভাতা বঞ্চিত না হয় যে জন্য লিখিত আবেদন করব।
    এবিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ.কে.এম আজাদ ভূইয়া সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আলোয়া বেগম যদি সেচ্ছায় ভাতা কার্ডটি জমা দেন তাহলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। অথবা মুক্তিযোদ্ধার ছেলেরা উপযুক্ত প্রমানসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আবেদন করে তাহলে যাচাই বাছাই পূর্বক আলোয়া বেগমের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে।