জৈন্তাপুরে যুব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৩০লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ

    0
    283

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২এপ্রিল,রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধি: জৈন্তাপুর উপজেলার চলমান ন্যাশনাল সার্ভিস ৬ষ্ঠ পর্বের কর্মসূচির আওতায় জৈন্তাপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর ইকবাল চৌধুরী,রেজাউল ইসলাম রেজা জাফর ইকবাল চৌধুরীর বিশ্বস্থ অফিস সহকারী আসকারী এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও সার্ভিস প্রভাইডারদের প্রশিক্ষণ ভাতার প্রায় ৩০লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেন।
    সরেজমিনে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়,জাফর ইকবাল চৌধুরী অতি সুকৌশলে স্থানীয় এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন ভাবে দালালদের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

    এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর বিভিন্ন ভাবে নিয়োগে দূনীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেলেও বিষয়টি জেলা যুব অধিদপ্তর বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তে বিভিন্ন অনিয়ম তাদের দৃষ্টিপাত হলে তাদেরকে নিয়োগ প্রক্রিয়া হতে বাদ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

    কিন্তু জাফর ইকবাল চৌধুরী সুকৌশলে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করেন। বিশ্বস্থ সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে ডিসেম্বর-১৭ হতে ফেব্রুয়ারী ১৮ মাসে ৭২ দিনে চলমান প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়। সেই মোতাবেক প্রভাইডারদের ৭২দিনে ৭ হাজার ২শত টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। পূর্ব হতে পরিকল্পনা মোতাবেক এই কর্মকর্তা ব্লাঙ্ক শিটে রেভিনিউ ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। সোনালী ব্যাংক জৈন্তাপুর শাখা হতে জৈন্তাপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর ইকবাল চৌধুরী ৫৬লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ২৯মার্চ মহাপরিচালক বরাবরে প্রশিক্ষণার্থীদের অভিযোগ করে।

    অপরদিকে ৩শত টাকার নন-জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে অঙ্গীকার নামার সাথে ১০টাকা মূল্যের ৩টি রেভিনিউ ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায় প্রভাইডারদের সম্মানী ভাতা বাবত ৬২ লাখ ২৫ হাজার ৯শত টাকা বরাদ্ধ হয়। তার মধ্যে সরকারী কোষাগার হতে ৫৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।

    অপর দিকে ৮এপ্রিল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সিলেটের উপ-পরিচালক মোঃ আলা উদ্দিন স্বাক্ষরিত পত্রের স্বারক নং ৩৪.০১.৯১০০.০০০.৪২.২০১৩-১৮৯২ মূলে সোনালী ব্যাংক জৈন্তাপুর শাখার হিসাব নং ০২০০০৪৬৭ হতে যাবতীয় লেনদেন প্রশাসনিক কারন দেখিয়ে স্থগিত করা হয়।

    কিন্তু যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ৫৬লাখ টাকা হতে হাতে গোনা কয়েকজন প্রভাইডারদের মধ্যে ৭হাজার ২শত টাকা বিতরন দেখিয়ে অন্যান্য প্রভাইডারদের কে ৯শত টাকা হতে ১৪/১৫শত টাকা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২৫শত টাকা, ৩হাজার টাকা করে বিতরন করেন। প্রভাইডারগন কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রশিক্ষনের উপস্থিতি অনুযায়ী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রভাইডাররা একান্ত বাধ্য হয়েই প্রাপ্ত টাকা নিয়ে চলে যেতে হয়েছে।

    এখানে উল্লেখ্য যে, যদি প্রভাইডারদের প্রশিক্ষনের উপস্থিতি অনুযায়ী ভাতা বিতরন করা হয় তাহলে সরকারী কোষাগার হতে পূর্ণ প্রশিক্ষণ দেখিয়ে কোন ভাতা উত্তোলন করা হল ? বিষয়টি দেখার কেউ নেই ? এদিকে অনুসন্ধানে যানাযায় অবৈধ পন্থায় যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর ইকবাল চৌধুরী এবং সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম রেজা অফিস সহকারী আসকারি তাদের মনোনিত দালালদের মাধ্যমে ইসলামী ফাউন্ডেশন, এনজিও শিখন প্রকল্প, গোয়াইনঘাটে কর্মরত ন্যাশনাল সার্ভিসের প্রভাইডার হিসাবে ব্যাপক কর্মী নিয়োগ দিয়েছেন।

    যার মধ্যে শিখনের সহকারি শিক্ষিকা পলি বেগম, হেনা বেগম, মারজানা বেগম, ইসলামী ফাউন্ডেশনের আনোয়ার নজরুল ইসলাম সহ অনেকেই রয়েছেন।
    এবিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর আরডিআরএস এর প্রকল্প পরিচালক খলিলুর রহমান অর্থ লেনদেনের কথা অস্বীকার করে বলেন- আমার প্রকল্পের তিন জন সহকারি শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে তাদেরকে ন্যাশনাল সার্ভিসে কাজ করলে আমার দপ্তর ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি অন্য প্রশ্নের জবাবে বলেন কিছু না ঘটলে কিছুই রটে না। প্রশিক্ষনের ভাতা কম পাওয়ার বিষয় তিনি জেনেছেন।

    এবিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর ইকবালের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। সহকারী অফিসার রেজাউল ইসলাম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ না থাকায় এবিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে ফোন রেখে দেন।
    এবিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন- আমি এবিষয়ে কিছু জানি না। তবে মিডিয়ার কল্যানে এঘটনাটি অবহিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি।
    এবিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের সভাপতি মৌরীন করিম জানান- একটি অভিযোগ আমার নিকট এসেছে। অভিযোগ পেয়ে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।