জৈন্তাপুরে মোবাইল কোর্ট করে ৭টি ভারতীয় মহিষ আটক

    0
    265

    “নিলামে ৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা বিক্রয়, নিয়মিত অভিযান চলবে”

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার প্রতিটি সীমান্ত দিয়ে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সহায়তায় চোরাকারবারীরা বানের পানির মত ভারতীয় গরু-মহিষ, মাদক সামগ্রী ফেন্সিড্রিল, ইয়াবা, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, মটর সাইকেল, কসমেট্রিক্স সামগ্রী, ভারতীয় শাড়ী, টাকা গাড়ীর পাটর্স ও বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সংশ্লিষ্ট বাহিনী নিরব। নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ঘোষনা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের।
    চোরাচালনা রোধকল্পে ও সচেতন মহলের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ৩ জানুয়ারী গভীর রাত ২টায় গোপন সংবাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চোরাকারবারী দলের অন্যতম সদস্য হরিপুরের ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের ৭টি ভারতীয় মহিষ জৈন্তাপুর রাজবাড়ী ফুটবল মাঠ হতে আটক করেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার ভূমি ফারুক আহমদ এর নেতৃত্বে জৈন্তাপুর মডেল থানার এস.আই মাহবুব, এ.এস.আই আবু সুফিয়ান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে আটককৃত ৭টি মহিষ ১৯ বিজিবি জৈন্তাপুর ক্যাম্পের হাতে হস্তান্তর করেন। বিজিবি ৩ জানুয়ারী রবিবার দুপুরে ৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকায় নিলামের মাধ্যমে আটককৃত মহিষ গুলো বিক্রয় করে।
    মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য সচেতন মহল উপজেলা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান এবং অভিযান যেন লোক দেখানো না হয় সে জন্য উপজেলা জুড়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালানা করা আহবান জানান। সচেতন মহল আরও বলেন জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকায় অন্যান্য উপজেলার তুলনায় কাটা তারের বেড়া না থাকায় কোন প্রকার ঝামেলা বিহীন ভাবে চোরাকারবারীরা জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকাগুলো দিয়ে দিন রাত সমান তালে এক প্রকার প্রকাশ্যে ভারতীয় চোরাচালান বানিজ্য করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ হতে সুপারী ও সরকারের ভতুর্কির মাধ্যমে আমদানীকৃত হাজার হাজার বস্তা মটরশুটি তারা ভারতে পাচার করছে। বিনিময়ে গরু-মহিষ, মাদক সামগ্রী ফেন্সিড্রিল, ইয়াবা, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, মটর সাইকেল, কসমেট্রিক্স সামগ্রী, ভারতীয় শাড়ী, টাকা গাড়ীর পাটর্স ও বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট সামগ্রী নিয়ে আসছে।

    ভারতীয় মদ মাদক সামগ্রী আবাধে আসার কারনে উপজেলার যুব সমাজ দিন দিন মাদকের কবল গ্রাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তারা আরও জানান জৈন্তাপুর উপজেলা জুড়ে ৪৮ বিজিবির ৩টি বিওপি এবং ১৯ বিজিবি’র ২টি বিওপি রয়েছে এবং একটি পুলিশ ষ্ট্রেশন রয়েছে। আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর ৫ টি বিওপি ও ১টি থানার বিপরীতে অন্তত ৩৫ জন সোর্সম্যান রয়েছে। তাদের মাধ্যমে গোপন চুক্তির ভিত্তিত্বে ভারতীয় গরু প্রতি ৩ হাজার টাকা, মহিষ প্রতি ৩ হাজার ৫ শত টাকা, কসমেট্রিক্সের মাদক, বিড়ি, সিগারেট সহ অন্যান্য সামগ্রীর কিট (কাটুন প্রতি) ১ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন সোর্সম্যানরা। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সোর্সম্যানরা এসবল বিওপিতে হাজির হয়ে উত্তোলিত টাকা পরিশোধ করেন। ৭টার মধ্যে আগের দিনের উত্তোলিত টাকা বিওপি ও থানায় পৌছে না দেওয়া হলে লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

    যার কারনে সীমান্ত জুড়ে মাদক ও চোরাকারবার সংগঠিত হলে বিজিবি ও পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করছে। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ৪৮বিজিবির শ্রীপুর বিওপি, মিনা টিলা বিশেষ বিওপি, ১৯ বিজবির জৈন্তাপুর রাজবাড়ী বিওপি এবং লালাখাল বিওপি ও জৈন্তাপুর পুলিশ ষ্টেশন অন্যতম বলে জানান। উপজেলা প্রশাসন যদি চোরাচালান বন্ধের জন্য নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে জৈন্তাপুরকে মাদক মুক্ত ও চোরাচালান মুক্ত করা যাবে। লোক দেখানো অভিযান করলে চোরাকারবারীরা আরও উৎসাহিত হবেন।

    জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার ভূমি ফারুক আহমদ অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি কিছুদিন ট্রেনিংয়ে থাকার কারনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। সীমান্ত জুড়ে মটরশুটি পাচার ও চোরাচালান বন্ধে মোবাইল কোর্ট নিয়মিত পরিচালনা করা হবে। সচতেন মহলের কাছে তিনি আহবান জানান, উপজেলা প্রশাসনকে সটিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতার করার রাত দিন যে কোন সময় অভিযান পরিচালনা করতে তার টিম প্রস্তুত রয়েছে। অন্য প্রশ্নের জবাববে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বাহিনী সঠিক ভূমিকা পালন করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার প্রয়োজন হত না।