জৈন্তাপুরে মসজিদের টাকা আত্মসাত ও অনিয়মের অভিযোগ

    0
    298

    জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধি: ঢুপী পশ্চিম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ পাখি ও সদস্য মাহমুদ আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, মসজিদের টাকা আত্মসাত ও হিসাব সংক্রান্ত খাতাপত্র কৌশলে ছিনিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ এনে কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ উত্তাপন করেন।
    গতকাল ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস শুকুর। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাড়াটিয়ার সাথে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন সমেেয় কমিটি ও গ্রামবাসির যৌথ সভায় উপস্থিতির সাক্ষর নিয়ে কৌশলে রেজুলেশন খাতায় ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে রেজুলেশন তৈরী করার অভিযোগ করা হয়। চলিত বছরের আগস্ট মাসে ঢুপী পশ্চিম জামে মসজিদের নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পত্তি নিজপাট ইউনিয়নের চৈলাখেল মৌজা‘র জে.এল.নং-৩৬, দাগ নং-৭, খতিয়ান-১৫১ অর্ন্তগত ৯ বা ২৭ বিঘা তফশীল বর্ণিত ভূমি মসজিদের মালিকানাধীন। উল্লেখিত ভুমি সমুহ গোলাপগঞ্জ উপজেলার রস্তুমপুর গ্রামের মোঃ মাসুক মিয়ার পুত্র মোঃ আব্দুর রউফ গং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাথে চুক্তিপত্র সম্পাদন পূর্বক বিভিন্ন শর্তে ভাড়া গ্রহন করেন। পরবর্তীতে তারা ভাড়ার শর্ত লঙ্গন করে ভাড়াটিয়া কে উচ্ছেদ সংক্রান্ত উকিল নোটিশ প্রদান করাকে কেন্দ্র করে বিরোধ দেখা দিলে আদালতে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। আদালতে মামলা চলাকালীন অবস্থায় আব্দুল হামিদ পাখি ও মাহমুদ আলী মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও মহল্লাবাসীকে অবগত না করে ৯ একর বা ২৭ বিঘা জমি গোপনে জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে মসজিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে আসছে বলে জানানো হয়। সভাপতির অনৈতিক কর্মকান্ডের কাজের সাথে দ্বিমত পোষণ করে সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন বিগত ৬ নভেম্বর সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় সাবেক সভাপতি কমিটির ৩ সদস্য সহ গ্রামের ৫নিরীহ মানুষের উপর আদালতে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। মহল্লাবাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে পর পর কয়েকটি সভায় সভাপতি কে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি উপস্থিত না হওয়ায় কমিটি ও মহল্লাবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে আব্দুল হামিদ পাখি কে সভাপতি পদ হতে অব্যহতি প্রদান করেন।
    এদিকে গত ৩ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখে অনুষ্ঠিত মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও গ্রামবাসীর যৌথ সভায় মধ্যস্থতাকারী ১৭পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আব্দুল মৌলা চৌধুরী ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন‘র উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে ডাকা হলে সাবেক সভাপতি বৈঠকে উপস্থিত হয়নি। আদালতে মামলা থাকা অবস্থায় জনৈক ব্যক্তিকে সার্বিক তত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যগণ ও মহল্লারবাসীকে নানা ভাবে ভয়ভীতি সহ মামলা হামলার অব্যহত হুমকি দিয়ে আসছেন। সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ পাখি ও সদস্য মাহমুদ আলীর বিরুদ্ধে গত ৮ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর কমিটির সদস্যরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করে (স্মারক নং ২৬৯৫, তারিখঃ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ইং)। পরবর্তীতে গত ১৫ ডিসেম্বর জৈন্তাপুর মডেল থানায় অফিসার ইনচার্জ মহসিন আলী ও অফিসার ইনচার্জ তদন্ত ওমর ফারুকের মধ্যস্থ্যতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সকল সদস্য ও মহল্লাবাসীর উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের আলাপ আলোচনা করে সর্বসম্মতিতে ক্রাশিং জোনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করা হয়।
    পরবর্তী ১৯ ডিসেম্বব শনিবার সন্ধ্যায় সালিশ বৈঠক আহবান করা হয়। কিন্তু বৈঠকে তিনি উপস্থিত না হয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস শুকুর ও জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক নূরুল ইসলাম সহ নিরীহ মহল্লাবাসীর উপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তাদের হুমকী ও ভয়ভীতি অব্যাহত রাখায় মসজিদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির সমুহের ক্ষতি সাধান হওয়ার আশংঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে মর্মে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মহল্লাবাসীর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মুরব্বী আবুল হাসনাত, মুহিবুর রহমান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমদ, অর্থ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সদস্য আজির উদ্দিন, আব্দুল ওয়াহিদ বড়হুনা, বশির আহমদ ও ফুরকান আলী প্রমুখ।