জৈন্তাপুরে বালু মহাল নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের দৌরাত্ব

    0
    230

    ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় বৈধ ইজারা নিয়ে বিপাকে ইজারাদার

    রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধি:  পরিবহণ শ্রমিকদের দৌরাত্বের কারনে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বালু মহাল গুলো হতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। নিয়মানুয়ায়ী জেলা প্রশাসন বালু মহাল ইজারা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহন করলেও কতিপয় স্বার্থান্বেষি মহলের ষড়যন্ত্রে বরাবরই তা ভেস্তে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তিনটি বালু মহাল ইজারা দিলেও বালু মহাল নিয়ে গুটি কয়েক পরিবহণ নেতাদের চাঁদাবাজি ও ধর্মঘটের নৈরাজ্যের কারণে কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রয়েছে।
    এদিকে টানা ৬দিন পরিবহন ধর্মঘট শেষে গতকাল রবিবার ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও পরিবহন শ্রমিকরা জোর পূর্বক রয়েলিটি না দিয়ে জোর পূর্বক তিনটি বালু মহাল থেকে বালু নিয়ে যাচ্ছে বলে ইজারাদার শাহীন আহমদ জানান। তিনি অভিযোগ করে জানান জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন আলী কোন প্রকার সহযোহিতা করছেন না।
    সরজমিনে ঘুরে খোঁজ নিয়ে যানা যায়, চলতি বছরের জুন মাসে জেলা প্রশাসন হতে জৈন্তাপুর উপজেলার সারী-১, সারী-২ এবং বড়গাং বালু মহাল হতে মেসার্স এস.এ এন্টারপ্রাইজ ইজারা গ্রহন করে। ইজারা গ্রহনের পর গত ৭ আগষ্ট ইজারাদারকে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানিক ভাবে বালু মহালের দখল সমজিয়ে দেন। এসময় প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ফারুক আহমদ ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ। এসময় তারা সরকারি রাজস্ব আদায়ের স্থান হিসাবে সরফৌদ এলাকার উৎসমূখ নিদিষ্ট করে দেন। তারপর হতে বালুর গাড়ী হতে রাজস্ব আহরণ শুরু করেন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকারি এই রাজস্বকে পরিবহণ হতে চাঁদা উত্তোলনের গুজব ছড়িয়ে সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে একটি চক্র। এই চক্রের নৈরাজ্যের প্রতিকারে গত ২০ আগষ্ট জৈন্তাপুর ১৭ পরগনা শালিস সমন্বয় কমিটি একটি বৈঠকে বসে। বৈঠকে তারা নৈরাজ্যকারীদের হাত হতে রক্ষা পেতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
    অপরদিকে বালু মহালের ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধীকারী শাহীন আহমদ বলেন, জেলা প্রশাসন হতে কোটি ২০ লাখ টাকায় তিনটি বালু মহাল ইজারা নেওয়ার পর একটি চক্র তার কাছে বড় অংকের চাঁদা দাবি করে। সেই চাঁদা না দেওয়ার কারনে তারা সরকারি রাজস্ব আদায়ে বাধা ও রাস্তায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ২৩ আগষ্ট হতে তারা তিনটি বালু মহাল হতে জোর পূর্বক পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় রাজস্ব না দিয়ে বালু লোট করে নিয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হলেও প্রশাসন কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং বৈধ ইজারাদারকে হুকমী ধমকী দিচ্ছে। বালু লোটের ভিডিও করতে গেলে পুলিশ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এঅবস্থায় রাজস্ব আদায় করতে গেলে চক্রের লাটিয়াল বাহিনীর সাথে রক্তক্রিয় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি প্রশাসনের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান যেহেতু আপনারা বৈধ ভাবে ইজারা দিয়েছেন এখন রাজাস্ব আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে একটি র্স্বথানেষী মহল। তাই রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এবং সংঘর্ষ এড়াতে তিনটি কোয়ারী সৃষ্ট সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারী করার আহবান জানান।
    জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ বলেন, সরকারের রাজস্ব আদায়ে একটি মহল বাঁধা সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিত্তিহীন ভাবে চাঁদা আদায় বানিজ্য নিয়ে ভাইরাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে সরকারি নিয়মনীতিকেও তোয়াক্কা করছে না।
    জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, আপাতত কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আলোচনা ক্রমে ইজারা দেওয়া মহল গুলো থেকে পূনরায় বালু উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হবে।