জৈন্তাপুরে ধান চাষ অনুপযোগী জমিতে তরমুজের সম্ভাবনা

    0
    218

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: জৈন্তাপুরের কৃষকের সোনালী স্বপ্ন, গাছে গাছে তরমুজ৷ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়ন সহ প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রান্তিক কৃষক ও কৃষানীরা ধান চাষের অনুপযোগী জমি, নদীর জেগে উঠা চরে, জমি ভাড়া তিন প্রজাতির তরমুজ চাষ করে পরিবারকে স্ব-নির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
    সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ফুলবাড়ী, বাইরাখেল, কালিঞ্জি, রুপচেং, থুবাং, হেলিরাই সহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের কৃষক ও কৃষানীরা ধান চাষের পর পড়ে থাকা জমিতে কিংবা নদীতে জেগে উঠা চরে ব্লাক বেঙ্গল, ড্রাগন (বাংলালিংক), গ্লোরী (চ্যাম্পীয়ন) তিন প্রজাতির তরমুজ চাষ করে পরিবারকে স্ব-নির্ভর করার সোনালী স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। নিজপাট ইউনিয়নের প্রায় শাতাধিক কৃষকরা প্রায় ২শত হেক্টর ভূমিতে তরমুজ চাষ করেছে। বর্তমানে গাছে গাছে যে পরিমানে ফলন দেখা দিয়েছে, সঠিক সময়ের মধ্যে ফসল উত্তোলন করতে পারলে প্রতিটি পরিবার খরচ বাদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় করার সম্ভাবনা দেখছেন।
    ঘিলাতৈল গ্রামের মৃত খাদিম আলীর ছেলে কৃষক আবুল কাশেম (৬২) জানান- তিনি গত ৭ বৎসর থেকে ধান চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষ করছেন। এ বছর তিনি ৫শত গর্তে তিন প্রজাতির তরমুজ চাষ করেছেন৷ এপর্যন্ত গোবর, সার, বীজ, কিটনাশক, পানি ও বেড়া তৈরীতে অনুমান ৫০ হাজার টাকা তার ব্যয় হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবৎসর অধিক ফলন ভাল হয়েছে। সঠিক ভাবে ফলন ঘরে তুলতে পারলে খরচ বাদে তিনি অনুমান ১লক্ষ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ছাড়াও উপজেলার বাইরাখেল গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে আব্দুছ শুকুর প্রায় ৫শত গর্তে তরমুজ লাগিয়েছেন৷ অন্য কৃষক মোস্তফা মিয়া প্রায় ৪শত গর্ত, মকবুল আলী ৫শত গর্ত, রুপচেং গ্রামের মাসুক উদ্দিন প্রায় ৪শত গর্ত সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় শতাধিক পরিবার মিলে প্রায় ২শত হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারা দেশীয় পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ দিলে, উন্নত প্রযুক্তি কিংবা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করলে আরও লাভবান হতে পারতেন। বর্তমানে মাটি পোকা, গুঘরা পোকার আক্রমন সহ বিভিন্ন প্রকারের রোগে আক্রমন করায় দিশেহারা কৃষক পরিবার গুলো। বিগত বৎসরের চাষাবাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কিটনাশক বিক্রেতার পরামর্শ অনুযায়ী তরমুজ চাষের মাঠ পরিচর্যা করছে তারা৷ যার কারনে কৃষকরা সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। রোগ বালাই প্রতিরোধ করে সঠিক ভাবে তরমুজ বাজারজাত বা উত্তোলন করতে পারলে কৃৃষকদের সোনালী স্বপ্ন পূর্ণ হবে। কৃষকদের অভিযোগের তীর উপজেলা কৃষি অফিসের দিকে। রোগ বালাই সম্পর্কে কৃষকরা পরামর্শ পাচ্ছেন না।
    এদিকে প্রতি বৎসর তাদের উৎপাদিত তরমুজ গুলো সিলেট সহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকে ক্রয় করে নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা কৃষকের তরমুজ ক্ষেত গুলো পরিদর্শন করছেন। কেউ কেউ মাঠের ফলন দেখে তরমুজের মাঠ কিনে নেওয়ার আগ্রহ দেখাছেন।