জুড়ীর প্রতিবন্ধি শওকতের দুঃখগাঁথা জীবন

    0
    470

    আমারসিলেট24ডটকম,০৫ফেব্রুয়ারী,সুমন“পঙ্গু আমি কষ্টকরে চলাফেরা করি, দু’মুঠো অন্নের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরি”। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল  ইউনিয়নের উত্তর বড়ডহর গ্রামের দিন মজুর মোজাফ্ফর আলীর ৪ সন্তানের ছোট  সন্তান শওকত আলী (৩০) জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি সে। পা দুটো তার বাকা ও সরু। লাঠির সাহায্যে সে চলাফেরা করে। চলাফেরা করতে তার খুবই কষ্ট হয়। পঙ্গু হওয়ায় ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে উপজেলার হাটে-বাজারে গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে বেড়ানোর সময় দু’মুঠো অন্নের জন্য একথাগুলো বলে বেড়ায় শওকত। তার পিতা মোজাফ্ফর আলীর কোন জায়গা জমি নেই।

    সরকারি খাস ভূমিতে ছোট খাটো ছাউনি ঘরে তাদের বসবাস। পিতার অভাবি সংসারে দিন মজুর মোজাফ্ফর আলীর সংসার চলেনা, হিমশিম খেতে হয় নিত্যদিন। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাপন করে তাদের পরিবার। পিতার সামান্য আয়ে সংসার চলেনা দেখে শওকত উপায়ান্তর না পেয়ে “ভিক্ষের ঝুলি” নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। সারাদিন যা উপার্জন হয় তা তার পিতার একটু হলেও সহযোগীতা হয়। বাঁচার তাগিদে অন্য কোন বিকল্প পথ নেই শওকতের। বিয়ে করেছে ৬ বছর আগে। বর্তমানে ২ সন্তানের জনক। স্ত্রী মিলন বেগম অন্যের বাসায় ঝি এর কাজ করেন। পঙ্গু শওকতের একটাই ভাবনা ‘আমাদের জীবন না হয় কষ্টে কষ্টে পার হয়ে গেলো, কিন্তু আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ কি হবে’ ?

    সরেজমিনে গত মঙ্গলবার (৪/২) পঙ্গু শওকতের সাথে কথা হয় জুড়ী শহরে। ওই সময় কান্নাজড়িত কন্ঠে সে বলে, ‘আল্লার ইচ্ছায় আমি পঙ্গু অইয়া জন্ম নিছি। তবু আমার দুঃখ নাই, শোকরিয়া আদায় খরি আল্লার দরবারে। এখটাউ দুঃখ আব্বায় আমারে অভাবের লাগি পড়ালেখা হিকাইতে পারছইন না। যদি আইজ লেখা পড়া থাকতো তাইলে কোন কাজকামর ব্যবস্থা অইতো। লেখা পড়া না থাকায় আইজ ভিক্ষার ঝুলি লইয়া সবার কান্দাত ঘুরি ঘুরি যাই হুরুতার খানি যোগাইতে’। “মানুষ মানুষের জন্য” এশ্লোগানকে সামনে রেখে সরকারি, বে-সরকারি সংস্থা কিংবা দেশের বিত্তবানরা পঙ্গু শওকতসহ তার পরিবারের প্রতি একটু সাহায্যের হাত প্রসারিত করলে তার দুঃখগাঁথা জীবনের উন্নতি এবং সুখের মুখ দেখতে পাবে শওকতের গোটা পরিবার ।