জুড়ীতে ৫ হাজার হেক্টর ধানের ফসল পানিতে নিমজ্জিত

    0
    218

    “ধানগুলোর  চিন্তায় আর অন্যদিকে ঋনের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো এই চিন্তা মাথা থেকে সরছেনা”

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৬এপ্রিল,এম এম সামছুল ইসলাম, জুড়ীঃ টানা কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্না ল প্লাবিত হয়ে গেছে।  বন্যার পানিতে হাকালুকি হাওর পাড়ের গ্রামগুলোর কৃষকদের ঘাম জড়ানো ফলানো কাঁচা বোরো ফসলের প্রায় সব ধানই পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

    এছাড়াও জুড়ী,কুশিয়ারা ও সোনাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জুড়ী নদীর বেড়ী বাঁধের কয়েকটি স্থানের ভাঙ্গনের ফলে ওই ইউনিয়নগুলো ও হাকালুকি হাওর পাড়ের বোরো জমিতে দিন দিন পানি বাড়ার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমতাবস্থায় অত্রা লের কৃষকরা মাথায় হাত দেয়া ছাড়া কোনো উপায়ান্তর দেখতে পাচ্ছেন না। সরেজমিনে ঘুরে উপজেলার পাতিলা সাঙ্গন গ্রামের প্রবীণ কৃষক হাজী আব্দুস সাত্তার (১৩০), নয়া গ্রামের  কৃষক জয়নাল আবেদীন (৬০), বাছির পুর গ্রামের কৃষক তৈমুছ আলী (৪৮), বেলাগাঁও গ্রামের কৃষক মনফর আলী (৮০), শিমূলতলা গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম (৫৫), জায়ফরনগরের কৃষক খসরু মিয়া (৪৫) বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় আমরা আমাদের জমিতে বোরো ফসল করেছি । আগাম বন্যায় আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। এ ফসল ভালো ফলনের আশায়  অনেক শ্রম ও হাজার হাজার টাকা খরচ করেছি। কিন্তু সব আশা ব্যর্থ হয়ে গেলো । আমাদের ধান পাকার আগেই সব কাঁচা ধান পানিতে ডুবে গেলো। আমরা পরিবার -পরিজন নিয়ে কি খাইয়া বাচঁবো এটা আমাদের চিন্তা। এ ফসল করতে ঋন করে টাকা এনেছি। এদিকে ধানগুলোর  চিন্তায় আর অন্যদিকে ঋনের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো এই চিন্তা মাথা থেকে সরছেনা।

    তারা আরো বলেন, বোরো ফসলের উপরই অত্রা লের কৃষকরা নির্ভরশীল। আপনারা সাংবাদিকরা আমাদের দূর্গতির কথা সরকারকে জানান। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলার ৫হাজার ৪শ ৭০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে । তন্মধ্যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়ে গেছে । এভাবে পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে সব ফসলই পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাবে।  অত্রা লের কৃষকরা এবারের ফসলের আশা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ, পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে যেসব ফসল বেশির ভাগই কাঁচা।

    জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জানান, আগাম বন্যার কারণে কৃষকদের এ সর্বনাশ হয়ে গেলো। এ ব্যাপারে তিনি ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের দোষারোপ করে বলেন, তারা যদি জুড়ী নদীর বেড়ীবাঁধ সঠিক সময়ে নির্মাণ এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জুড়ী নদীকে খনন করতেন তাহলে অত্রা লের কৃষকরা এতো ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না। তিনি আরো বলেন, অত্রা লের কৃষকদের ফসল পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কথা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করিয়েছি।