জুড়ীতে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রাছনা

    0
    252

    জুড়ী (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতাঃ মৌলভীবাজারের জুড়ীতে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রাছনা বেগম (৩৩)। তিনি উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শুকনা ছড়া গ্রামের মবশি^র আলীর মেয়ে। তার স্বামী সাগরনাল ইউরিয়নের পূর্ব সাগরনাল গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র, “সার্কাস লাকি সেভেন” পরিচালক রফিক মিয়া (৪৩)। নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রাছনা তার প্রতিকার চেয়ে বিগত ১৭ অক্টোবর ২০১৮ইং তারিখে স্বামী রফিক মিয়া, ১ম স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও শাশুরী আয়মুনা বেগমের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেড ৫নং আমলী আদালতে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

    যা প্রি-কেইছ নাম্বার ৯৫/২০১৮ নাম্বার ভূক্ত হয়। লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০৬ সালে উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের পূর্ব সাগরনাল গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র রফিক মিয়ার সাথে ৮৫ হাজার টাকা দেন মোহরে রাছনার বিয়ে হয়। এ বিয়ে রফিকের ১ম স্ত্রী ও তার মাকে না জানিয়ে এবং রাছনার নিকট গোপন রেখে হয়। রফিকের ১ম স্ত্রী ও মা এ বিয়ের খবর শোনে তা মেনে নিতে পারেননি। এরপরও রফিক নববধু রাছনাকে নিয়ে বাড়িতে উঠেন। তার নবদম্পতিকে বাড়িতে জায়গা দিবেনা বলায়, রফিক স্থানীয় গন্যমান্যদের জানালে, তাদের মধ্যস্থতায় নবদম্পতি বাড়িতে স্থান পায় এবং ঘর সংসার শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে রফিকের ১ম স্ত্রী ও মা সার্কাসের উন্নয়নে সরঞ্জাম কেনার জন্য রাছনার পিত্রালয় থেকে ৩ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেন। রফিক তার ২য় স্ত্রী রাছনাকে যৌতুকের টাকার কথা জানালে, তিনি বলেন, আমার নিরীহ গরিব পিতার পক্ষে এতো টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এরপর থেকে তার ওপর নেমে আসে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন।

    স্বামীগৃহ শেষ আশ্রয় মনে করে রাছনা ঘর সংসার করতে থাকে। তাতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে কারণে-অকারণে রাছনার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে যান। এ খবর পেলে রাছনার পিতা স্থানীয় মুরব্বিদের মধ্যস্থতায় তাকে নিজ বাড়িতে এনে আলাদা ঘর নির্মাণ করে দিলে ওই ঘরে তার স্বামী রফিক আসা যাওয়া করতো। এমতাবস্তায় রাছনার গর্ভে পর পর ২টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যাদের বয়স যথাক্রমে ১২ ও ৯ বছর। গত ১৬ই অক্টোবর ১৯ইং যৌতুকের ৩ লাখ টাকা নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে রফিক রাছনাকে মারপিট করে ফেলে চলে যায় এবং যাবার সময় বলে যায় যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে নিয়ে আর ঘর সংসার করবেন না।

    এ ব্যাপারে স্থানীয় ও আইনীভাবে আপোষ মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি রফিক গংরা। এরই এক পর্যায়ে রফিক দেশের অন্য জেলায় তথা রংপুর গিয়ে “সার্কাস লাকি সেভেন” চালিয়ে টাকা পয়সা রোজগার করে। কিন্তু তার পরিবারকে ভরণ পোষন দিচ্ছেন না। যার ফলে, ২ মেয়েকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে রাছনার। তার ওই ২ মেয়ের ভবিষ্যত কি হবে? এ ভাবনাই হর-হামেশা লেগে আছে তার। রাছনার পিতা মবশি^র আলী জানান, আমি নিরীহ গরিব মানুষ। আমার মেয়েকে যারা নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার চাই। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত রফিক, ১ম স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও মা আয়মুনা বেগম তাদের ওপর আণীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাছনা ও ২ মেয়ের ভরণ পোষণে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের এ সুনামে ঈর্ষাম্বিত হয়ে একটি কুচক্রীমহন আমাদের বিরুদ্ধে ওঠে পড়ে লেগেছে।