জুড়ীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,পানিবন্দী লক্ষাধিক,নিহত-১

    0
    244

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৮জুন,এমএম সামছুল ইসলাম, জুড়ীঃ    টানা কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এতে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। অত্রা লের বন্যার পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি এখন ভয়াবহতার রূপ ধারণ করেছে।

    বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ অসহায় ও দুর্ভোগের সাথে যুদ্ধ করে কোনো রকমে বেঁচে আছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আ লিক মহাসড়কসহ প্রায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে মৌলভীবাজার সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

    এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণ সহায়তার দরকার তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বন্যার্তদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতার প্রয়োজন তা তাদের পক্ষ থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেনা বলে অভিযোগ অত্রা লের বন্যার্তদের। বন্যার পানিতে বেশিরভাগ বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থান তলিয়ে গেছে। বন্যায় শতশত ফিশারির মাছ ভেসে গেছে।

    আর খামারীসহ অন্যান্য মানুষের গরু-বাছুর নিয়ে থাকার ব্যবস্থা দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অত্রা লের বেশিরভাগ মানুষজন মাথা পেতে কোনো রকমে দুর্যোগের মধ্যে বেঁচে আছেন। বন্যায় উপজেলার প্রায় ছোট বড় সব সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

    সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম বিশেষ করে বেলাগাঁও, সোনাপুর, গরেরগাঁও, নিশ্চিন্তপুর, শাহ্পুর, ইউসুফনগর, শিমুলতলা, নয়াগ্রাম, বাছিরপুর, কালনীগড়, মানিকসিংহ, দিঘলবাগ, খাগটেকা, এলাপুর, কাশিনগর, পাতিলাসাঙ্গন, কোনাগাঁও, বটুলীসহ প্রায় গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে উত্তাল ঢেউ। তারপরও হাওর পাড়ের মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাচায় বাস করছেন।

    গতকাল রোববার উপজেলার পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামের মরহম আলীর ছেলে আলী হোসেন (৪) পানিতে ডুবে মারা যায়। এছাড়াও যারা বাড়ি-ঘরে থাকতে পাড়ছেন না, তারা তাদের গরু-বাছুর, পরিবার পরিজন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বন্যা দুর্গোতদের জন্য প্রশাসনিকভাবে যে সংখ্যক আশ্রয় কেন্দ্র ও ত্রাণ সামগ্রী ব্যবস্থা করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

    এছাড়াও বন্যার পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় গো-খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসিম চন্দ্র বণিক এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ অবস্থায় বন্যা দুর্গোতদের নিরাপদ আশ্রয়ে স্থান দেয়ার জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ জানিয়েছি।

    বন্যার্তদের সার্বিক সহযোগিতার ব্যাপারে সরকারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।