জুড়িতে চশমাপরা হনুমানের মৃতদেহ,ধারণা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট

0
1123
জুড়িতে চশমাপরা হনুমানের মৃতদেহ,ধারণা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট
জুড়িতে চশমাপরা হনুমানের মৃতদেহ

আফজাল হোসেন রুমেল,বড়লেখা প্রতিনিধিঃ বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত বনে বিদ্যুৎ লাইন বন্যপ্রাণীর হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই রিজার্ভ ফরেস্টে বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের পাশে একটি চশমাপরা হনুমানের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় বনবিভাগ। ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্টেই হনুমানটির মৃত্যু ঘটেছে।

জানা গেছে, বড়লেখার ডিমাই, বিওসি কেছরিগুল, মাধবছড়া ও জুড়ীর লাঠিটিলায় বনবিভাগের একোয়ার্ড ও রিজার্ভ ফরেস্টে ৪০-৫০ বছর ধরে কয়েক হাজার পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করছে। প্রথমে বনজঙ্গল কেটে ছোট ঝুঁপড়িঘর ও পরে সময়ের ব্যবধানে তারা অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ করতে থাকে। এসব অবৈধ বসবাসকারীদের উৎপাতে বন্যপ্রাণীরা আবাসস্থল হারানোর সাথে বনবিভাগের সৃজিত লাখ লাখ টাকার গাছপালাও উজাড় হতে থাকে। বনের ভুমিতে অবৈধ বসবাসকারীরা ঘরবাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ায় নানা প্রজাতির বনের প্রাণীরা আরো হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়ে। বন উজাড় ও বিদ্যুতের আলোয় দিশেহারা বন্যপ্রাণীরা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে প্রায়ই মারা যাচ্ছে। বনের মধ্যের বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়েও স্থন্যপায়ী প্রাণীরা মারা যায়। এ যেন ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃকুড়ে’ প্রবাদ বাক্যের উল্টো চিত্র সরকারি ফরেস্টে। বন বিভাগ যুগ যুগ ধরে অবৈধ বসবাসকারী উচ্ছেদে শুধু তালিকাই তৈরী করে, কাজের কাজ কিছুই না করায় বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ ক্রমাগত হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন সংলগ্ন দিলকুশ চাবাগান এলাকায় রাস্তার পাশে স্থানীয় লোকজন একটি চশমাপরা হনুমানের মৃতদেহ দেখতে পান। প্রত্যক্ষদর্শী ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা হনুমানটি বনের ভেতরের বিদ্যুৎ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। স্থানীয়রা জানান, বনবিভাগের একোয়ার্ড ফরেস্টে এভাবে প্রায়ই তারা বানর ও চশমা পরা হনুমানের মৃতদেহ দেখা যায়। বানর ও হনুমান ফলজ গাছে লাফালাফির মতো বিদ্যুতের তারেও লাফালাফাতি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।

বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, লাঠিটিলা চশমাপরা হনুমানসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। মৃত হনুমানটিরও আবাসস্থল এ বনেই হতে পারে। বিট সংলগ্ন চা বাগানের রাস্তায় মৃতদেহ দেখে লোকজন খবর দেন। প্রাণীটির শরীরে ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে। বনের ভেতর বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনে জড়িয়ে হনুমানটির মৃত্যু হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি প্রাপ্ত বয়স্ক নয়। ২/৩ দিন আগে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে। দুর্গন্ধ ছড়ানোয় এলাকাবাসী মৃতদেহটি মাটিচাপা দিয়েছেন।

বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, রিজার্ভ ফরেস্টের ভুমি দখল করে কয়েক বছর ধরে সহ¯্রাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে বসবাস করছেন। এদের অন্তত ৭০০ পরিবার অনেক আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। বনের ভুমির অবৈধ দখলদাররা ক্রমাগত বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে। এতে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বসবাস হুমকির সম্মুখিন।