জীবন যুদ্ধে থেমে নেই জৈন্তাপুরের বাক প্রতিবন্ধিরা

    0
    439

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬জানুয়ারী,রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃ বিশ্বরে সবকটি দেশের মত আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ রয়েছে যাদেরকে দেখতে অন্য সব মানুষের মতই জীবন যাপন করতে মনে হয়। কিন্তু সব থাকা সত্বেও তাদের মুখে নেই কোন আওয়াজ। তারা হচ্ছে বাক প্রতিবন্ধি বা মুখ বধিরও বলা হয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ন্যায় আমাদের জৈন্তাপুর উপজেলায় এরূপ বেশ কয়েক জন প্রতিবন্ধি রয়েছেন। জীবন যুদ্ধে তারাও পিছিয়ে নেই, জীবিকার তাগিদে তাদের মধ্যে কয়েক জনকে অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ কাজ করতে দেখা যায়।

    প্রতিবন্ধিরা মেধাবী হয় এ কথাটা যেমন চিরন্তন সত্য তেমনি আমাদের সমাজের এই অবহেলিত মানুষ গুলোকে যদি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেত তাহলে তারাও এদেশের একজন গর্বিত নাগরিক হিসেবে আত্মতৃপ্ত হতে পারত। অথচ তাদের চুখ-মুখের দিকে তাকালে মনে হয় তারা বড়ই অসহায়।
    সম্প্রতি জৈন্তাপুর উপজেলার ৬জন বাক প্রতিবন্ধি (মুখ বধির)’র সাথে কথা হলো। অঙ্গ-ভঙ্গি আর ইশারার মাধ্যমে তারা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করল। এদের মধ্যে ৩ জন প্রতিবন্ধি বা বধির স্কুল থেকে কিছুটা লেখা-পড়া করেছে। হাতে কলমে সে তার নাম ঠিকানা লিখতে পত্রিকা পড়ে নিতে পারে এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ব্যাবহারে বধিরা বেশ পারদর্শি। তারা তাদের জীবনের হতাশা আর কষ্টের কথা বিভিন্ন ভাব বঙ্গিতে বুঝানোর চেষ্টা করে অপরিচিত কোন মানুষ দেখলে। বধির রবি উল্লাহ, কবির হোসেন, হাবিবুর রহমান, আব্দুল হোসেন, আবুল কাসেম ও ফেদল দাস। তাদের মধ্যে একজন গার্মেন্টস শ্রমিক, দুইজন নির্মাণ কাজের মিস্ত্রি এবং অপর তিন জন বৈদ্যুতিক কাজ করে। ইচ্ছা আর আত্মশক্তির মাধ্যমে মানুষ যে কোন অসাধ্যকে সাধন করতে পারে এদেকে দেখলে মনে হয়। আর তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তিন বধির বৈদ্যুতিক কাজের মত ঝুকিপূর্ণ পেশায় অংশ নিয়ে। জৈন্তাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের যে কোন বৈদ্যুতিক ত্রুটি দেখা দিলে মূহুর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এই তিন বধির। ওরা কথা বলতে বা শুনতে না পারলেও  তাদের কাছে রয়েছে অন্য সবার মত মোবাইল ফোন রিংটোন শুনতে না পারলেও ব্রাইব্যাশন থাকায় কল আসার সাথে বুঝে নিতে পারে কে জেন খোঁজতেছে, দেরি নাকরে পাশে থাকা অন্য লোকের কাছে ফোনটা দিয়ে অপর দিক থেকে কি বলা হচ্ছে তা জনার চেষ্টা করে তাকে তারপর ইসারা ইঙ্গিতে জেনে নেয়ার চেষ্টাকরে বাক প্রতিবন্ধিরা। কথা একটু ভেবে চিন্তে সমস্যা চিহিৃত করে নিমিশেই সমাধান করে দিচ্ছে তারা। তবে তাদের একটা আকুতি সরকার যদি কোন একটা ভাতার ব্যবস্থা করে তা হলে তারা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে। এই বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় ভেবে দেখবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।