জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় পেলো বাংলাদেশ

    0
    266

    আফিফ হোসেন আর মোসাদ্দেক হোসেন ব্যাটিং দৃঢ়তায় মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

    শুক্রবার রাজধানীর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় টাইগাররা। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ১৮ ওভারে নামিয়ে আনা হয়।

    ১৪৫ রানের জবাবে শুরুটা মন্দ ছিল না শুরুটা মন্দ ছিল না বাংলাদেশের। দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার তৃতীয় ওভারে বিনা উইকেটে ২৬ রান তুলেছিলেন। কিন্তু ওই ওভারের শেষ বলে চাতারার করা বলে বোল্ড হন লিটন দাস। পরের ওভারে চার বলের ব্যবধানে ফিরে যান সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। বিনা উইকেটে ২৬ রান তোলা বাংলাদেশ মাত্র ১০ বলের ব্যবধানে ৪ উইকেটে ২৯! সৌম্য সরকার (৪), সাকিব আল হাসান (১) ও মুশফিকুর রহিম (০) সাজঘরে ফেরত যান।

    দলের বিপদ আরও বাড়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১৪) ও সাব্বির রহমানের (১৫) বিদায়ের পর। ৬০ রানে নেই ৬ উইকেট! তবে সপ্তম উইকেটে দলকে জয়ের পথে নিয়ে আসেন আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মোসাদ্দেককে সঙ্গে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৮২ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন আফিফ। মাত্র ২২ বলে ৮ চার ও এক জয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন এই তরুণ ক্রিকেটার। জয় থেকে তিন রান দূরে থাকতে মাসাকাদাজার দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন আফিফ। ১ ছক্কা ও ৮ চারে ২৬ বলে ৫২ রানের স্মরণীয় ইনিংস খেলে আফিফ ফেরার পর ৪ বলে দরকার ছিল ৩ রান। সাইফউদ্দিন এর মধ্যে প্রথম ২ বলেই জয় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের। অপর প্রান্তে ২৪ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক।

    জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন কাইল জারভিস, টেন্ডাই চাতারা ও নেভিল মাতজিভা। এছাড়া একটি উইকেট নেন বার্ল।

    এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় আর নিজের প্রথম ওভারে প্রথম বলেই অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলরকে ফেরত পাঠান তাইজুল ইসলাম। বাংলাদেশের প্রথম আর টি-টোয়েন্টিতে ১৫তম বোলার হিসেবে অভিষেকের প্রথম বলেই উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান তিনি।

    দ্বিতীয় উইকেটে ক্রেইগ অরভিনকে সাথে নিয়ে ৪৩ রান যোগ করেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দলীয় ৫১ রানে আরভিন মোস্তাফিজের বলে মোসাদ্দেকের হাতে ধরা পড়েন। এরপর ২৬ বলে ৩৪ রান করা মাসাকাদজার উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

    দলীয় ৫৬ রানে শন উইলিয়ামস ২ রান করে মোসাদ্দেকের শিকারে পরিণত হন। টিমিসেন মারুমা রান আউটের শিকার হলে ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

    ষষ্ঠ উইকেটে অবশ্য সেই চাপ ভালো ভাবেই সামাল দেন রাইয়ান বার্ল ও টিনোটেনডা মুতুমবুডজি। বার্লের মারমুখি ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ১৮ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান করে জিম্বাবুয়ে। সাকিবের এক ওভারেই ৩০ রান তুলে নেন তিনি। ৩২ বলে ৫৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন বার্ল।

    বাংলাদেশের তাইজুল, সাউফউদ্দিন, মোস্তাফিজ ও মোসাদ্দেক ১টি করে উইকেট নেন। ৪ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে সাকিব কোনো উইকেট পাননি।

    ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার পান আফিফ হোসেন।

    ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমরা এই জয় থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাচ্ছি। দল বেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তাই এই সহজ একটি জয়ের চেয়ে এই কষ্ট সাধ্য জয়টি অনেক আত্মবিশ্বাস দিবে আমাদের।’

    জয়ের দুই নায়ক মোসাদ্দেক এবং আফিফকে প্রশংসায় ভাসাতে অবশ্য ভুল করেননি সাকিব। মোসাদ্দেক এবং আফিফ যেভাবে খেলেছে তাতে আমি বেশ খুশি। আশা করি তারা এভাবেই তাদের খেলা ধরে রাখতে পারবে এবং টপ অর্ডারও ফর্মে ফিরবে।’

    আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। জয়ের এই ধারা সেই ম্যাচেও অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সাকিব।