জাতির জনকের সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে শ্রীমঙ্গলে অপপ্রচার

    0
    246

    জাতির জনকের সংক্ষিপ্ত জীবনী ‘আপন আলোয় বিশ্বভূবন’ সংকলন প্রকাশ ও বিতরণ নিয়ে একটি কুচক্রী মহলের অপপ্রচার অব্যাহত।প্রতিহিংসামুলক সংবাদের জেরে সংকলন জব্দ করল প্রশাসন! দু’টি বিদ্যালয় প্রধানকে কারন দর্শানোর নোটিশ!
    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৯নভেম্বর,সাজন আহমেদ রানা,বিশেষ প্রতিনিধিঃ শ্রীমঙ্গলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনীভিত্তিক সংকলন “আপন আলোয় বিশ্বভূবন” প্রকাশ ও বিতরণ নিয়ে একটি প্রতিক্রিয়াশীল কুচক্রী মহল অনবরত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিকুল চক্রবর্তী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন তথ্য শিক্ষক বাতায়নে প্রদেয় সকলের জন্য উন্মুক্ত একটি শিক্ষনীয় কনটেন্ট ও অন্যান্য বিদগ্ধ লেখকের বই হতে জ্ঞান আহরণ করে স¤পাদনা করে ২০১৫ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থীদের নিকট সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিনামুল্যে বিতরণ করে আসছেন। বইটিতে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বির্তকিত ও বিকৃত তথ্য এসেছে বলে সম্প্রতি একটি মহল সংবাদ প্রচার করেছে।
    সংকলণে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যা লিখা রয়েছে ১১নং পৃষ্টায় তা হলো “২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল ঘোষণা বার্তা ওয়ারলেস যোগে চট্টগ্রামে জহুরুল আহমদ চৌধুরীকে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রাম বেতার থেকে আওয়ামীলীগ নেতা হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা বাণী স্বকণ্ঠে প্রচার করেন। পরে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে অবস্থিত ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান ঐ ঘোষণা পুন:পাঠ করেন”
    এ তথ্যের বাস্তবতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় এটি সরকারের শিক্ষক বাতায়নে প্রদেয় কনটেন্ট ও সঠিকতার বিষয়টি প্রমাণিত। শুধু তাই নয়, জয়নুল আবেদীন রচিত বইয়ে খুব সুন্দরভাবে ঘোষণাকারী এবং পুন:পাঠকারীর তথ্য রয়েছে।
    সুস্পষ্ট দালিলিক প্রমাণ ও সঠিক তথ্য থাকার পরও শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংকলনটিতে ’তথ্যবিকৃতি’ রয়েছে এরুপ সুস্পষ্ট বক্তব্য ও ব্যাখ্যা প্রদান করে বিতরণের সাথে সংশ্লিষ্ট দুটি বিদ্যালয় প্রধানকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করেছেন।

    জানা যায়, তিনি নিজে ঐ বই বিতরণের সাথে যুক্ত ছিলেন। তাহলে কেন এ সংকলনকে সুস্পষ্টভাবে ‘তথ্য বিকৃতি’র মিথ্যা ও মনগড়া অভিযোগ এনে স্থানীয় প্রশাসন ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে তুলে নিয়ে জব্দ করলেন? এবং এতদিন পর হঠাৎ করে বই বিতরণকল্পে সহায়তাদানের দায়ে প্রগতিশীল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে কি কোন কুচক্রী মহলের অনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করল স্থানীয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় নাকি প্রতিক্রিয়াশীলদের সরকারকে বেকায়দায় ফেলার প্রপাগান্ডার সাথে হাত মিলিয়েছে?
    সংকলনের সম্পাদকের বরাতে জানা যায়, কারিগরী সমস্যার কারনে ফন্ট রুপান্তর প্রক্রিয়াকালে কয়েকটি বানান এলোমেলো হয়ে যায়। এটুকু বিভ্রাট ব্যাতীত পুরো বইটিই সঠিক তথ্য সমৃদ্ধ বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞজনেরা। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও বইটিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কে নিয়েও তথ্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করে প্রদর্শণী করে নতুন প্রজন্মকে তা দেখার সুযোগ করে দেন। নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীর উপযোগী করে বঙ্গবন্ধু স¤পর্কে একনজরে কিছু তথ্য তুলে দিতে এবং নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতে এ সংকলণ প্রকাশ করে বিতরণ করে আসছেন। কিন্তু তার একার পক্ষে এই সংকলনটি প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন এই সংকলনটি স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করার জন্য। তার এ আবেদনে সারা দিয়ে শ্রীমঙ্গলের সেন্ট মার্থাস উচ্চ বিদ্যালয় এবং মহাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় বই গ্রহণ করে তা ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করেন।
    তিনি আরো জানান, একটি জনপ্রিয় অনলাইনের কতিপয় সাংবাদিক ও একটি চক্র মিলে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজেদের মতো করে ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। জানা যায়, বাপনের এরকম একটি বিভ্রান্তিমুলক সংবাদের সুবাদে একশ্রেণীর সুবিধাবাদী ফেসবুক ব্যবহার করে অত্যন্ত ঘৃনিত সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন ও ভোল পাল্টে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছেন। যা আগামীতে নৌকার ভোট ব্যাংকে (বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়) মারাত্বক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে।
    জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের মধ্যে একটি আদর্শিক বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনাধারী সিনিয়র সাংবাদিক, গনমাধ্যমকর্মী, শিক্ষানবিশ সাংবাদিকদের নিয়ে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব কারো কারো মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিকুলের বরাতে জানা যায়, কুচক্রীকারী সাংবাদিক বাপন একটি জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টালকে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ভুল বুঝিয়ে ব্যবহার করেছে।
    এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, অত্যন্ত সৎ ও জনপ্রিয় আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক রফিকুর রহমান বলেন, বিকুলকে আমি খুব ভালোভাবে জানি এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে তার সকল কর্মকান্ড অবশ্যই নিঃসন্দেহে একটি মহতী উদ্যোগ।
    মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেসার আহমেদ জানান, তিনি এ সংকলনটি বিতরণের অনুষ্টানে ছিলেন, তিনি এটি পড়েছেন এতে কোন বিতর্কিত বা বিকৃত তথ্য নেই।
    মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান জানান, বিকুল চক্রবর্তী আমাদের এই মৌলভীবাজার জেলায় মুক্তিযুদ্ধের কথ্য সংগ্রহের কাজ ও বঙ্গবন্ধুর আলোকচিত্র নিয়ে প্রদর্শণীসহ বিভিন্ন প্রসংশিত কর্মকান্ড করে আসছেন। ‘আপন আলোয় বিশ্ব ভুবন’ সংকলনটি আমি পড়েছি এবং এটি বিতরণে আমি ছিলাম। সংকলনটিতে তথ্যগত ভূল বা অসত্য এবং অস্পষ্ট তথ্য নেই। এ সংকলনকে বিতর্কিত ও বিকৃত বলে প্রচার করা কোন একটি সরকারবিরোধী চক্রের কুটকৌশল হতে পারে।
    শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব জানান, সংকলণটি তিনি পড়েছেন সেখানে কয়েকটা বানানের ভূল ছাড়া তথ্যগত কোন ভুল তাঁর চোখে পড়েনি।
    শ্রীমঙ্গল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু কুমার দেব জানান,তিনি এই সংকলনটি পড়ে দেখেছেন।এটিতে বিকৃত তথ্যের কোন সন্নিবেশ চোখে পড়েনি।
    শ্রীমঙ্গল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার বলেন, বইগুলো অন্যায়ভাবে জব্দ করা হয়েছে,এই বই যদি জব্দ হয় তাহলেও বিভিন্ন পাঠ্যবই সহ বিশিষ্ট লেখকদের বইও জব্দ করতে হবে। এটা অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত।

    জানা যায়, বিকুল মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সদস্য এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথেও সম্পাদক রয়েছেন। শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে একনিষ্ঠ ভাবে জড়িত রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ ছাড়াও তিনি বৃক্ষ সংরক্ষণ জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করেন। এ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি ২০১৪ সালে বৃক্ষ সংরক্ষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারে ভুষিত হন।

    এদিকে,শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক এবং জয়বার্তা পত্রিকার সম্পাদক এডভোকেট এ.এস.এম. আজাদুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি গনমাধ্যমে পাঠানো হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ফেসবুকে মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য প্রকাশ করায় এর নিন্দা জানান শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মীরা। তারা এ উদ্দেশ্যমুলক সংবাদ প্রকাশের দায়ে সরকারের নিকট বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য বাপন সহ কৌশলে সরকারবিরোধি কর্মকান্ডে জড়িত সকল চক্রান্তকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার দাবী জানান। সুত্রে জানা যায়, কুচক্রী সংবাদ প্রকাশকারী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য বাপনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলা বিজ্ঞ আদালতে মামলা হয়েছে।অনুসন্ধানী পর্ব চলমান