জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় ভারতীয় সীমান্তে সতর্কাবস্থা

    0
    239

    বেনাপোল থেকে এম ওসমান: ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে উপলক্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জঙ্গি হামলা এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কায় দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ভারতীয় সরকার। স্বাধীনতা দিবসের কেউ যেন ভারতে প্রবেশ করে হামলা চালাতে না পারে সেই লক্ষে সীমান্তসহ গোটা রাজ্যে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

    কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সেই আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। আর গোয়েন্দা সংস্থার সেই সতর্কবার্তা পাওয়ার পর পরই কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং সিআইডি রাজ্যের সর্বত্র নজরে রাখতে শুরু করেছে। ১৫ আগস্ট যাতে কোন ভাবেই জঙ্গিরা হামলা চালাতে না পারে, এ জন্য আগে থেকে সতর্ক কলকাতা পুলিশ।

    সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতো বটেই, বাংলাদেশ পেরিয়ে যাতে কোন জঙ্গি বা সন্দেহ ভাজন কোনো ব্যক্তি এ রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকেও কড়া নজর রেখেছেন গোয়েন্দারা। সতর্ক করা হয়েছে বিএসএফকেও।

    রাজ্য ও কেন্দ্রের এমন নির্দেশ পেয়ে গত সোমবার থেকে ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্ত এলাকার বাসস্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশন এলাকার বাস ও ট্রেনে তল্লাশী চালাচ্ছে পুলিশ, জিআরপি ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। জঙ্গি হামলার ভয়ে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রতি বছরই ভারত সরকার সীমান্ত সিল করে থাকে। এবার পুলিশ, বিএসএফ, জিআরপি ও গুপ্তচর সংস্থা বেশ সক্রিয়।

    ওপারের বিভিন্ন সূত্রে এবং বাংলাদেশ বিজিবি ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণের সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে পশ্চিমে কুষ্টিয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলোর সড়ক ও রেলপথসহ বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত সৈন্য ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জলপথেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

    কলকাতাসহ আশপাশের হোটেল ও আবাসিক এলাকাগুলোতেও চলছে কড়া নজরদারি। ভারতগামী ও ভারত থেকে আগত বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীদের ব্যাগও নানাভাবে তল্লাশি করছে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর লোকজন।

    ভারতীয় পুলিশ বাজার, স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও জনবহুল এলাকায় কড়া নজরদারির আওতায় রেখেছে। ২৪ পরগঁণা জেলার যশোর, টাকি ও ৩৪ জাতীয় সড়কের বিভিন্নস্থানে বসানো হয়েছে তল্লাশী চৌকি। যে কোনো সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ করে বোমা হামলা চালাতে পারে কেন্দ্রের এমন নির্দেশের আর কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা। এ কারণে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লিসহ সকল রাজ্যে।

    এদিকে বেনাপোল চেকপোস্টে ভারত ফেরত সাংবাদিক ইয়ানুর রহমান জানান, দেশে ফেরার সময় সারা পথে তল্লাশী করেছে ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন। ব্যাগ খুলে মালপত্র তল্লাশি করেছে। শিয়ালদহ রেলস্টেশনেও অনেক পুলিশ দেখেছি। ভারতের হরিদাসপুর সীমান্তে বিএসএফ টহল দিচ্ছে। পথে পথে যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করছে তারা। অনেকের শরীরেও তল্লাশি করছে।

    এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র যশোর-৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, বর্ডার আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। ইন্টারনাল নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কাজ করছে আর সীমান্তেতো বিজিবি কাজ করছেই। ভারতে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সীমান্তে কড়া নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিএসএফ। তবে সীমান্তে বিজিবি সব সময় সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

    বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ১৫ আগস্টে ভারত সরকার সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে শুনেছি। বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল সীমান্তেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।