ছাত্রদলের কর্মীদের হামলায় এএসপিসহ পাঁচ সদস্য আহত

    0
    220

    বগুড়ায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে যোগ দিতে আসা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ (এএসপি) পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের সার্কিট হাউজ সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

    আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পারভেজ নামে এক কনস্টেবলের মাথা ফেটে গেছে। তাকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত পুলিশের অন্য চার সদস্য- বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, এএসআই আশরাফুল, কনস্টেবল মামুন ও কনস্টেবল শিফাত প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

    এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ছাত্রদলের সমাবেশ শেষে ১১ কর্মীকে আটক করেছে। পুলিশ বলছে, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জুতা-স্যান্ডেল পায়ে শহীদ খোকন পার্কের শহীদ মিনারে উঠেছিল। সেখান থেকে নামিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ায় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শহরের নওয়াববাড়ি সড়কে দুপুর ১২টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে মিছিলসহ সার্কিট হাউস সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে সমবেত হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। সেখান থেকেই একজোট হয়ে তাদের দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তারই অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ খোকন পার্কে যান।

    দুপুর পৌনে ১২টার দিকে খোকন পার্কের ভেতরে ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সমবেত হন। তাদের মধ্যে অনেকে ওই পার্কের ভেতরে অবস্থিত শহীদ মিনারে জুতা স্যান্ডেল পায়ে উঠে পড়েন। পরে পুলিশ ভেতরে গিয়ে তাদেরকে শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলেন। এক পর্যায়ে পুলিশের ধাওয়ায় ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের একাংশ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। অন্য অংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে।

    বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা জুতা-স্যান্ডেল পায়ে শহীদ মিনারের ওপর উঠে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। দুপুর ১২টার দিকে তার নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে গিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলেন।

    তিনি বলেন, ‘এ সময় কেউ কেউ নেমে গেলেও অন্যরা পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়েছে। হামলায় আমিসহ আমাদের বাহিনীর ৫ সদস্য আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কনস্টেবল পারভেজের মাথায় আঘাত করা হয়েছে।’

    পরে সমাবেশ শেষ হওয়ার পর ফিরে যাওয়ার সময় পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে। বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত ১১ কর্মীকে আটক করা হয়।

    এদের মধ্যে ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন-সাব্বির (১৯), শাকিল (১৭), রাহিদ (১৬), ফরদিন (১৭), রাশেদুল (২২), আলাল হোসেন (২১), সাব্বির হোসেন (১৬), আরিফুল ইসলাম (১৩),জবহিল আলী (২১) ও আরাফাত আলী (১৯)।

    বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, পুলিশের ওপর হামলায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

    এদিকে ছাত্রদল বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি আবু হাসানের দাবি তাদের কোনও কর্মী পুলিশের ওপর হামলা করেনি। তিনি বলেন, ‘খোকন পার্কের পাশে আওয়ামী লীগ অফিস। সেখান থেকে কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ে থাকতে পারে।’

    বগুড়ার ২৫০ শয্যা মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিক আমিন কাজল জানান, আহত পুলিশ সদস্যদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।