ছাতকে দু’শতাধিক বিদ্যালয়ে শিশু নির্যাতন নিয়ে তোলপাড়!

    0
    140

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১মার্চ,চান মিয়া,ছাতক (সুনামগঞ্জ): ছাতকে ১শ’ ৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য বেসরকারি স্কুলের সিংহভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার মধ্যে অল্প সংখ্যক ঘটনা আলোচনায় আসলেও লোক চক্ষুর আড়ালেই থেকে যাচ্ছে লোমহর্ষক ঘটনাগুলো। সাজা-শাস্তি ও পাচ্ছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।

    এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক করনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন শিশু নির্যাতনের ঘটনা আশংকাজনকহারে ্্্্েবড়েই চলেছে। অভিযোগে জানা যায়, গত ৯ আগষ্ট ২০১৬ ইং কালারুকা ইউপির রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা বেগম ২য় শ্রেণীর ছাত্রী হাবিবা বেগমকে গায়ের ড্রেস খুলে ও ৯ দিন পর ১৮ আগষ্ট ৩য় শ্রেনীর ছাত্রী তামান্না বেগমের চুলে ধরে মধ্যযূগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন করেন।

    এঘটনায় ২৭আগষ্ট পরিচালনা কমিটিও অভিবাবক সমন্বয়ে এক জরুরী সভা করে কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিনসহ ৭সদস্যের স্বাক্ষরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এভাবে পৌরসভার গণক্ষাই গ্রামের মৃত আজর আলীর পুত্র মাহমুদ আলম অপর এক লিখিত অভিযোগে বলেন, ২০১৬সালের ২৬সেপ্টেম্বর কুমনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিকুর রহমান ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মিজানুর রহমানকে অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে কচ্ছপাকৃতি করে রাখা হয়।

    এভাবে দীর্ঘক্ষন উপুড় থাকার একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে সে মাঠিতে লুঠিয়ে পড়ে। পরে কমিটির সভাপতি কুটি মিয়া ও স্থানীয় লোকজনের সামনে চিরাচরিত নিয়মেই বেত্রাঘাতও উপুড় রাখার দম্ভোক্তি করলে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র একই গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র আলী হোসেন তাদেরকে ঝাড়ু– দিয়ে পেটানোর ব্যাপারে অভিযোগ করে।

    গত ১৪ আগষ্ট ২০১৬ইং গোবিন্দগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪২জন শিক্ষার্থীকে দরজা বন্ধ করে পেটানোর দায়ে প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এভাবে বাগবাড়ি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইমাদ উদ্দিন মানিক, নয়ালম্বাহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বকুল দাস, হাসনাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা উর্মি রানীসহ অনেকে শিক্ষার্থী পেটানোর ঘটনায় শীর্ষে রয়েছেন।

    এছাড়া কালারুকা ইউপির বোবরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজি আব্দুস শাকুরের মেয়ে নাইমা জান্নত শিশু শ্রেণীতে ভর্তির প্রথম দিনেই জনৈকা শিক্ষিকার লাঠি পেটা খেয়ে প্রায় একবছর থেকে ভয়ে আর স্কুলে যাচ্ছেনা। জানা গেছে, উপজেলার সিংহভাগ স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।  রয়েছে। শিক্ষা অফিসে রয়েছে লিখিত অভিযোগের পাহাড়। কিন্তু এসব অভিযোগের কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।

    প্রাথমিক স্তরের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী করতে সরকার শারীরিক নির্যাতন বন্ধের আইন পাশ করে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করেই শিশু নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।

    উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার এনামুর রহিম বাবর এসব অসাধু শিক্ষকদর অপকর্মের সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস জানান, অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে।