ছাতকে চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্ব নিয়ে দু’গ্রামবাসিকে আসামি

    0
    231

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫জুলাই,চান মিয়া,ছাতক (সুনামগঞ্জ):  ছাতকে চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষে করিমুনের মৃত্যুতে দু’গ্রামের নিরাপরাধ লোকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন সাধারণ লোকজন। এনিয়ে এলাকায় চরম অসন্তেুাষ বিরাজ করছে।

    জানা যায়, উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপির লাড়িগাঁও গ্রামের আব্দুল খালিকের পুত্র লায়েছ মিয়া ও পাশের ঘরের তার ভাতিজা মৃত হোছন আলীর পুত্র আরিফ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৫জুন সন্ধ্যায় আরিফ আলীর পক্ষে জাহাঙ্গির ও লায়েছের পক্ষে আকিক মিয়ার মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে লয়েছ ও আরিফ পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আহত ফয়ছল (২৮), ইবরাহিম (২৪)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও করিমুন নেছা (৭৬) কে ছাতক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

    ২৭ জুন করিমুনকে ছাড়পত্র দেয়া হলে ২৯জুন বাড়ি থেকে পূনরায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর ৩০জুন মৃত্যুবরণ করেন। পরে চাচা-ভাতিজার মধ্যে সংঘটিত ঘটনায় পার্শ্ববর্তী খিদুরা ও লাড়ীগাঁও গ্রামের ১৮জনের মধ্যে ইউসুফ আলী, গিয়াস মিয়া, তাজুদ মিয়া, নুর মিয়া, আব্দুল মুমিন, আব্দুল আহাদ, ফজর আলী, বদরুল ইসলাম, সাহেলা বেগম ও বিলাল মিয়াসহ ৯জনকে আসামি করে নিহতের পুত্র লায়েছ মিয়া বাদি হয়ে ছাতক থানায় হত্যা মামলা (নং ৫, তাং ০৩.০৭.২০১৭ইং) দায়ের করেন।

    এব্যাপারে ছাদেক মিয়া, শায়েস্তা মিয়া, সিরাজ উদ্দিন, আকদ্দুছ আলী, আব্দুুস ছোবহান, লিলু মিয়া, হিরন মিয়া, আব্দুল হান্নান, আছকন, আব্দুল মানিক, আব্দুল মন্নান, আবুল কালাম, বিলাল মিয়া, সিরাজ মিয়া, আব্দুল তাহিদ, নজরুল ইসলাম, ফয়জুল ইসলাম, আশুক মিয়া, ছুনু মিয়া, ময়নুল ইসলাম, ইবরাহিম আলীসহ এলাকার লোকজন জানান, হত্যা মামলায় অনেককে পরিকল্পিতভাবে নিরাপরাধ লোকজনক আসামি করা হয়েছে। তারা এদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, আসামি পক্ষের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে বাদিপক্ষ।

    জানা গেছে, করিমুন মৃত্যুর প্রায় একমাস পূর্বে গত ২৮মে’ খিদুরা জামে মসজিদে গ্রামের আব্দুল বারিকের পুত্র তুহিন মিয়া সহপাঠিদের সাথে তারাবীহ নামাজে যাবার পথে মৃত ঠাকুরধনের পুত্র জমসর আলীর নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করা হয়। এতে আব্দুল খালিকের পুত্র আব্দুস শহিদ ছাইলা বাদি হয়ে জমসর আলীসহ ২২জনের নামে ছাতক থানায় মামলা (নং-৩০, তাং-২৪.০৬.২০১৭ইং) ও একই ঘটনায় শুধু ঘটনাস্থল বদল করে জমসর আলী বাদি হয়ে আব্দুল বারিকসহ ৩৩জনের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা মামলা (নং-১৬, তাং ০৮.০৭.২০১৭ইং) দায়ের করেন। ছাইলা ও জমশর পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলায় নিষ্পত্তির জন্যে একাধিক সালিশ বৈঠক বসেও কোন সুরাহা হয়নি। এব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুল ওয়াহিদ জানান, লাড়িগাঁও গ্রামের লায়েছ ও আরিফ দু’পক্ষই তার গোত্রের লোক হয়।

    একই বাড়িতে সবাই বসবাস করেছেন। এখন লাড়িগাঁও থেকে তিনি ১৫বছর আগে স্থানীয় পায়রাবন্দে নতুন বাড়ি নির্মাণ করে এসেছেন। তিনি দু’পক্ষের পূর্ব বিরোধে এঘটনা ঘটেছে বলে জানান। ছৈলা আফজলাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ খিদুরা ও লাড়ীগাঁও পৃথক দু’টি গ্রাম ও প ায়েত উল্লেখ করে বলেন, গত রমজানে খিদুরা মসজিদের হাফেজ নিয়োগ নিয়ে দু’পক্ষে বিরোধ দেখা দিলে তা- নিষ্পত্তি হয়। পরে জমসর আলী ও ছাইলা পক্ষের মধ্যে মামলা হলে ঈদের দিন থানার ওসির সমন্বয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। দু’পক্ষ ৫হাজার টাকা করে জামানত দেন। পরে লায়েছ ও আরিফে মধ্যে মারামারি হলে শ্বাসকষ্ট রোগি বৃদ্ধা করিমুন আহত ও ঘটনার ৫দিন পর মারা যান। এতে জমসর আলীর আত্মীয়, নিহতের পুত্র লায়েছ বাদি হয়ে ৮জনের নামে থানায় প্রথম এজাহার দায়ের করে। পরে জমসর আলীর ইন্ধনে এজাহার পরিবর্তন করে নিরাপরাধ আরো ১০জনের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

    এ ব্যাপারে গত ১৭জুলাই সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে উর্ধতন পুলিশ প্রশাসনের সাথে ইউপি চেয়ারম্যানদের মতবিনিময় সভায় তিনি করিমুনের মামলায় ৮জন আসামি থেকে রাতারাতি ১৮জনে উন্নীত করার বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করে তা- তদন্তের দাবি করেন।

    এ ব্যাপারে ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ আতিকুর রহমান মামলার তদন্ত চলছে বলে জানান।