ছাতকে কওমী-ফুলতলীর সংঘর্ষে পরিস্থিতি এখনো থমথমে

    0
    217

    “নিহত বাবুলের দাফন সম্পন্নঃনামাজে জানাজার ইমাম ছিলেন মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮ফেব্রুয়ারী,চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ): ছাতকে কওমী ও ফুলতলী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি এখনো থমথমে। মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় হাইস্কুল মাঠে নিহত আব্দুল বাছেত বাবুলের জানাজা শেষে শহরে বাগবাড়িস্থ পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।

    মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে দু’পক্ষে পাল্টা-পাল্টি কর্মসুচি পালন করা হয়। এনিয়ে কওমী ও ফুলতলী সমর্থকদের মধ্যে সর্বত্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। নদীতে নিখোঁজ গনেশপুরের রুবেলের সন্ধান এখনো মেলেনি। জানাজার নামাজে সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা, সাবেক কমান্ডার আব্দুস সামাদসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন ছাহেবজাদায়ে ফুলতলী মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে শহরের জালালিয়া আলিম মাদরাসা সংলগ্ন হাইস্কুল মাঠে ২৬ফেব্রুয়ারি থেকে কওমীপন্থী আলেমদের উদ্যোগে ছাতক খাদিমুল ইসলাম পরিষদের ব্যানারে ৩দিনব্যাপী তাফসির মাহফিল শুরু হয়। রোববার জাউয়াাবাজারে ফুলতলী সমর্থকদের সাটানো একটি ব্যানার কওমী সমর্থকরা নামিয়ে ফেলায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরই জের ধরে ছাতক হাইস্কুল মাঠে খাদিমুল ইসলাম আয়োজিত ওয়াজ মাহফিল বন্ধের দাবি তোলে ফুলতলী সমর্থকরা।

    বিষযটি তাৎক্ষনিক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের উপস্থিতিতে গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় নিষ্পত্তি হলেও দু’পক্ষে চাঁপা উত্তেজনা বিরাজ করে। সোমবার দুপুরে তালামিযে ইসলামিয়ার ব্যানারে সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে ফুলতলী পক্ষের আয়োজিত আন্তজাতিক শানে রিসালাত সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে একটি মিছিল ছাতক শহরে বের করা হয়। মিছিল শেষে জালালিয়া আলিম মাদরাসা প্রবেশকালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপকে কেন্দ্র করে কওমীপন্থী ও ফুলতলী পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

    এনিয়ে মাহফিলের প্যান্ডাল ভাংচুর করা হয়। এনিয়ে দু’পক্ষে ৪ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। হতাহত হয়েছেন দু’শতাধিক লোক। রাত ৮টা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল সুরমা নদীতে নিখোঁজ রুবেল উদ্ধারে শৎপরতা অব্যাহত রাখে। কিন্তু কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

    ঘটনায় গুরুতর আহত বাবুলকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু ঘটে। সে শহরের বাগবাড়ির এলাকার আব্দুল জব্বারের পুত্র। তার ২পুত্র ও ১কন্যা সন্তান রয়েছে।

    এদিকে সোমবার রাতে আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীও তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামও সাধারন সম্পাদক রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ছাতক জালালিয়া আলিম মাদরাসায় দুস্কৃতিকারীদের বর্বরোচিত হামলাও বাবুল হত্যার তীব্র নিন্দাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মানুষ হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। হামলাকারিদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন।

    এছাড়া নিহত বাবুলের শোক সন্তপ্ত পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনাও আহতের দ্রুত আরোগ্য কামনায় সিলেট সোবাহানীঘাটে আল-ইসলাহ’র উদ্দ্যোগে এক দোয়া  মাহফিল গত সোমবার রাতে অনুষ্টিত হয়েছে।

    এদিকে কওমীপন্থী আলেমদের উদ্যোগে হাসনাবাদ মাদ্রাসায় এক প্রতিবাদ সভা মাওলানা নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা আজাদ মিয়া, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা শওকত আহমদ, আফতাব উদ্দিন প্রমূখ।

    বক্তারা খাদিমুল ইসলাম পরিষদের মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলা, প্যান্ডাল ভাংচুর, লুঠপাট ও নিরীহ লোকদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতেদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান। জাউয়াও গনেশপুর মাদরাাসায় পৃথক সভা অনুষ্টিত হয়েছে।

    ছাতক থানার ওসি আশেক সুজা মামুন বর্তমানে পরিস্থিতি নিযন্ত্রনে রয়েছে জানিয়ে বলেন, এব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ এখনো দায়ের করা হয়নি।