ছাতকে আমন ধানের বাম্পার ফলনঃব্যস্ত কৃষক-কৃষাণি

    0
    208

    ছাতক প্রতিনিধি: ছাতকে রোপা আমন ধান কাটা আর মাড়াই-ঝাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। মাঠে ফলানো সোনালী আমন ধান তোলতে ক’দিন ধরে ব্যস্ত সময় পার করছে এখানকার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নির্বিঘেœ ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই আর ধান শুকানোর কাজে কৃষক-কৃষাণিরা নেমেছেন কোমরবেঁধে। ধান কাটাকে কেন্দ্র করে কৃষক-কৃষাণিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে এখানের হাওরাঞ্চল ও গ্রামীণ জনপথ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৪শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ১৩হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের দাবি, ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবার ছাড়িয়ে যাবে।

    উপজেলার বিভিন্ন হাওর-বিল ও গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে মন মাতানো মৌ মৌ গন্ধ ছড়ানো হাওর আর বিলের ধারের পাকা সোনালী আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। হেমন্তে শীতের সকালে সোনালী ধানের মিষ্টি গন্ধে মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে কৃষক-কৃষাণিরা ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই আর গো-খাদ্য খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। মাড়াই-ঝাড়াই শেষ হলে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলতে কৃষাণিরা ওই ধান খলায় আর বাড়ির উঠানে ছড়িয়ে রেখে শুকানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এখানকার কন্যা-জায়া-জননীর ব্যস্ততা এখন দিনরাত। কিষাণ-কিষাণিদের কর্মব্যস্ততায় এখন হাওরে-হাওরে বইছে বাংলার সেই চিরাচরিত রূপ। কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর কাঙ্খিত ফসল ঘরে উঠবে।

    দোলারবাজার ইউনিয়নের কৃষক সরাফত আলী জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৫ কেয়ার (বিঘা) জমিতে চাষাবাদ করেছেন। জমির ধান কাটার উপযোগী হওয়ায় ধান কাটা শুরু করেছেন। সপ্তাহ-দশদিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলতে পারবেন বলে জানান। ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ধার-দেনা করে এ মৌসুমে ৮ কেয়ার (বিঘা) জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। ফলনও ভাল হয়েছে। কেয়ার (বিঘা) প্রতি ৩ কাটার উপরে (১৮ থেকে ২০ মন) ধান পাওয়া যাবে।

    ধান তোলা শেষ হলে ধান বিক্রি করে ধার-দেনা মিটিয়ে যা থাকবে তা দিয়েই সংসার চালাবেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর ধান তোলার সময় দাম কমে যায়। এবার দাম কমেনি। ধানের দাম স্বাভাবিক থাকলে এবার কোনো কৃষকেরই ধার-দেনার ঘানি টানতে হবে না। ফয়জুল ইসলাম নামের চরমহল্লা ইউনিয়নের আরেক কৃষক বলেন, ক’দিন ধরে মাঠে মাঠে ধান কাটা উৎসব শুরু হয়েছে। এপর্যন্ত তিনি ৩ কেয়ার (বিঘা) জমির ধান কেটে ঘরে তোলেছেন। এভাবে অনেকেই তাদের জমির ধান কেটে ঘরে তোলেছেন। এবার কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধানের চালের গুড়ায় নবান্ন উৎসব শুরু হবে।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম বদরুল হক জানান, আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলতে পারবে। এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী।