ছবি তুলবেন ভাই ছবি,ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি

    0
    424

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৬আগস্ট,নিজস্ব প্রতিনিধি,জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,জাফলং(সিলেট)থেকে ফিরেঃ ছবি তুলবেন ভাই,ছবি আমরা ছবি তুলে দেই ডিজিটাল ক্যামেরাই দেব তুলে। ক্যামেরার রেজুলেশন ভাল আছে। কম টাকায় তুলে দিব,ছবি তুলে মেমোরী কার্ডে দিয়ে দিব প্রতি ছবি ১০টাকা বেশি করে তুলে নিলে কম করে রাখব,চাইলে ছবি এডিট করে দিব দাম একটু বেশী লাগবে ভাই। ক্যামেরা যখন নিয়ে আসেন নি আসছেন যখন এখানকার কিছু প্রাকৃতিক সুন্দর্যের সাথে স্মৃতি হিসাবে তুলে নিয়ে যান মনে রাখার মত এলাকা। এসব কথা গুলো বলছিলেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার জাফলং এলাকায় বিডিআর ক্যাম্প সংলগ্ন টিলায় ও ভারত সীমান্তে জির পয়েন্টের ঝুলন্ত সেতু সংলগ্ন স্থানে আসা হাজার হাজার পর্যটকদের মিলন মেলার স্থলে কিছু স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কিছু উদ্যোমী তরুন ফটোগ্রাফারগন।

    এই সব তরুনদের নেই কোন ছবি তুলার প্রশিক্ষন। তাতে কি আছে ছবি তুলার মত নিখুঁথ দুটি হাত। যা দিয়ে কোন প্রশিক্ষন ছাড়াই এই সব বেকার তরুনরা সারা দিন কাঁেদ ক্যামেরা ঝুলিয়ে পর্যটকদের ছবি তুলার কাজে ব্যস্থ থাকে সারাক্ষন। এখানে প্রায় ৩০জনের অধিক তরুন ফটোগ্রাফার রয়েছে। তাদের মধ্যে কথা হয় মেহেদী হাসান(২০) নামে এক যুবকের সাথে। তার বাড়ি ব্রাম্মনবাড়িয়ায় এখানে এসেছেন ৬মাস হবে। বাবার নাম রাজু খান জাফলং বাজারে তাদের একটি কসমেটিক্সের দোকান আছে। তার সাথে কথা বলে জানাযায়,তারা ২ভাই,২বানের মধ্যে তিনিই বড়। ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখা পড়া করার পর নানান কারনে আর সুযোগ হয়ে উঠে নি লেখাপড়া করার।

    সংসারের হাল ধরতে প্রথমে নিজ এলাকায় বিভিন্ন কাজ করেছেন। এরপর গত ছয় মাস পূর্বে এখানে এসে নিজ উদ্যোগের এই ফটো তুলার কাজে লেগে জান। সারাদিনে ৫শত থেকে ৬শত টাকা উপার্যন হয়। কোন দিন তার চেয়ে বেশি। আবার কোন দিন শুন্য। এভাবেই চলছে এখন তার জীবন। একেই এলাকা থেকে আসা জাহির হোসেন (২০) নামে আরেক জনের সাথে কথা হয় তিনি জানান,ভাই লেখা পড়া করতে না পেরে বিভিন্ন কাজ করেছি এখন সবার সাথে মিলে এখানে আসা পর্যটকদের ছবি তুলার জন্য সারাদিন এদিক ওদিক ছুটাছুটি করি। অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে আসে আর বেশির ভাগেই ক্যামেরা ছাড়া আসায় আমাদের ভালই ইনকাম হয়। সারাদিন আনন্দের সাথেই সময় চলে যায়।

    আমরা যেমন খুশি তেমনি এখানে আসা পর্যটকগনও এখানকার পাহাড় ও নদীর সাথে ছবি তুলে খুশি। এখানে আসা শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ভূইঁয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকগন জানান,জাফলং এলাকাটি খুবেই সুন্দর। তবে এখানে আসতে সড়ক পথের যে পরিমান ভাঙ্গা চুরা আর রাস্তায় যে বড় বড় গর্ত সে কারনে সব ধরনের যানবাহনে আসতে যে কষ্টের শিকার হতে হয় তাতে আনন্দ টাই মাটি হয়ে যায়।

    যদি সড়ক পথের ভাল ব্যবস্থা হত তাহলে এখানে পর্যটকদের আগমন আরো বেড়ে যেত তেমনি এখানে অতুলনীয় প্রকৃতির সাথে আনন্দটা আরো বেশি আনন্দময় হত।  আর সবাই ত আর ক্যামেরা নিয়ে আসে না। দেখলাম এখানে কিছু তরুন ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তুলে দেয় টাকার বিনিময়ে। ছবিও ভালই তুলে তারা কোন প্রকার প্রশিক্ষন ছাড়াই। বেকার না থেকে তারা এই পেশা বেছে নিয়েছে খুবেই ভাল। স্থানীয় করিম মিয়া,সাজিদ খান সহ এলাকাবাসী জানান,এই যুবকরা অনেক দিন ধরেই এই ছবি তুলে এখানে আসা পর্যটকদের। এরা বেকার না থেকে ভাল একটা কাজ করছে। দেখি ভাল টাকা আয় করে। কোন প্রকার প্রশিক্ষন ছাড়াই এরা ভালই ছবিও তুলে।